• ওয়েস্ট ইন্ডিজের বাংলাদেশ সফর ২০২১
  • " />

     

    'মাশরাফি-যুগ' পেরিয়ে 'বাংলাদেশী ব্র্যান্ড অফ ক্রিকেট'-এর আশা তামিমের

    'মাশরাফি-যুগ' পেরিয়ে 'বাংলাদেশী ব্র্যান্ড অফ ক্রিকেট'-এর আশা তামিমের    

    “তামিম ইকবাল খান-এর জন্য রইল স্পেশাল ভালবাসা এবং দোয়া। সকল ধরনের চাপকে সব সময়ের মতো বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বিজয়ী হয়ে আসবে, এই দোয়াই করছি।” 

    বাংলাদেশের শেষ আন্তর্জাতিক সিরিজেও এই সময়টাতে মাশরাফি বিন মুর্তজা হয়তো টিম মিটিংয়ে কোনো বক্তব্য দিয়েছিলেন। এদিন ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিলেন। দলের সঙ্গে তামিমকে ‘স্পেশাল’ শুভকামনা সেখানেই জানিয়েছেন তিনি। ২০২৩ বিশ্বকাপ সামনে রেখে করা পরিকল্পনায় মাশরাফি নেই, এ সিরিজের স্কোয়াডেও নেই তিনি। আগেই অধিনায়কত্ব ছেড়েছিলেন, তার বদলে যাকে নেতৃত্ব দেওয়া হয়েছিল, সেই তামিমও অপেক্ষা করেছেন ১০ মাসের বেশি সময়। অপেক্ষায় ছিল তো বাংলাদেশও। কোভিড-১৯ মহামারির পর অবশেষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরছে তারা, নতুন অধিনায়কের অধীনে। প্রথম ম্যাচ শুরুর আগে ‘বাংলাদেশি ব্র্যান্ড অফ ক্রিকেট’-এর কথা বললেন নতুন অধিনায়ক। 

    “আমি সব সময় যেটাকে গুরুত্ব দিই সেটা হচ্ছে বাংলাদেশি স্টাইল অব ক্রিকেট, বাংলাদেশি ব্র্যান্ড অফ ক্রিকেট। সব সময় যেটা বলি, প্রত্যেকটা দেশের ক্রিকেটের নিজস্ব একটা ধরন আছে। আমি মনে করি না, আমাদের অন্য কাউকে অনুসরণ করার দরকার আছে। অনেকে বলে, হয়তো আমরা ক্যারিবিয়ানদের মতো শক্তিশালী না, অস্ট্রেলিয়ানদের মতো সুগঠিত না। তবে আমাদের দলে এমন অ্যাডভান্টেজ আছে যেটা অন্য দলে নেই। আমি যেটা তৈরি করতে চাই, সেটা হলো বাংলাদেশি ব্র্যান্ড অফ ক্রিকেট খেলব আমরা। অন্য কাউকে অনুসরণ না করে আমরা এতে মনোযোগ দিতে চাই। আমাদের যে শক্তির জায়গা তার উপরও আমাদের ব্র্যান্ড হবে। আমরা সেই ধরনের ক্রিকেট খেলব”, মিরপুরে প্রথম ম্যাচের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন তামিম। 

    আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নেতৃত্বের আগে তামিমের একটা ‘অনুশীলন’ ছিল বিসিবির দুটি টুর্নামেন্ট-- বিসিবি প্রেসিডেন্টস কাপ ও বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপ। সে দুটি টুর্নামেন্টে তার দলীয় সাফল্যের হার তেমন নেই। তামিম মানছেন, সময়টা কঠিন ছিল তার জন্য। তবে সময়ের সঙ্গেই তার নেতৃত্বের পরিসর বাড়বে, এমন আশাও তার, “দুটি টুর্নামেন্টই আমার জন্য কঠিন ছিল। সত্যি বলতে কি, যখন কোনো কিছু কঠিন থাকে সেখান থেকেই অনেক কিছু শেখা যায়। আমার মনে হয়, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আরও শিখব। আমি এখন একটা কথা বললাম, খেলার সময় সেটা অনুসরণ করলাম না, এর কোনো অর্থ থাকবে না। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সবাই বুঝতে পারে, আমি নিজেও আরও ভালো বুঝতে পারব, আমি কোন দিনে যাচ্ছি।

    “পরিস্থিতিটাও বিবেচনা করতে হবে। কখনও রক্ষণাত্মক কৌশল নিতে হতে পারে, কখনও বাড়তি আক্রমণাত্মক খেলতে হতে পারে। সব নির্ভর করবে পরিস্থিতির উপর।”

    ২০১৪ সালে আরেকদফা অধিনায়কত্ব পাওয়া মাশরাফির অধীনে বাংলাদেশের একটা কমন ব্যাপার ছিল-- তিনি দলকে উজ্জীবিত করতে পারতেন। তিনি ‘অবিশাস্য কাজ করেছেন বাংলাদেশের জন্য’, এমন উল্লেখ করে তামিম বলেছেন, এক্ষেত্রে নিজের সেরাটাই দেওয়ার চেষ্টা করবেন তিনি। 

    এ সিরিজ শুরুর আগে থেকেই বারবার এসেছে পরের বিশ্বকাপ, এবং সেটির বাছাইপর্ব। আইসিসির নতুন বিশ্বকাপ সুপার লিগের অধীনে থাকা সিরিজগুলিতেই নির্ধারিত হবে পরের বিশ্বকাপের দলগুলি। সেক্ষেত্রে প্রতিটি ম্যাচেরই গুরুত্ব মানছেন তামিম, “আমরা হয়তো ২০২৩ বিশ্বকাপ শুরুর আগে ২৭-২৮টি ওয়ানডে খেলব, এবং পয়েন্ট পদ্ধতির কারণে প্রতিটিই গুরুত্বপূর্ণ আমাদের জন্য। চিরায়ত সিরিজের মতো না, যে হারলে কিছু যায় আসবে না। আমাদের নিশ্চিত করতে হবে, যাতে বাছাইপর্ব খেলতে না হয়। কার বিপক্ষে খেলছি তাতে কিছু যায় আসে না, আমাদের নিয়ন্ত্রণে যা আছে, সেসবই করতে হবে আমাদের।” 

    তামিম পরের বিশ্বকাপ পর্যন্ত অধিনায়ক থাকবেন কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, তিনি এবং দল ভাল করলে সেখানে তার নেতৃত্ব না দেওয়ার কারণ নেই, তবে, “আরেকটা ব্যাপার হচ্ছে উপভোগ করা। এমন হতে পারে আমি ভালো করছি না কিংবা দল ভালো করছে কিন্তু আমি উপভোগ করছি না, তখন ব্যাপারটা ভিন্ন হতে পারে। এই মুহূর্তে আমি খুব রোমাঞ্চিত। সামনের ম্যাচ, সামনের সিরিজের দিকে মনোযোগ দিচ্ছি। কী হবে সময়ই এটা বলে দিবে।”