• অস্ট্রেলিয়ার বাংলাদেশ সফর ২০২১
  • " />

     

    'আমরা করব জয়' নিয়ে বাকবিতণ্ডা অস্ট্রেলিয়ান কোচ ও ম্যানেজারের

    'আমরা করব জয়' নিয়ে বাকবিতণ্ডা অস্ট্রেলিয়ান কোচ ও ম্যানেজারের    

    বাংলাদেশের কাছে নিদারুণ সিরিজ পরাজয়ের পর এবার বিতর্কে জড়ালেন অস্ট্রেলিয়ার কোচ জাস্টিন ল্যাঙ্গার ও দলের ম্যানেজার গ্যাভিন ডাভি। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার ডিজিটাল দলের একজন সদস্যের সাথে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়েছেন এই দুজন, প্রসঙ্গ তাদের চ্যানেলে প্রকাশিত একটি ভিডিও। 

    বাংলাদেশ দল সাধারণত জয়ের পর ড্রেসিং রুমে উদযাপন করে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ‘আমরা করবো জয়’ গেয়ে, এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। টানা ৩টি টি-টোয়েন্টি জিতে পরাক্রমশালী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম দ্বিপাক্ষিক সিরিজ জয়ের পর স্বভাবতই উচ্ছ্বসিত বাংলাদেশ দলের উদযাপনটাও ছিল প্রাণখোলা। ইতিহাস গড়ার এই নির্মল আনন্দ ছুঁয়ে গেছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার ভিডিও দলকেও। দর্শকদের মাঝে বাংলাদেশ দলের সেই উদযাপনকে ছড়িয়ে দিতেই তাই ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার চ্যানেলে ঐ ভিডিও প্রকাশ করেছিলেন ঐ কর্মকর্তা। তবে বিষয়টা মোটেও সহজভাবে নিতে পারেননি ডাভি ও ল্যাঙ্গার।

    ভিডিওটা দেখার পরে বেশ চটেছিলেন ডাভি। হোটেলেই তাই প্রায় এক ডজন খেলোয়াড় ও স্টাফের সামনেই ঐ কর্মকর্তাকে আকস্মিকভাবে গলা উঁচিয়ে শাসান ডাভি। ঐ কর্মকর্তা বাংলাদেশের ভিডিও প্রকাশের ব্যাপারে তার অবস্থানে অনড় থাকলে ডাভি তাকে বারবার বলেন ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার চ্যানেলের জন্য এই ভিডিও বড্ড বেমানান, তাও আবার এভাবে সিরিজ হারের পর।  উপস্থিত খেলোয়াড় ও কর্মকর্তারা কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে গেলে পরে বিষয়টা ল্যাঙ্গারের কানে পৌঁছায়। ল্যাঙ্গার এসেও অবশ্য আবারও ঐ কর্মকর্তাকে একই সুরে এই ভিডিও প্রকাশ করার বিষয়ে প্রশ্ন করেন। পরে দুইজন মধ্যস্ততায় আসলে পরিস্থিতি ঠাণ্ডা হয়। 

    বুধবারে ডাভি এই ঘটনা নিয়ে আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে বলেন, “দলের মধ্যে সুস্থ পরিবেশ বজায় রাখতে খোলামেলা কথা বলতে পারার সৎ সাহস থাকতে হবে, সেটা খেলোয়াড়দের মধ্যেই হোক, অথবা সহকারী স্টাফ অথবা দলের সাথে সংশ্লিষ্ট যে কারও মধ্যে। এখানেও সেটাই হয়েছে, এর বেশি কিছু না।” তিনি আরও যোগ করেন, “আমাদের মধ্যে নির্দিষ্ট একটা বিষয়ে মতবিরোধ ছিল। তবে পরে আমার মনে হয়েছে এই কথোপকথনটা পর্দার আড়ালেও হতে পারত। অনাকাঙ্ক্ষিত এই বিবাদের সম্পূর্ণ দায়ভার আমি নিচ্ছি।”  ল্যাঙ্গার অবশ্য এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিতে অস্বীকৃতি জানান। 

    এর আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ৪-১ ব্যবধানে টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারের পর ড্রেসিং রুমে খেলোয়াড়দের উপর ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছিলেন ল্যাঙ্গার। বাংলাদেশের কাছে ৪-১ ব্যবধানে সিরিজ হারার পর মাঠে রাসেল ডমিঙ্গোর সাথে কথোপকথনের সময় ক্যামেরায় তাকে কিছুটা অশান্ত মনে হলেও অভ্যন্তরীণ তথ্যসুত্রে জানা গেছে, এবার খেলোয়াড়দের সামনে কোনও ক্ষোভ প্রকাশ করেননি তিনি।

    ২০১৮ সাল থেকে অস্ট্রেলিয়ার পুরুষ দলের দায়িত্বে ল্যাঙ্গার থাকলেও ডাভি ২০১১ সাল থেকেই অস্ট্রেলিয়ার হাই পারফর্ম্যান্স দলের ম্যানেজার ছিলেন। পরে ২০১৯ সালে অস্ট্রেলিয়া দলের এই দায়িত্বে উত্তীর্ণ হন তিনি, করোনাকালীন সময়ে বায়ো-বলয়ের মাঝে রেখে অস্ট্রেলিয়া দলের জন্য এই সিরিজগুলো আয়োজনে আছে তার মুখ্য ভূমিকা। ২০০৯-২০১২ সালে ল্যাঙ্গার অস্ট্রেলিয়া দলের ব্যাটিং কোচের দায়িত্ব পালন করার সময় ডাভির ভাল বন্ধু হয়ে উঠেন। টানা পাঁচ টি-টোয়েন্টি সিরিজ হেরে বসার পাশাপাশি বায়ো- বলয়ের এই কঠিন দিনগুলোতে দুই বন্ধুর এভাবে মেজাজ হারিয়ে বসার ঘটনাগুলো তাই দলের সাথে সংশ্লিষ্টদের কপালে ভাঁজ ফেলেছে।