• ইংল্যান্ডের ভারত সফর
  • " />

     

    ইশান্ত শর্মা: স্লথ শুরুর পর ইঞ্জিন এখন ফুল থ্রটলে

    ইশান্ত শর্মা: স্লথ শুরুর পর ইঞ্জিন এখন ফুল থ্রটলে    

    বিরাট কোহলির তখনও ‘চিকু’ নাম পাওয়া হয়ে উঠেনি। এমএস ধোনির সংস্পর্শে এসে সে নাম পেতে হলে তাকে যেতে হবে জাতীয় দলে। সেখানে ডাক পাওয়ার খবর জানতেই তাই বিরাট কোহলি টেলিভিশনের সামনে বসে আছেন। সারাদিন খেলা শেষেও হয়তো তাঁর মুখে ক্লান্তির ছাপ অস্পষ্টের কারণ শ্রুতিমধুর সে সংবাদ শোনার আগ্রহ, ক্ষীণ কিংবা তীব্র। ইশান্ত শর্মার সে আগ্রহ হয়তো জন্মায়নি, তাই তিনি ঘুমাচ্ছেন। 

    ঘুমন্ত কিংবা আধ-ঘুমন্ত ইশান্ত হঠাৎ বুঝতে পেলেন তাঁর শরীরে কার যেন লাথি পড়ছে, ‘উঠ তোর নাম এসে গেছে’। ইশান্তের লাফিয়ে উঠে বিরাট কোহলিকে জড়িয়ে ধরার কথা। ইশান্ত কিছুই করেন না, উল্টো বিরক্তির সুরমাখা গলায় বলেন, ’আরে বন্ধু ঘুমাতে দে। বোলিং করে এসেছি, কেন বিরক্ত করছিস?’। এমন খবর না শুনিয়ে ঘুমাতে দেওয়া যায় কি! স্বপ্নের জাতীয় দলে ডাক পাওয়ার খবর। বিরাট তাই মানেন না, আবার লাথি মারেন, আরও জোরে মারেন, মারতে মারতে বলেন, ‘আরে সত্যি তোর নাম এসে গেছে, দেখ দেখ’। এবার ইশান্তকে দেখতেই হয়। তা দেখে ইশান্তের মুখনিঃসৃত ‘হ্যাঁ বন্ধু’ শোনার পরপরই বিরাট বলে উঠেন, ‘তুইও ইন্ডিয়ান প্লেয়ার হয়ে গেলি বন্ধু’। তখনও বিরাট কোহলি ইন্ডিয়ান প্লেয়ার হননি, দাপিয়ে বেড়াচ্ছিলেন ঘরোয়া ক্রিকেটাঙ্গন।

    বিরাট কোহলি টিভিতে ভারতের যে স্কোয়াডে ইশান্ত শর্মাকে দেখেছিলেন সেখানে আসলে ছিলেন না তিনি। বিসিসিআইয়ের থেকে কোনও কলই আসেনি তাঁর কাছে। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে তাই ইশান্তের যাওয়া হয়নি। এর পরের সফরে ডাক পাওয়ার খবরটাও তিনি পেয়েছিলেন অন্যের কাছ থেকেই, তখনও তিনি ছিলেন ঘুমন্ত অবস্থায়। সেবার খবরটা ঠিকই পেয়েছিলেন তিনি, তাই প্লেনে চড়ে আসতে পারলেন বাংলাদেশ। 

    ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের রেকর্ডময় সে টেস্টে ইশান্ত অভিষেকে ১৩ ওভারের বেশি বল করতে পারলেন না, তাতে উইকেট নিতে পারলেন না একটিরও বেশি। ২০০৭ সালের সেদিনের বছর চারেক পরে টেস্টে ইশান্ত পান বিরাট কোহলিকে, সেসময় ভারতের হয়ে ৩১টি টেস্ট খেলা হয়ে গেছে তারঁ। সে বিরাট কোহলি আজ ইশান্তকে বলতে পারেন ‘তুই যা করার কর, পরে যা হওয়ার হবে আমি দেখবো’। ইশান্তকে এখন যে দেখার দায়িত্ব তারঁই। বন্ধু বিরাটের, নেতা বিরাটের। 

    ****

    ক্রিকেট এবং সংখ্যা, এ এক মধুর সম্পর্ক। ক্রিকেট যেখানে, সংখ্যার উপস্থিতি সেখানে অবধারিতই। সেটা যেকোন খেলার ক্ষেত্রেই বলা যেতে পারে। তবে ক্রিকেটে জয়-পরাজয়ের হিসেব বাদে এর আনুষাঙ্গিক যে সংখ্যার ব্যবহার তা সম্ভবত অন্য খেলার থেকে বহুগুণে বেশি। কার গড় বেশি, কার স্ট্রাইক রেট কত, ইকোনমিটা কেমন- এসব সংখ্যা দিয়ে খেলোয়াড়দের মান নির্ণয়ের খেলায় ব্যস্ত আমরা। তবে ইশান্ত শর্মা যেন সংখ্যার সাথে 'আড়ি' দিয়েছেন। তাই সংখ্যা তাঁর কাছে আলাদা কোন তাৎপর্য রাখে না। আর সংখ্যাকে তিনি ঘুণায় ধরেন না বলেই সংখ্যার সাহায্য নিয়ে তাঁর উপর বয়ে যাওয়া বহু ঝড়ই যে তাকে সইতে হয়নি। 

    তাঁর বোলিং গড় বেশি, ব্যাটসম্যানদের পরাস্ত করান, তবে উইকেট তুলাতে পারদর্শী না, স্ট্রাইক রেটও বেশি। এসব সমালোচনার ঝড় ইশান্তের উপর বয়ে গেলেও তাঁর গায়ে লাগেনি। ভাগ্যিষ, যদি তা লাগতো তাহলে কি যে অবস্থাই না হতো! ফকনারের নেয়া এক ওভারে ত্রিশের পরে তো যাচ্ছেতাই অবস্থা তারঁ।

    মায়ের মতে এমন শক্ত পুরুষ দেখেননি তিনি, সেই ইশান্তই হাউমাউ করে কাদতে শুরু করেন। দু-তিন সপ্তাহ স্বাভাবিক জীবনের বাইরে গিয়ে কান্না আর শুধু কান্না, খাওয়া-দাওয়াও ঠিকমতো করছিলেন না তিনি। আগে ইশান্তের খারাপ সময়ে 'সমস্যা না, এসব হয়' এমন বাণীতে তিনি সম্মতি দিতেন, ফকনার ঘটনার পরে তিনি বদলে গেলেন- ভুল করেছি মানে ভুল করেছি, এর দায়িত্ব আমাকেই নিতে হবে। ইশান্তের জীবনের টার্নিং পয়েন্টের টার্নিং ‘উপলব্ধি’ এটিই। তবে এরপরে আর ১২টির বেশি ওয়ানডে খেলা হয়নি তাঁর। ২০১৬ সালের জানুয়ারীতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলা শেষ ম্যাচে হয়তো শেষ হয়ে গেছে তাঁর ওয়ানডে ক্যারিয়ারই।

    দুঃস্বপ্নের সে ম্যাচে দুঃস্বপ্নের সে ওভারের ৩০ বাদে বাকি সাত ওভারে মাত্র ৩৩ রানই দিয়েছিলেন ইশান্ত। দুঃস্বপ্নের মুলে ম্যাচটা হারানোর দায়ই। ২৯ বলে ৬৪ করে ম্যাচটা ফকনার জিতিয়েছিলেন বলেই ইশান্তকে হারতে হয়েছিলো। ৩ ওভারে যখন ৪৪ লাগতো তখন ইশান্তের ওভারে চারটি ছক্কার সাথে একটি চার ও ডাবলে ৩০ রান এনে ভারতের দিকে দুলতে থাকা ম্যাচটা নিজেদের পক্ষে নিয়ে ৩ বল বাকি রেখেই জিতিয়ে দেন জেমস ফকনার। 

    ****

    ফকনার দুঃস্বপ্নের পরে ধোনি ইশান্তকে জানান- তাকে তিনি বাইরে খেলাবেন, ঘরে না। বিশ্বকাপ ছিল বাইরে, ইশান্তের বিশ্বকাপ স্বপ্ন তাই তখনো মরল না। ২০১৪ অস্ট্রেলিয়া সফরে সে স্বপ্নে কিছুটা আচড় দিল ইনজুরি। বিশ্বকাপ তখনো অনেক দুরে, সেসময়ে ইনজুরি কাটিয়ে স্বপ্নপুরণ সম্ভব, সে ইনজুরি কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই ছোবল আরেকটির । ১১’র মতো ১৫ বিশ্বকাপ স্বপ্নও বাস্তব হলো না ইশান্তের। তবে ২০১১ তে তাঁর স্বপ্নে বাধা হয়ে দাড়ায়নি চোট। ২০০৯ সালের পর তাঁর ওয়ানডে ফর্ম কিছুটা পড়তির দিকেই ছিল। 

    অভিষেকের পরের সিবি সিরিজেই এক ম্যাচে তাঁর ৪/৩৮ এ ম্যাচ জিতে ভারত। পরে অস্ট্রেলিয়া যখন ভারতে এলো তখন ওই সময়ে দ্বিতীয় পেসার হিসেবে ভারতের মাটিতে টেস্টে ম্যান অব দ্যা সিরিজ জিতেছিলেন ১৬ উইকেট নিয়ে। সে পুরস্কার পেয়ে গ্যারি কার্স্টেনকে ইশান্ত জিজ্ঞেস করেছিলেন, এটা কি অনেক বড় কিছু? তখন তাঁর জানা ছিল ম্যান অব দ্যা ম্যাচই বড় কিছু। সে সিরিজে ইশান্ত কোন ম্যান অব দ্যা ম্যাচ পাননি, তবে সিরিজ সেরার পুরস্কার হিসেবে গাড়ি পাওয়াতেই তিনি হয়তো পেয়ে গিয়েছিলেন বিস্ময়কর ওই প্রশ্নের উত্তর। এর আগে যার উত্তর দিতে গিয়ে গ্যারি তাঁর মস্তিকের স্বাভাবিক অবস্থা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন ‘তুমি কি পাগল’ বলে। 

    বল আর বোলিং- ইশান্তের দুই ভালোবাসা

    এমন শুরুর পর ইশান্তের বিশ্বকাপ স্বপ্ন তখন চোখের সামনে খেলা করছে। ২০১১ বিশ্বকাপে স্কোয়াডে সুযোগ না পেয়ে তাই তাঁর বিশাল ধাক্কা লাগারই কথা। তখন তাঁর কাছে ক্রিকেটই জীবন ছিল। পারফর্ম্যান্সে দুঃখ, পারফর্ম্যান্সেই সুখ। সবার বুঝানোয় পরে বুঝলেন ক্রিকেট জীবনের একটা অংশ বৈকি কিছুই নয়। স্বপ্ন দেখেছিলেন দেশের হয়ে বিশ্বকাপ জিতবেন। তাঁর জন্য সে স্বপ্ন এখন হয়তো দুর আকাশেরই তাঁরা!

    ****

    নিজ দেশের ক্রিকেট লীগ বিশ্বসেরা, সেখানে প্রথমবারের মতো নেই ইনজুরিমুক্ত ইশান্ত শর্মা। এজন্য সামনে ইংল্যান্ড সফরের লক্ষ্য নিয়ে গেলেন কাউন্টি খেলতে। সাসেক্সে সেখানে তাঁর কোচ জেসন গিলেস্পি। গিলেস্পির অধীনে ২০১৮ সালে সে কাউন্টি মৌসুমের পরে ইশান্ত দেখা দিলেন ভিন্ন এক রুপে। 

    বোলারদের জীবনে অবনমনই বেশি খেয়াল করা যায়। তবে ইশান্তের ক্ষেত্রে কিছুটা উল্টো। ইশান্তের একশ টেস্টের ক্যারিয়ারকে চারভাগ করা যাক। প্রথম ২৫ টেস্টে তাঁর গড় ৩৭.৩১ এবং পরের ২৫টিতে তাঁর বোলিং গড় ৩৯.৫৯। খুব একটা পার্থক্য লক্ষণীয় নয়, তবে দ্বিতীয় ভাগে ইকোনমি ৩.৪২ থেকে কমে হয়েছে ৩.২৫। এই জায়গায় দিনকে দিন তাঁর উন্নতিই হয়েছে। ৫০-৬০ টেস্ট খেলার পরেও তাঁর বিকল্পের দিকে ঝুকলে খুব বড় ভুল হয়তো হতো না এমএস ধোনির।

    প্রথম ৫০ টেস্টে ৩৮.৪৬ গড়ে ইশান্তের শিকার ১৪১ উইকেট। পরের ৫০ টেস্টে বোলিং গড় ২৬.৭৫ এবং তাতে তাঁর শিকার ১৬২ উইকেট। প্রথম পঞ্চাশটির পরের ২৫টেস্টেও পরিসংখ্যানে খুব বেশি উন্নতি চোখে পড়ে না শেষের ২৫ টেস্টের তুলনায়। শেষের ওই টেস্টগুলিতে তাঁর পারফর্ম্যান্স যে চোখ কপালে তুলে দেয়ার মতো। তৃতীয় ভাগের ৩৩.১৩ গড় ঠপাস করে তখন নেমে যায় ২১.৩৮ এ। কাউন্টি শেষে খেলা টেস্টগুলিতে তো সেটা আরও তিন কমে হয়ে যায় ১৮.৩৮।

    ****

    ইশান্তের গল্পে ধোনির থাকা অনিবার্য। ধোনিবিহীন ইশান্তের গল্প অসমাপ্তই থেকে যায়। ইশান্তের টেস্টে ইনিংসে সেরা বোলিং ফিগারেও জড়িয়ে আছেন ধোনি।

    ইংল্যান্ডে খেলা ডিউকস বলে, সুইং পাবেন বোলাররা। সামনের(গুড লেংথ) বলে আউটের সম্ভাবনা। প্রথম ইনিংসে ভুবনেশ্বর কুমারও ছয়টি উইকেট নিয়েছিলেন এভাবেই। ইয়ান বেল ও অ্যালিস্টার কুককে দ্বিতীয় ইনিংসে ইশান্ত শর্মাও আউট করেছেন সেভাবেই। শেষদিনের খেলায় লাঞ্চ হতে বাকি আরেকটি ওভার। বল পুরনো, পুরো খারাপ, কিছুই হচ্ছে না। ধোনি ইশান্তকে বললেন বাউন্সার ট্রাই করতে। ইশান্ত সংশয়াপন্ন, 'ইংল্যান্ডে কোথায় বাউন্সার!'। ধোনি বললেন, 'আরে করে দেখ তো আগে'। ইশান্ত সে ওভারের শেষ বলেই বাউন্সারে ফেরালেন মঈন আলীকে।

    এরপর এলেন ম্যাট প্রায়োর। ইশান্ত নতুন বল নেওয়ার আর্জি জানালেন কাপ্তানের কাছে। ধোনি তা নাকচ করে দিলেন। যদি রিভার্স সুইং হয়, আর তাতেই প্যাডে লাগানো যায়। তা হলো না, ধোনি পুরনো বলেই বাউন্সার করার কথা বললেন। নতুন ব্যাটসম্যান আসায় তখনও বাউন্সারে ঠিক বিশ্বাসী হতে পারছিলেন না ইশান্ত। তিনজন ফিল্ডার লেগ সাইডে রেখে ধোনির কথায় ইশান্ত বাউন্সার করতে লাগলেন। প্রায়োর ফাঁদে ক্যাচ দিলেন। এরপর শুধু বাউন্সারেরই গল্প- ফিফটি করে রুট, স্টোকসের পর ব্রড ফিরলেন। ম্যাচটা জিতিয়েই দিলেন ইশান্ত। ধোনিও তো জেতালেন, নাকি! 

    ফকনার দুঃস্বপ্নের অধ্যায় শেষেও তিনি পাশে পেয়েছিলেন মাহি ভাইকে৷ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সে সিরিজ পরবর্তী সাউথ আফ্রিকা সফরে প্রথমটি বাদে বাকি দুই ওয়ানডেতেই তাকে খেলান ধোনি। মাহি ভাইয়ের মতো তিনি পরবর্তীতে পাশে পেয়েছেন ‘চিকু’কেও। ইশান্ত বড়ই ভাগ্যবান। এ দুজনের অস্তিত্বহীন তাঁর জীবন কি এমন হতে পারতো!

    ইশান্তের গল্পে কোহলির সাথে জহির খানের নামও আসবে অবধারিতভাবেই। বিরাটের সঙ্গে তাঁর জীবনে বেড়ে উঠা। জহিরের সঙ্গে তাঁর বোলিংয়ে বেড়ে উঠা। কপিল দেবের পর ভারতের হয়ে দ্বিতীয় পেসার হিসেবে শততম টেস্ট খেলা ইশান্ত শর্মা এতদুর আসার পেছনে সবচে বেশি অবদান মনে করেন জহির খানেরই। আর সে যাত্রায় তো সবসময়ই পাশে পেয়েছেন দুই অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি ও বিরাট কোহলিকে।

    আচ্ছা ইশান্তকে এ দুজনের মধ্যে পার্থক্য খুজে বের করতে বললে কেমন হয়? ইশান্ত এক সাক্ষাৎকারে দুজনের মধ্যে একটাই পার্থক্য খুজে পেয়ে বলেছিলেন- শুরুতে যখন ইশান্ত আগ্রাসী ছিলেন তখন ধোনি বলতেন, 'একটু রাগ কম কর। নিষিদ্ধ হলে বল কে করবে।' আর বিরাট বলেন, 'শুধু নিষিদ্ধ না হলেই হবে। বাকি যা ইচ্ছা কর, আমি দেখে নিবো।'

    ****

    কোনও এক ম্যাচ। জাস্প্রিত বুমরাহ ইশান্ত শর্মার গতি লক্ষ্য করছেন। গতি কমছে, বুমরাহ বলছেন, ‘কি? এখনো ইঞ্জিন স্টার্ট হলো না?’। ইশান্তের সে ইঞ্জিনটা সার্ভিস দিতে পারো বড্ড বেশি।

    এ ইঞ্জিন দীর্ঘসময় ধরে চলতে পারে, এটির বিশেষ এ গুণের দেখা অস্ট্রেলিয়া সফরে ২০০৮ সালেই মিলেছিল। ৮ ওভারের স্পেল চলছে, ইশান্তে পরাস্ত পন্টিং তখনো ক্রিজে। কুম্বলে ইশান্তকে বিরতি দিতে চাইলেন, শেওয়াগ বললেন আরেকটি ওভার করাতে। রঞ্জি ট্রফিতে চা-বিরতি থেকে স্টাম্পসের মাঝখানে ১৫ ওভারের স্পেল পর্যন্ত করেছেন ইশান্ত। লম্বা লম্বা স্পেল করতে পারার এ ক্ষমতা সম্পর্কে আগে থেকেই জ্ঞাত ঘরোয়াতে ইশান্তের অধিনায়ক বিরেন্দর শেওয়াগ। ইনজুরির ভয়ে তবু কুম্বলে ইশান্তকে জিজ্ঞেস করে নিলেন 'আরেকটা করবে?, ইশান্ত বললেন 'হ্যা করবো'। সে ওভারেই পরে ইশান্ত ফিরিয়েছিলেন রিকি পন্টিংকে। 

    ইশান্তের ইঞ্জিনের বিশেষ এ গুণের কারিগর তার ছোটবেলার কোচ। সেসময়ে তিনি দুপুর ১টা থেকে সুর্যাস্ত পর্যন্ত তাকে বল করার নির্দেশ দিতেন। ইশান্তের তাতে কোন আপত্তি থাকার কথাই নয়। শৈশবে সবাই যখন চার-ছক্কা মারতে আগ্রহী, সেখানে তার ভালো লাগতো জোরে বল করতেই। সেই থেকেই তাঁর বল করতে ভালোবাসার শুরু। এবং তখন থেকে ইশান্তের ইঞ্জিন চলছেই। হয়তো চলবে আরও অনেক দিন।