• ভারতের অস্ট্রেলিয়া সফর
  • " />

     

    রূপকথার শেষ দিনে ভারতের ব্রিসবেন ও অস্ট্রেলিয়া জয়

    রূপকথার শেষ দিনে ভারতের ব্রিসবেন ও অস্ট্রেলিয়া জয়    

    অস্ট্রেলিয়া ৩৬৯ ও ২৯৪ 

    ভারত ৩৩৬ ও ৩২৯/৭

    ফল: ভারত ৩ উইকেটে জয়ী, ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জয়ী


     

    অবিশ্বাস্য! অভাবনীয়!

    টেস্ট ক্রিকেটকে বর্ণনা করার জন্য এর চেয়ে লাগসই আর কিছু হতে পারে না। সবটুকু রোমাঞ্চ যেন উপচে পড়েছিল ব্রিসবেন টেস্টের শেষ দিনে। ভারত বা অস্ট্রেলিয়ার জয় কিংবা ড্র, যে কোনো কিছুই হতে পারত শেষ দিনে। শেষ ঘন্টায় রিশভ পান্টের দুর্দান্ত কাউন্টার অ্যাটাকে শেষ পর্যন্ত অবিশ্বাস্য এক জয় ছিনিয়ে নিল ভারত। ১৯৮৮ সালের পর এই প্রথম কোনো দল জিতল ব্রিসবেনে। সেই সঙ্গে ভারত ধরে রাখল ২-১ ব্যবধানের জয়ে বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফিও। 

    জয়ের জন্য ভারতের দরকার ছিল ৩২৮ রান, যার প্রায় পুরোটাই করতে হতো শেষ দিনে। সকালে রোহিত শর্মার আউটে বড় একটা ধাক্কা খেয়েছিল ভারত। কিন্তু শুভমান গিল ও চেতেশ্বর পূজারা ক্রমেই অস্ট্রেলিয়ার জয়ের সম্ভাবনা মিলিয়ে দিচ্ছিলেন। গিল একদিক দিয়ে সুযোগ পেলেই রান নিচ্ছিলেন, অন্যদিকে পূজারা হয়ে ছিলেন ধৈর্যের প্রতিমূর্তি। দুজনের কল্যাণে ভারত প্রথম সেশনে হারায় মাত্র ১ উইকেট। গিলের সেঞ্চুরিটা যখন মনে হচ্ছিল সময়ের ব্যাপার, তখনই অফ স্টাম্পের বাইরের বলে খোঁচা দিয়ে আউট হয়ে যান ৯১ রানে। 

    তবে রাহানে এসে শুরু করেন পালটা আক্রমণ। ম্যাচে তখন তিনটি ফলেরই সম্ভাবনা। অস্ট্রেলিয়ার জয়ের সম্ভাবনা বেড়ে যায় যখন কামিন্সের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন ভারত অধিনায়ক রাহানে। আগরওয়ালের জায়গায় পান্ট নেমে বুঝিয়ে দেন ভারত জয় চাইছে। পূজারা তখনও ছিলেন, তবে কামিন্সের বলে আম্পায়ারস কলে এলবিডব্লু হয়ে যান। হঠাৎ করেই বড় একটা লাইফলাইন পায় অস্ট্রেলিয়া।  

    কিন্তু পান্ট ছিলেন একদিক দিয়ে অবিচল। দুর্দান্ত পাল্টা আক্রমণে ছত্রভঙ্গ করে দিচ্ছিলেন অজিদের। এক কামিন্স ছাড়া বাকিদের মনে হচ্ছিল নির্বিষ, অন্যদিকে পেইন মিস করেন পান্টকে স্টাম্প করার সুবর্ণ সুযোগ। দিন শেষে সেটাই হয়ে গেছে ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণী। আগরওয়াল কামিন্সের বলে ক্যাচ দিয়ে ফিরলে আবার উজ্জ্বল হয় অস্ট্রেলয়ার ম্যাচ বাঁচানোর সম্ভাবনা। 

    কিন্তু নাটক শেষ হয়নি তখনো। ওয়াশিংটন সুন্দর আসার পর পান্ট কী করবেন সেটা নিয়ে ছিল অপেক্ষা। জয়ের জন্য চেষ্টা করবেন নাকি ড্রয়ের নিরাপদ পথ বেছে নেবেন? পান্ট বেছে নিলেন প্রথমটাই। সঙ্গ দিলেন সুন্দর। অবিশ্বাস্য সুন্দর এক হুকে কামিন্সকে ছয় মারলেন সুন্দর, পরের বলে চার। পান্টও হাত খুলে খেলায় রান চলে এলো ৫০-এর ভেতরে। দেখতে দেখতে সেটা যখন ১৫ এর ভেতরে, লায়নকে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড সুন্দর। এর মধ্যে পান্ট বেঁচে গেছেন ক্যাচ দিতে দিতে। কিন্তু ভাগ্য থাকে সাহসীদের পক্ষে, আজ ছিল পান্টের পক্ষে। শেষ মুহূর্তে শার্দুল ঠাকুর আউট হলেও পান্ট আর কোনো বিপদ হতে দেননি দলকে। ম্যাচসেরা হয়েই দলকে জিতিয়েছেন।