• পাকিস্তানের বাংলাদেশ সফর
  • " />

     

    মিরপুরে সিরিজ হেরে বাংলাদেশের অসহায় আত্নসমর্পণ

    মিরপুরে সিরিজ হেরে বাংলাদেশের অসহায় আত্নসমর্পণ    

    ২য় টি-টোয়েন্টি, মিরপুর (টস- বাংলাদেশ/ ব্যাটিং)
    বাংলাদেশ ১০৮/৭, ২০ ওভার (শান্ত ৪০, আফিফ ২০, মাহমুদউল্লাহ ১২, মাহেদী ৩০*, আফ্রিদি ২/১৫, শাদাব ২/২২, ওয়াসিম জুনিয়র ১/৯)
    পাকিস্তান ১০৯/২, ১৮.১ ওভার (ফাখার ৫৭*, রিজওয়ান ৩৯, মোস্তাফিজ ১/১২, বিপ্লব ১/৩০)

    ফলাফল: পাকিস্তান ৮ উইকেটে জয়ী

     

    দেশের মাটিতে টানা তিন টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতে উড়তে থাকা বাংলাদেশকে মাটিতে নামিয়ে এনে সিরিজ জয়ের ধারা ছিন্ন করল পাকিস্তান। আরও একটি জরাজীর্ণ ব্যাটিং প্রদর্শনীর দিনে নাজমুল হোসেন শান্তর ৪০ রানে ভর করে ১০৮ রানের পুঁজি পায় বাংলাদেশ। জবাবে মোহাম্মদ রিজওয়ান-ফাখার জামানের ৮৫ রানের জুটিতে অনায়াসেই জয় পায় পাকিস্তান; ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গিয়ে নিশ্চিত করে ফেলে সিরিজ জয়।

    ১০৯ রানের মামুলি লক্ষ্যে পাকিস্তানের শুরুটা অবশ্য আশাব্যাঞ্জক হয়নি। মোস্তাফিজুর রহমানের করা তৃতীয় ওভারে ফিরে যান পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজম। দারুণ এক টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ কাটিয়ে মিরপুরে এসে যেন নিজেকে হারিয়ে খুঁজছেন বাবর; মোস্তাফিজের বল স্টাম্পে ডেকে এনে তাই তিনি ফেরেন ১ রানে। রান তুলতে বেগ পেতে হলেও ফাখার জামানকে সঙ্গী করে এদিন পাওয়ারপ্লেতে আর কোনও বিপদ ঘটতে দেননি মোহাম্মদ রিজওয়ান; দুজনে মিলে তুলে ফেলেন ২৭ রান।

    কোনও রকমের তাড়াহুড়া না করেই এরপর খেলতে থাকেন এই দুজন। উইকেটের কোনও গন্ধ না পেয়ে পরিশ্রান্ত বাংলাদেশ যেন এক প্রকার হাল ছেড়ে দেয়। ওয়ানডে মেজাজে খেলতে থাকা রিজওয়ানের সাথে আরেক প্রান্তে ফাখার অবশ্য ছিলেন তুলনামূলক আক্রমণাত্মক; ফিফটিও তুলে নেন ৪০ বলে। বেশ কয়েকটি লাগামছাড়া ডেলিভারির পাশাপাশি যা একটু সুযোগ তৈরি করেছিলেন ঐ আগের দিনের সুযোগ বঞ্চিত আমিনুল ইসলাম বিপ্লবই। ১৬তম ওভারের প্রথম বলেই পেতে পারতেন রিজওয়ানের উইকেট। সেবার তাসকিন সহজ ক্যাচ ফেলে দিলেও এক বল পরে ঠিকই রিজওয়ানকে ৩৯ রানে ফেরান তিনি। হায়দার আলীকে নিয়ে এরপর ৫১ বলে ৫৭* রানে অপরাজিত থেকে জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে ফাখার।     


    এর আগে টসে জিতে ব্যাটিং নিয়ে আবারও শুরুতেই বিপর্যয়ে পরে বাংলাদেশ। গত ম্যাচের ম্যাচসেরা হাসান আলীর জায়গায় দলে আসা শাহীন শাহ আফ্রিদির প্রথম ওভারেই রানের খাতা খোলার আগে ফিরে যান সাইফ হাসান। পরের ওভারেই মোহাম্মদ ওয়াসিম জুনিয়রের শিকার হয়ে ফেরেন মোহাম্মদ নাঈম। উইকেটে এসে আফ্রিদিকে দারুণ এক ছয় মারেন আফিফ হোসেন। ক্রোধের বশে বা অধিক উত্তেজনা-কারণ যাই হোক, পরের বলে আফিফের ফিরতি শটে বল কুড়িয়েই তার পা বরাবর বল ছুঁড়ে মারেন আফ্রিদি। সেখান থেকেই ব্যথায় মাটিতে লুটিয়ে পড়া আফিফকে আর মোটেও সপ্রতিভ মনে হয়নি। নাজমুল হোসেন শান্তকে সঙ্গী করে অবশ্য পাওয়ারপ্লেতে আর কোনও বিপদ ঘটতে দেননি, তুলে ফেলেন ৩৬ রান।

    পাওয়ারপ্লের পর অবশ্য দুজন প্রান্ত বদল করছিলেন নিয়মিত। কিন্তু শাদাব খানের বলে অদ্ভুত এক রিভার্স শটের চেষ্টায় মোহাম্মদ রিজওয়ানকে ক্যাচ অনুশীলনের সুযোগ করে দিয়ে ২১ বলে ২০ রান করে ফেরেন আফিফ। উইকেটে আসার এক বল পরেই আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের বিপরীতে রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। উইকেটে যেটুকু সময় ছিলেন খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি; ফলস্বরূপ হারিস রউফের বলে খোঁচা দিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান ১৫ বলে ১২ করে। উইকেটে থিতু হয়েও থিক পরের ওভারেই অধিনায়কের পদাঙ্ক অনুসরণ করে বিদায় নেন শান্ত; শাদাবকে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে তিনি ফেরেন ৩৪ বলে ৪০ রান করে।

    শান্তর বিদায়ের পর বড্ড ম্যাড়ম্যাড়ে ছিল বাংলাদেশের ইনিংস। মোহাম্মদ নাওয়াজের বলে মাহেদী হাসানের দুর্ভোগের অবসান ঘটার পর ১৩ বলে ১১ রান করে আফ্রিদির দ্বিতীয় শিকার হয়ে ফেরেন নুরুল হাসান। ১৬ বলে ৮ রান করে আমিনুল ইসলাম বিপ্লব অপরাজিত থাকলে বাংলাদেশ পৌঁছাতে পারে ১০৮ রান পর্যন্ত। সেই রান তাড়া করতেও খুব একটা বেগ পেতে হয়নি পাকিস্তানের।