• ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    নরউইচকে উড়িয়ে মৌসুমের প্রথম জয় সিটির

    নরউইচকে উড়িয়ে মৌসুমের প্রথম জয় সিটির    

    খানিকটা চাপে ছিলেন গ্যাব্রিয়েল জেসুস। ট্রান্সফার মার্কেটে গুঞ্জন ছিল, হ্যারি কেইনকে আনার জন্য তাকে পাঠিয়ে দেয়া হতে পারে স্পার্স শিবিরে। আগের ম্যাচেও জায়গা পাননি একাদশে। কিন্তু আজ সিটির ম্যাচ জেতার পেছনে বড় কারিগর এই জেসুসই, পেয়েছেন দুই অ্যাসিস্ট, অন্য একটি গোলে ছিল বড় অবদান। আর ১০০ মিলিয়ন পাউন্ডার গ্রিলিশও পেয়েছেন সিটিজেনদের হয়ে নিজের প্রথম গোল। সঙ্গে লাপোর্তে, স্টারলিং, মাহরেজের গোলে ম্যানচেস্টার সিটি নরউইচের বিপক্ষে জয় পেয়েছে ৫-০ গোলের বড় ব্যবধানে। মৌসুমের প্রথম জয়টাও পেয়েছে সিটি।

    প্রিমিয়ার লিগে সিটি-নরউইচ ম্যাচ মানেই গোল বন্যার আসর। ম্যান সিটি তাদের শেষ তিন হোম ম্যাচে নরউইচের জালে বল জড়িয়েছে ১৪ বার! আর হজম করেছে মাত্র একটি। সেরকম আরেকটি গোল ফেস্টেরই আভাস পাওয়া যাচ্ছিল ম্যাচের শুরু থেকে, ম্যান সিটিও খেলেছে নিজেদের চেনা আগ্রাসী ছন্দে।

    প্রথম গোলের জন্য অপেক্ষা মাত্র সাত মিনিট। পেপ গার্দিওলা আজ জেসুসকে খেলিয়েছেন রাইট উইংয়ে, টোটকাটাও লেগেছে কাজে। জেসুসের চতুর মুভমেন্ট ট্র‍্যাক করতে পারছিলেন না নরউইচের দুই সেন্টার ব্যাক। রদ্রির লব বুকে নিয়ন্ত্রণ নিয়ে জেসুসের নিচু ক্রস ক্লিয়ার করতে পারেননি নরউইচের ক্যাপ্টেন হ্যানলি। তার গায়ে লেগে বল গোলকিপার টিম ক্রুলের হাত ছুয়ে চলে যায় জালে। ১৩ মিনিটেই সিটিজেনরা পেয়ে গিয়েছিল তাদের দ্বিতীয় গোল। জেসুসের বাড়ানো ক্রস থেকে ফেরান টরেসের ফিনিশিংয়ে সিটি গোল পেলেও ভিএআরে সেটি বাতিল হয়ে যায় সেটি। গোলের সুযোগ তৈরি হবার সময়ে রাশিকাকে টরেস ফাউল করায় দ্বিতীয় গোলের জন্য বাড়ে অপেক্ষা।

    অপেক্ষা ফুরোয় ম্যাচের ২২ মিনিটে, যা স্মরণীয় হয়ে থাকবে জ্যাক গ্রিলিশের জন্য। অভিষেক ম্যাচে ভালো পারফরম্যান্সে নজর কাড়লেও স্পার্সের বিপক্ষে সিটি হেরেছিল ম্যাচ। লেফট উইং থেকে গ্রিলিশ বল নিয়ে বক্সে বার বার ঢুকছিলেন নরউইচের ডিফেন্স কাটিয়ে। রাইট উইং থেকে জেসুসের দুর্দান্ত আরেকটি ক্রস গ্রিলিশের হাঁটুতে লেগে চলে যায় জালে। গোল উদযাপনের সময় যেন পুরো মুহূর্তটাকে ধরে রাখতে চাইলেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ট্রান্সফারে সবচেয়ে দামী এই ফুটবলার। 

    ম্যাচের কোনো মুহূর্তেই নরউইচ তেমন কোন ভয় ধরাতে পারেনি সিটির হাফে। রদ্রি-গুন্ডোগান মাঝমাঠের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ঠিক রেখেছেন ম্যাচের হাই টেম্পো, বলও খুব একটা যেতে দেননি নিজেদের হাফে। আর তাই বড় কোন পরীক্ষা দিতে হয়নি সিটির ডিফেন্সকে।

    দ্বিতীয় হাফে দুই উইং ধরে সিটি আরো চেপে ধরে ক্যানারিদের ডিফেন্সকে। ৬৪ মিনিটে গুন্ডোগানের কর্নার থেকে গোল পেয়ে যান লাপোর্তে। ৭১ মিনিটে আবারো জেসুসের নৈপুণ্য। নরউইচের ফাঁকা লেফট ফ্ল্যাংক ধরে বল নিয়ে এগিয়ে কাট করে এগিয়ে দেন টরেসের বদলি হিসেবে নামা স্টারলিংয়ের উদ্দেশ্যে। আলতো ট্যাপ করে বল জালে জড়াতে খুব বেশি বেগ পেতে হয়নি স্টার্লিংয়ের, ম্যান সিটি পায় তাঁদের চতুর্থ গোল। নরউইচের বিভীষিকার শেষ হয় বদলি হিসেবে নামা মাহরেজের গোলে, ৮৪ মিনিটে রুবেন দিয়াসের বাড়ানো লং বল দুর্দান্ত ফিনিশিংয়ে বল জালে পাঠান তিনি। 

    ম্যাচে কতটা আগ্রাসী ছিল সিটি সেটা বোঝা যাবে পরিসংখ্যান দেখেই। গোলমুখে নরউইচের নেয়া মাত্র একটি গোল শটের বিপরীতে সিটি নিয়েছে ১৬টি। আর দারুণ এক পারফরম্যান্স দিয়ে যথাযথভাবেই ম্যান অফ দ্য ম্যাচ হয়েছেন গ্যাব্রিয়েল জেসুস।