• আইপিএল ২০২১
  • " />

     

    ধাওয়ান-শোতে ম্লান আগারওয়াল, পাঞ্জাবের ১৯৫

    ধাওয়ান-শোতে ম্লান আগারওয়াল, পাঞ্জাবের ১৯৫    

    গ্রুপপর্ব, মুম্বাই (টস- দিল্লি/ফিল্ডিং)
    পাঞ্জাব কিংস- ১৯৫/৪, ২০ ওভার ( মায়াঙ্ক ৬৯, রাহুল ৬১, হুদা ২২*, গেইল ৪০, আবেশ ১/৩৩, মেরিওয়ালা ১/৩২)
    দিল্লি ক্যাপিটালস- ১৯৮/৪, ১৮.২ ওভার (ধাওয়ান ৯২, পৃথ্বী ৩২, স্টোইনিস ২৭*, আরশদিপ ১/২২, রিচার্ডসন ২/৪১ )
    দিল্লি ক্যাপিটালস ৬ উইকেটে জয়ী


    লোকেশ রাহুলের জন্মদিনের উদযাপন পন্ড করে, মায়াঙ্ক আগারওয়ালের ৩৬ বলে ৬৯ রানের ইনিংস ম্লান করে শিখর ধাওয়ানের দারুণ ইনিংসে পাঞ্জাবের ১৯৫ রান পেরিয়ে গেছে দিল্লি। আগারওয়ালের সঙ্গে রাহুলের ৬১ রানে বড় সংগ্রহ পেলেও ওয়াঙ্খেড়ের রান প্রসবা পিচ আর শিশিরে বোলারদের বল গ্রিপ করার অসুবিধাকে কাজে লাগিয়ে শিখর ধাওয়ান খেলেছেন ৪৯ বলে ৯২ রানের অসাধারণ ইনিংস। প্রথম ম্যাচে চেন্নাইকে উড়িয়ে দেওয়ার পর রাজস্থানের সামনে মুখ থুবড়ে পড়লেও আবারও জয়ের ধারায় ফিরল দিল্লি।

    রানতাড়ায় পাঞ্জাবের পেসারদের উপর শুরু থেকেই চড়াও হয়েছিলেন দুই দিল্লি ওপেনার। মোহাম্মদ শামির বলে লং অন দিয়ে দারুণ এক ছয়ে শুরু করেছিলেন পৃথ্বী শ, শুরুতেই বেশ চাপে ফেলেছিলেন পাঞ্জাবের বোলারদের। তবে পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারেই আরশদিপ সিং এর স্লোয়ারে বিভ্রান্ত হয়ে ক্রিস গেইলের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি, ১৭ বলে ৩২ রানে থেমেছে তার ইনিংস। তবে শিখর ধাওয়ানের সঙ্গে মিলে পাওয়ারপ্লেতে তারা ঠিকই তুলেছিলেন ৬২ রান।

    শর বিদায়ের পরে অবশ্য শুরু হয় ধাওয়ানের আগ্রাসী ব্যাটিং, ৩১ বলেই ফিফটি পূর্ণ করেছেন তিনি। এই আসরের প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমে নিজের ভুমিকা ঠিকভাবেই পালন করেছিলেন স্টিভ স্মিথ। তবে হুট করেই রাইলি মেরেডিথের বাউন্সারে বিদঘুটে এক শট খেলে ঝাই রিচার্ডসনের হাতে থার্ডম্যানে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান তিনি মাত্র ৯ রানেই। গিয়ার পরিবর্তন করা ধাওয়ান অবশ্য মোটেও বিচলিত হননি তাতে, চালিয়ে গেছেন সহজাত ব্যাটিং। লেগ সাইডে জায়গা বানিয়ে খেলেছেন দারুণ সব শট, বোলারদের দিশেহারা করে ফিল্ডিং নিয়ে রীতিমত ছেলেখেলা করেছেন। তবে ওই একই ভঙ্গিতে শট খেলতে গিয়েই ঝাই রিচার্ডসনের দারুণ এক স্লো ইয়র্কারে পরাস্ত হয়ে বোল্ড হয়ে সেঞ্চুরি মিস করেছেন মাত্র ৮ রানের জন্য, এর আগে মেরেছেন ১৩ চার আর ২ ছয়। দিল্লিকে যে জায়গায় নিয়ে গিয়েছিলেন, সেখান থেকে তাদের টলাতে পাঞ্জাবকে করতে হতো অসাধারণ কিছু।

    ধাওয়ানের বিদায়ের পর কিছুটা আঁটসাঁট বোলিংয়ে দিল্লিকে চেপে ধরেছিলেন অবশ্য তারা, তবে শামির করা ১৭তম ওভারে এসেই এলোমেলো হয়ে যায় সব পরিকল্পনা, দুই নো বলসহ তিনি দেন ২০ রান, তার ফিগার হয়ে দাঁড়ায় ৪-০-৫৩-০! পরের ওভারে রিচার্ডসনের বল আকাশে তুলে ঋষভ পান্ট ফিরে গেলে কিছুটা শঙ্কা জাগলেও অপর প্রান্তে থাকা মার্কাস স্টোইনিস ১৩ বলে ২৭ রানে অপরাজিত থেকে ম্যাচ শেষ করে ফেরেন।   

    এর আগে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ক্রিস ওকসের দারুণ সিম বোলিংয়ে প্রথম ওভারে ৫ রান তুললেও অভিষিক্ত লুকমান মেরিওয়ালার ওপর চড়াও হন পাঞ্জাবের দুই ওপেনার। তার দ্বিতীয় বলেই পয়েন্টে স্মিথের কাছে কঠিন ক্যাচ তুলে দিয়ে বেঁচে যান রাহুল, সুযোগ পেয়েই ওই ওভারে আগারওয়ালকে নিয়ে ২০ রান তোলেন। এরপর থেকেই আক্রমণের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন আগারওয়াল। দুজনে মিলে পাওয়ারপ্লেতে ৫৯ রান তোলেন, আগারওয়াল ফিফটি পূর্ণ করেন মাত্র ২৫ বলে। ১১তম ওভারে কাগিসো রাবাদাকে লং অফ দিয়ে মারা ছয়টাই বলে দিচ্ছিল, দিনটা তারই। ওই ওভারে তার দুই ছয় আর রাহুলের এক ছয়ে আসে ২০ রান, প্রথম ১১ ওভারেই পাঞ্জাব করে ১১৪ রান।

    বিভীষিকাময় প্রথম ওভারের পর অবশেষে কিছুটা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলার সুযোগ পান মেরিওয়ালা, ওয়াইড ইয়র্কারে ব্যাটে বলে না হওয়ায় সুইপার কাভারে শিখর ধাওয়ানের তালুবন্দি করেন আগারওয়ালকে, ওই ওভারেও দেন মাত্র ৪ রান। তবে এর আগে ৭ চার আর ৪ ছয়ে মাত্র ৩৬ বলে ৬৯ রানের ইনিংস খেলে দলকে বড় স্কোরের ভিত গড়ে দিয়ে যান তিনি।
      
    অপর প্রান্তে থাকা রাহুল সঙ্গ দেওয়ার জন্য কিছুটা ধীর গতিতে খেললেও ধারাবাহিকতা বজায় রেখে ৪৫ বলে তুলে নেন ফিফটি, মাইক হাসি আর ডেভিড ওয়ার্নারের পর তৃতীয় খেলোয়াড় হিসাবে আইপিএলে জন্মদিনে ফিফটি করেন তিনি। বার্থডে বয় রাহুলকে দিল্লি উপহারও দিয়েছে দুই হাত খুলেই। আভেশ খানের পোড়া কপালই বলতে হবে, তার বলে ৪২ রানে শয়ের কাছে তুলনামূলক সহজ ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যান রাহুল, এরপর ৫০ রানে তারই বলে এক্সট্রা কাভারে স্টোইনিসের হাতে ক্যাচ পড়ে রাহুলের। পরের ওভারেই অবশ্য রাবাদাকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ওই স্টোইনিসেরই তালুবন্দি হয়ে ফিরে যান ডিপ মিডউইকেট দিয়ে, এর আগে ৫১ বলে ৬১ রান করে জন্মদিনে নিজের কাজটা ঠিকমতই সেরেছিলেন। 
     
    রাহুল ফিরে যাওয়ার পরে আভেশ আর ওকস কিছুটা চেপে বসেন পাঞ্জাবের ওপর, ক্রিস গেইল আর নিকোলাস পুরান সুবিধা করতে না পেরে ফিরে যান যথাক্রমে ১১ ও ৯ রানের ইনিংস খেলে। তবে দীপক হুডার ১৩ বলে ২২* ও শাহরুখ খানের ৫ বলে ১৫* রানের ক্যামিওতে ১৯৫ রানের বড় সংগ্রহ পায় কিংস, ওকসের শেষ ওভারে আসে ১৬ রান। তবে ধাওয়ান আর দিল্লির কাছে শেষ পর্যন্ত যথেষ্ট হয়নি সেসব।