• বঙ্গবন্ধু বিপিএল ২০২২
  • " />

     

    ইংলিশ ঝড়ের পর মৃত্যুঞ্জয়ের হ্যাটট্রিকে নাঈমের চট্টগ্রাম অধিনায়কত্বের শুভসুচনা

    ইংলিশ ঝড়ের পর মৃত্যুঞ্জয়ের হ্যাটট্রিকে নাঈমের চট্টগ্রাম অধিনায়কত্বের শুভসুচনা    

    সিলেট-চট্টগ্রাম, চট্টগ্রাম (টস-সিলেট/বোলিং)
    চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স- ২০২/৫, ২০ ওভার (জ্যাকস ৫২, হাওয়েল ৪১*, আফিফ ৩৮, সোহাগ ১/১৮, বোপারা ১/২৩, মোসাদ্দেক ১/২৫_
    সিলেট সানরাইজার্স- ১৮৬/৬, ২০ ওভার (আনামুল ৭৮, ইনগ্রাম ৫০, বোপারা ১৬, মৃত্যুঞ্জয় ৩/৩৩, নাসুম ২/১৮, মিরাজ ১/৩১)
    ফলাফল: চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ১৬ রানে জয়ী

     

    চট্টগ্রাম দলে অধিনায়কত্বে এসেছিল আকস্মিক পরিবর্তন। নতুন অধিনায়ক নাঈম ইসলামের শুরুটা হল জয় দিয়েই। দুই ইংলিশের ঝড়ের পর নাসুম আহমেদের মিতব্যায়ী স্পেল; অতঃপর মৃত্যুঞ্জয়ের হ্যাটট্রিকে এলোমেলো সিলেটের হাতের মুঠো থেকে ম্যাচ ছিনিয়ে নিয়েছে চট্টগ্রাম, ফিরেছে জয়ের ধারায়।

    জ্যাকস-হাওয়েল ঝড়; মাঝে সাব্বির-আফিফের জুটি

    কোনও বোলার বাছবিচারের বালাই না করে উইল জ্যাকস এদিন রুদ্রমূর্তি ধারণ করলেন প্রথম ওভার থেকেই। সানজামুল ইসলামের ওভারে ১৫ রান তোলার পর আলাউদ্দিন বাবুর ওভারে ১৯ রান তুললেন; ৫ম ওভারেই পূর্ণ করলেন ফিফটি। তাসকিন আহমেদের কাছে পরের বলেই থামার আগে ১৮ বলে (আসরের দ্রুততম, বিপিএল ইতিহাসের ৩য় দ্রুততম) ফিফটি করে যেই ভিত গড়ে দিয়েছেন তার ওপর দাঁড়িয়েই ইনিংস এগিয়ে নিয়ে যান আফিফ হোসেন ধ্রুব ও সাব্বির রহমান। রবি বোপারা ও মোসাদ্দেক হোসেন সাব্বিরকে লাগামছাড়া হতে দেননি। তবে অন্য প্রান্তে সুযোগ বুঝে বাউন্ডারি বের করে রানের চাকা সচল রেখেছিলেন আফিফ। সাব্বির ২৯ বলে ৩১ রান করলেও আফিফের ২৮ বলে ৩৮ রানের ইনিংসে কোনও বিরুপ প্রভাব পড়েনি চট্টগ্রামের ইনিংসে। ফলশ্রুতিতে বেনি হাওয়েল উইকেটে এসে তার স্বভাবসুলভ খেলা খেলতে পেরেছেন। ২ চার ও ৩ ছয়ে ২১ বলে ৪১* রানের ক্যামিও খেলে আরও একদিন শেষে ঝড় তুলেছেন, চট্টগ্রামকে এনে দিয়েছেন আসরের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। ২০০ পেরুনো স্কোরে মেহেদী হাসান মিরাজের ২ ছয়ে সাজানো ৪ বলে ১৩* রানের গুরুত্তও কোনও অংশেই কম নয় বৈকি।

    আনামুল-ইনগ্রামের আশা জাগানিয়া জুটি

    আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়য়ান সিমন্স দ্বিতীয় ওভারেই ফিরে গেলে সিলেট মনস্তাত্ত্বিকভাবে অনেকটাই পিছিয়ে পড়ে। তবে তার কোনও ছাপ ছিল না উইকেটে থাকা বিজয় আর ইনগ্রামের ব্যাটে। ২০৩ রানের বিশাল লক্ষ্যে তেড়েফুঁড়ে আক্রমণে না গিয়ে বোলার যাচাই করে আক্রমণ করেছেন দুজনেই। কোমরের ওপর দুটো নো-বলের সিদ্ধান্ত তাদের বিপক্ষে গেলেও মনঃসংযোগ হারাননি দুজন; ৩২ বলে বিজয়ের ফিফটির পর ইনগ্রাম ফিফটি পূর্ণ করেন ৩৬ বলে। ৫০ রানেই ইনগ্রাম ফিরলেও বিজয় ছিলেন দারুণ ছন্দে। ফিফটির পর গিয়ার পাল্টে দলকে জয়ের পথেই রেখেছিলেন। কিন্তু মৃত্যুঞ্জয়ের ওই মারণঘাতী ওভারের প্রথম শিকার হয়ে ফিরেছিলেন তিনি। ৪৭ বলে ৭৮ রান করে ফেরার সময় বিজয় হয়ত তাই দলকে আরও কিছুদুর এগিয়ে নিয়ে যেতে না পারার আক্ষেপেই পুড়েছেন।

    কিপটে নাসুমের পর মৃত্যুঞ্জয়ের মরণ-ছোবল

    নাসুম আহমেদ শুরুটাই করেছিলেন উইকেট মেইডেন দিয়ে; সেটাও ভয়ঙ্কর সিমন্সকে ফিরিয়ে। দারুণ লাইন-লেংথে আবদ্ধ করে রেখেছিলেন বিজয়-ইনগ্রাম জুটিকেও। আলাউদ্দিন বাবুর উইকেট তুলে নেওয়ার পর নিজের শেষ বলে ফেরাতে পারতেন বোপারাকেও। ৪ ওভারে মাত্র ১৮ রান দিয়ে ২ উইকেট নেওয়ার পরেও ওই ক্যাচ পড়ার আক্ষেপে পুড়তে পারতেন তিনি।

    আক্ষেপের সকল সুযোগ মুছে দিয়েছেন মৃত্যুঞ্জয় ঠিক পরের ওভারেই। দারুণ সব ইয়র্কারের পসরা সাজিয়ে বসেছিলেন। ওয়াইড ইয়র্কার কাভারের ওপর দিয়ে তুলে মারতে গিয়ে ফেরেন উইকেটে থিতু আনামুল; পরের বলেই প্রায় একই ভঙ্গিতে ফিরলেন সিলেট অধিনায়ক মোসাদ্দেক। তবে হ্যাটট্রিক বলটার জন্যই বোধহয় মৃত্যুঞ্জয় তুলে রেখেছিলেন নিজের ঝুলির সেরা ইয়র্কারটি। বোপারাকে বিন্দুমাত্র জায়গা না দিয়ে নিখুঁত ইয়র্কারে উপড়ে ফেললেন স্টাম্প। ওই ওভারে ১০ রান গুনলেও ওই তিন উইকেটেই ম্যাচ কার্যত ছিনিয়ে নেন সিলেটের মুঠো থেকে। শেষ ওভারেও মোটে ৭ রান গুনে কাজটা নিজের হাতেই শেষ করেছেন মৃত্যুঞ্জয়।