• চ্যাম্পিয়নস লিগ
  • " />

     

    চেলসির চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়: যে ৬ জায়গায় তুখেলের কাছে মার খেয়েছেন গার্দিওলা

    চেলসির চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়: যে ৬ জায়গায় তুখেলের কাছে মার খেয়েছেন গার্দিওলা    

    আরও একবার চেলসি হারাল ম্যানচেস্টার সিটিকে। এফএ কাপ সেমিফাইনাল, প্রিমিয়ার লিগের পর এবার সবচেয়ে বড় মঞ্চ - চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালেও। কিন্তু কোন কোন জাগায় গার্দিওলাকে টেক্কা দিলেন তুখেল... 

     

    ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডারহীনতা... 

    একাদশেই চমক দিয়েছিলেন গার্দিওলা। ফার্নান্দিনহো বা রদ্রির মতো স্বীকৃত কোনো ডিফেন্সিভ মিড ছাড়াই নামিয়েছিলেন একাদশ। গুন্ডোয়ান একটু নিচে খেলেছিলেন, ফলস নাইন হিসেবে কেডিবি। কিন্তু সিটি একজন ডিফেন্সিভ মিডের অভাবে ভুগেছে ম্যাচের অনেকটা সময়। গোলের সময়ও হয়তো একজন মিড থাকলে মাউন্টের পাসটা পেতেন না হ্যাভার্জ। সেজন্য সিটির ভারসাম্যটা ঠিক ছিল না শুরু থেকে, চেলসি পেয়েছে পরিষ্কার সুযোগ। পরে ফার্নান্দিনহোকে নামিয়ে কিছুটা তা ফিরে পেলেও হয়তো এই সিদ্ধান্তের খেসারত দিতে হয়েছে গার্দিওলাকে।



    স্টার্লিং: ঠিক জায়গায় ভুল লোক? 

    স্টার্লিংকে প্রথম একাদশে নামানোটাও ছিল একটু বিস্ময়ের। সর্বশেষ কয়েকটি বড় ম্যাচে একাদশে নামেননি স্টার্লিং। আজ তাকে খেলয়েছিলেন বাঁয়ে, কিন্তু বলার মতো খুব বেশি কিছু করতে পারেননি। বরং বাঁ প্রান্তে কিছুদিনে দুর্দান্ত ফোডেনকে আরও ভালোভাবে গার্দিওলা কাজে লাগাতে পারতেন কিনা উঠেছে সেই প্রশ্নও। শেষ পর্যন্ত অবশ্য স্টার্লিংকে তুলেছেন গার্দিওলা, কিন্ত দেরি হয়ে গেছে কি না সেই প্রশ্ন উঠেছে।  

    চেলসির থ্রি ম্যান ব্যাকের সমন্বয়

    পুরো ম্যাচে দুর্দান্ত ছিল আজপিল্কুয়েতা-রুদিগার-সিলভার ব্যাকলাইনের দুর্দান্ত সমন্বয়। চোট পেয়ে সিলভা উঠে গেলেও সেই সমন্বয়ে ভাটা পড়েনি। ক্রিশ্চিয়েনসেন নামার পরেও দেখিয়ে দিয়েছেন, কেন তিনি যোগ্য বিকল্প ছিলেন। অফ দ্য বলেও ৩-৫-২তে ছিল চেলসি, সেখানে তাদের শেপ ধরে রেখেছেন এই তিন ডিফেন্ডার। সেজন্য সিটির আক্রমণগুলো সময়মতো ক্লিয়ার করেছেন তিন জনই। 

    কান্তে ম্যাজিক 

    তিন ডিফেন্ডার, দুই উইংব্যাক নিয়ে নামলে মধ্যমাঠে যে শুন্যতা তৈরির শংকা থাকে, সেটার জন্য দরকার হয় একজন বক্স টু বক্স মিডের। এমন একজনের, যিনি পুরো মাঠ চষে খেলতে পারবেন। এমন একজনের, যিনি কাভার করতে পারেন ডিফেন্সের অনেকটা। ১১ বার ডুয়েল জিতেছেন, ১০ বার বল রিকভারি করেছেন - যা পুরো ম্যাচে সর্বোচ্চ। এমনকি চারটি হেড জিতেছেন। কয়েকবার দারুণ ট্যাকলে বিপদমুক্ত করেছেন দলকে। তুখেলের তুরুপের তাস ছিলেন এই ফ্রেঞ্চ। এমন একজনের অভাব তাই পুরো ম্যাচেই টের পেয়েছেন গার্দিওলা। 

    হ্যাভার্জের এক্স-ফ্যাক্টর

    কাই হ্যাভার্জকে বুন্দেসলিগা থেকে ৮০ মিলিয়ন দিয়ে নিয়ে আসার পর অনেক প্রশ্ন উঠেছিল। এমনকি ফাইনালের আগে একাদশে জায়গা নিয়েও ছিল সংশয়। হ্যাভার্জ দেখিয়ে দিয়েছেন, এখন তাকে এই প্রজন্মের সেরাদের একজন বলে মনে করা হয়। নিজের ফিজিক্যাল প্রেজেন্স দিয়ে সিটি রক্ষণকে ভুগিয়েছেন, গোলের সুযোগেও ছিলেন ক্লিনিক্যাল। ভের্নার আর তার ওয়ার্করেটে ভুগেছে সিটি রক্ষণ, ডিয়াজ-স্টোনসের চীনের দেয়ালেও ধরিয়েছেন ফাটল।

    এবং প্ল্যান এ ভার্সেস প্ল্যান বি 

    আজকের ম্যাচের এই জায়গায় ছিল সবচেয়ে পার্থক্য। গার্দিওলা পিএসজির সাথে যে প্ল্যানে সাফল্য পেয়েছিলেন, যেটাতে তার দল ভালো খেলছিল, ফাইনালে সেটা থেকে সরে এলেন। কোনো ডিফেন্সিভ মিড না নামিয়ে, স্টার্লিংকে খেলিয়ে দাবার গুটিতে দিলেন ভুল চাল। অন্যদিকে তুখেল আস্থা রেখেছিলেন তার প্ল্যান এ তেই, নিজের তিনজন সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার সেই আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন। আগের দুই ম্যাচ থেকে তাই শিক্ষা নিতে পারেননি গার্দিওলা, আরও একবার তুখেলের ট্যাকটিকসের কাছে তার হার মানতে হলো।