• অ্যাশেজ
  • " />

     

    'টেস্ট ক্রিকেট সুন্দর, মেয়েদের টেস্ট ক্রিকেট আরও সুন্দর'

    'টেস্ট ক্রিকেট সুন্দর, মেয়েদের টেস্ট ক্রিকেট আরও সুন্দর'    

    একমাত্র টেস্ট, মানুকা ওভাল, ক্যানবেরা (টস- ইংল্যান্ড/বোলিং)

    অস্ট্রেলিয়া-৩৩৭/৯ (ডি) ও ২১৬/৭ (ডি), (র‍্যাচেল ৬৪, ল্যানিং ৯৩, মুনি ৬৩, ব্রান্ট ৬০/৫, সিভার ৪১/৩) 

    ইংল্যান্ড- ২৯৭ ও ২৪৫/৯ (নাইট ১৬৮, সিভার ৫৮, সোফিয়া ৪৫, পেরি ৫৭/৩, সাদারল্যান্ড ৬৯/৩) 

    ফলাফল: ড্র


    টেস্ট ক্রিকেট সুন্দর, মেয়েদের টেস্ট ক্রিকেট আরও সুন্দর। ক্যানবেরায় মানুকা ওভালে মেয়েদের অ্যাশেজের যে টেস্ট হলো, তার পর কথাটা এতটুকু বাড়াবাড়ি মনে হচ্ছে না। দুই দলের জয়, ড্র এমনকি টাই সহ সম্ভাব্য চারটি ফল সম্ভব ছিল ম্যাচের শেষ ওভারের আগেও।

    শেষ ওভারে অবশ্য ইংল্যান্ডই বেশি চাপে ছিল। স্লিপ, লেগ স্লিপ, সিলি পয়েন্ট কোথায় নেই ফিল্ডার। আমব্রেলা ফিল্ডের চাদরে ইংল্যান্ডকে মুড়িয়ে অস্ট্রেলিয়ার প্রয়োজন একটা উইকেট। ইংল্যান্ডের ম্যাচ জিততে চাই ১২ রান। অবশ্য হাতে কেবল এক উইকেট থাকায় জয়ের চিন্তা আগেই ঝেটিয়ে বিদায় করে দিয়েছেন ইংলিশ টেলএন্ডার কেইট ক্রস। শেষ পর্যন্ত অ্যালেনা কিংয়ের ওভারটা ঠেকিয়ে দিয়েছেন ক্রস।

    কিছুদিন আগে পুরুষদের অ্যাশেজেও তো এমন দৃশ্য দেখা গেছে। নাটকীয়তার চূড়ান্ত, লেগ স্পিনার স্টিভেন স্মিথ, ব্যাট হাতে টেলএন্ডার জেমস অ্যান্ডারসন। টানটান উত্তেজনার সেই ম্যাচটাও নিষ্পত্তি হয়েছিল ড্র’তে। ক্যানবেরা টেস্টের শেষ সেশনে নারীরাও বুঝিয়ে দিলেন, সাদা পোশাকের ক্রিকেটে তারাও কম যান না।  


    নাইটের ব্যাটে ইংল্যান্ডের লড়াই

     

    হিদার নাইট। নামের সার্থকতা প্রমাণ করতে ইংলিশ অধিনায়ক বেছে নিলেন অ্যাশেজের মঞ্চকেই। প্রথম ইনিংসে ল্যানিং-হেইন্সদের দারুণ ব্যাটিংয়ে বড় সংগ্রহ পায় অস্ট্রেলিয়া। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ৭৯ রানে চার উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। সেখান থেকে দলকে টেনে তোলেন অধিনায়ক হিদার নাইট। ইংল্যান্ড থামে ২৯৭ রানে। যার মধ্যে একাই ১৬৮* করেন নাইট। 

    অন্যপ্রান্তে সতীর্থদের আসা-যাওয়া দেখলেও নাইট খেলেছেন ২৯৪ বল। এক ছক্কার সাথে মেরেছেন ১৭টি চার। এলিসা পেরি- অ্যালেনা কিংদেরও সামলেছেন দারুণ। মাঠ ছেড়েছেন নট আউট থেকে। তার ব্যাটে ভর করেই লড়াইয়ে ফেরে ইংল্যান্ড। 

     

    অস্ট্রেলিয়ার দাপুটে ব্যাটিং অর্ডার ও সাহসী ল্যানিং


    র‍্যাচেল হেইন্স-ম্যাগ ল্যানিং-তাহলিয়া ম্যাকগ্রাদের ব্যাটে প্রথম ইনিংসেই অস্ট্রেলিয়ার তিনশো ছাড়ানো স্কোরবোর্ড। ইংল্যান্ডের ব্রান্ট-সিভারদের উইকেট দিলেও, রানের চাকা সচল রেখেছেন ঠিকই। ফিফটি পেয়েছেন মোট চারজন। এর মধ্যে ল্যানিং ফিরেছেন ৯৩ রানে। 

    তৃতীয়দিন অস্ট্রেলিয়ার প্রতি সদয় হননি প্রকৃতিদেবী। বৃষ্টির দাপটে সেদিন তাদের দ্বিতীয় ইনিংসের ব্যপ্তি ছিল মাত্র ৪.৫ ওভার। তবে চতুর্থ দিন মধ্যাহ্নবিরতির খানিকটা পর অবধি ব্যাট করেছে অস্ট্রেলিয়া। এতেই স্কোরবোর্ডে ২১৬/৭ রান। ব্যাট হাতে আবারো ছন্দে দেখা গেছে অস্ট্রেলিয়ার টপ-মিডল অর্ডারকে। দ্বিতীয় ইনিংসে কেবল মুনি ফিফটি করলেও, মিডল অর্ডারে রান পেয়েছেন ম্যাকগ্রা-গার্ডনাররা। 

    ল্যানিং ইনিংস ঘোষণা করেন ২৫৬ রানের পুঁজি নিয়ে। তার উদ্দেশ্যটাও পরিস্কার, ইংল্যান্ডকে আবার ব্যাটিংয়ে নামিয়ে ম্যাচ জেতার সুযোগ নেয়া। 


    সাদারল্যান্ড-কিংয়ের চেষ্টা, ইংল্যান্ডের টেলএন্ডারদের দৃঢ়তা

     

    লক্ষ্য ছিল ২৫৭ রান। নারীদের টেস্ট ক্রিকেটে ২০০ এর অধিক রান তাড়া করে এখনো জেতেনি কেউ। ইংল্যান্ডের সামনেও  ছিল অসম্ভব এই লক্ষ্য। তবে দ্বিতীয় ইনিংসে ইংল্যান্ড যেভাবে ব্যাট করেছে, তাতে মনে হচ্ছিল জয়টা কেবল সময়ের ব্যাপার। তাই দ্বিতীয় ইনিংসে ইংল্যান্ড ব্যাট করেছে একটু সাবধানী হয়েই। নাইট-সিভাররা সহজে উইকেট দেননি। অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের সামলে, ম্যাচে জয়ের আশা জিইয়ে রেখেছিলেন তারাই।

    কিন্তু ভাঙনের সুর ধরান সাদারল্যান্ড। সিভার তার প্রথম শিকার। জোন্স-ব্রান্টকেও টিকতে দেননি। শেষে দাপট দেখিয়েছেন অভিষিক্ত লেগ স্পিনার কিং। অবশ্য তাদের শক্ত হাতে ঠেকিয়ে দিয়েছেন সোফি আর ক্রস মিলে। দুই টেলএন্ডারের ধৈর্য্যশীল ব্যাটিংয়ে স্বস্তির ড্র নিয়ে মাঠ ছেড়েছে ইংল্যান্ড।