• বঙ্গবন্ধু বিপিএল ২০২২
  • " />

     

    মিরপুরে ক্যারিবিয়ান শো: শফিকুল-জোসেফের তোপ, মাহমুদউল্লাহ-রাসেল ঝড়ে ঢাকার প্রথম জয়

    মিরপুরে ক্যারিবিয়ান শো: শফিকুল-জোসেফের তোপ, মাহমুদউল্লাহ-রাসেল ঝড়ে ঢাকার প্রথম জয়    

    বরিশাল-ঢাকা (টস-ঢাকা/বোলিং)

     

    ফরচুন বরিশাল- ১২৯/৮, ২০ ওভার ( গেইল ৩৬, ব্রাভো ৩৩, সাকিব ২৩, রাসেল ২৭/২, উদানা ২৯/২)

    মিনিস্টার গ্রুপ ঢাকা- ১৩০/৬, ১৭.৩ ওভার (মাহমুদউল্লাহ ৪৭, রাসেল ৩১*, শুভাগত ২৯)

    ফলাফল: ঢাকা চার উইকেটে জয়ী। 

     

     

    ১২৯ রানের পুঁজি নিয়ে মিনিস্টার গ্রুপ ঢাকাকে ভালোভাবেই চেপে ধরেছিল ফরচুন বরিশাল। কিন্তু বাধ সাধেন ঢাকার অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। শুভাগত হোমকে নিয়ে শুরুর ধাক্কা সামাল দেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। শুভাগত ফিরলে ঢাকার হয়ে বাকি কাজটা সারেন আন্দ্রে রাসেল। মারকুটে এই ক্যারিবিয়ানের টর্নেডো ইনিংসে এবারের বিপিএলে প্রথম জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে ঢাকা। 
     

    ক্যারিবিয়ান শোতে রাসেলের ঝলক

    এই ম্যাচকে ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটারদের মিলনমেলা বললে ভুল হবে না। বরিশাল একাদশের আজকের বিদেশি তিন ক্রিকেটারই ক্যারিবিয়ান। ক্রিস গেইল, ডোয়াইন ব্রাভো ও আলজারি জোসেফ। ঢাকায় খেলছেন আন্দ্রে রাসেল। ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দেয়ায় এই চারজনই ছিলেন আজ অগ্রনী ভূমিকায়।  শুরুটা গেইল-ব্রাভো-জোসেফরা রাঙালেও, শেষের নায়ক রাসেলই। 

    লক্ষ্য ছিল ১৩০। কিন্তু টপ অর্ডার ব্যর্থ হওয়ায়, আরো একটি পরাজয় চোখ রাঙায় ঢাকাকে। রাসেল উইকেটে যান ১৪তম ওভারে। পরের ওভারে স্বদেশী জোসেফের বলে মারেন একটি করে ছক্কা ও চার। 

    সাকিবকে দেখেশুনে খেললেও, তাইজুলকে পেয়েই জ্বলে ওঠেন রাসেল। এক ছক্কা ও দুই চার মেরে, ম্যাচটা নিয়ে যান হাতের নাগালে। ১৫ বলে ৩১ রানে অপরাজিত থাকেন বিধ্বংসী এই ব্যাটসম্যান।

    এর আগে প্রথম ইনিংসে গেইলের শুরুটা ছিল ধীরস্থির। পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারে ব্যাটিংয়ে গেলেও, প্রথম ছক্কাটা মেরেছেন আরো তিন ওভার পর। শট খেলেছেন ঠিকই, কিন্তু আগের সেই সোনালী সময়ের গেইলকে সেভাবে খুঁজে পাওয়া যায়নি। প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমে বাঁহাতি এই ওপেনার আউট হয়েছেন দলীয় সর্বোচ্চ ৩৬ রান করে। 

    লোয়ার অর্ডারে ব্রাভোর দৃঢ়তায় শেষ বৈতরণী উতরে যায় বরিশাল। মিরপুরের মন্থর উইকেটে শেষ চার ওভারে ৩৩ রান তুলেছে দলটি। যার মধ্যে ২২ রানই এসেছে ব্রাভোর ব্যাট থেকে। দারুণ বল করা স্বদেশী রাসেলকে শেষ ওভারে মেরেছেন দুইটি চার। পরের ইনিংসে আলজারি জোসেফ ফাটল ধরান ঢাকার ব্যাটিং অর্ডারে। 


    শফিকুল-জোসেফের তোপের পর মাহমুদউলাহ-শুভাগতর দৃঢ়তা
     

    ১২৯ রানের পুজি নিয়ে জিততে বরিশালের দরকার ছিল উড়ন্ত সূচনা। দলের জন্য ঠিক সেই কাজটাই করেছেন শফিকুল ও জোসেফ।  

    টানা দুই ফিফটি করা তামিমের দিকে আজও তাকিয়ে ছিল  ঢাকা। কিন্তু ছন্দে থাকা এই বাঁহাতি ওপেনারকে আজ রানের খাতাই খুলতে দেননি তরুণ শফিকুল। ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই তামিমকে বোল্ড করেন বাঁহাতি এই পেসার।

    পরের ওভারেই জোড়া আঘাতে জোসেফ ফেরান নাঈম শেখ ও জহুরুল ইসলাম অমিকে। সেই ধাক্কা সামলে ওঠার আগেই আবারো শফিকুলের কারিশমা। দারুণ এক ইয়র্কারে বোল্ড করেন মোহাম্মদ শাহজাদকে। 

    দুই পেসার মিলে দশ রানের মাঝেই গুড়িয়ে দেন ঢাকার টপ অর্ডার। ধ্বংসস্তূপ থেকে দলকে টেনে তোলেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও  শুভাগত হোম। ষষ্ঠ উইকেটে দুজন গড়েন ম্যাচ বাঁচানো ৬৯ রানের জুটি। তাদের ব্যাটেই জয়ের পথে হাঁটে ঢাকা। শুভাগত ২৯ ও মাহমুদউল্লাহ করেন ৪৭। 


    ম্যাচের প্রভাবক ডেথ ওভার ব্যাটিং

    দুই দলের ডেথ ওভারের ব্যাটিংই গড়ে দিয়েছে পার্থক্য। ঢাকার বোলাররা দারুণ করেছেন ডেথ ওভারে। শেষ ওভারে দুই বাউন্ডারি হজম ছাড়া পুরো ইনিংসেই ভালো বল করেছেন রাসেল। সাথে ইসুরু উদানাও আটকে রাখেন রানের চাকা। ব্রাভো ছাড়া সুবিধা করতে পারেননি বরিশালের কোনো ব্যাটসম্যানই। 

     

    ঠিক উল্টোটা হয়েছে বরিশালের বেলায়। শুরুতে দুর্দান্ত বল করা জোসেফকে স্লগ ওভারে পাত্তাই দেননি মাহমুদউল্লাহ-রাসেল। এরপর অধিনায়ক সাকিবের স্পিন টোটকাও কাজে লাগেনি বরিশালের। ধীরগতির উইকেটের ফায়দা নিতে তাইজুলকে আনেন আক্রমণে। কিন্তু এক রাসেলের ব্যাটিং তাণ্ডবেই চুরমার বরিশালের জয়ের স্বপ্ন।