বিধ্বংসী মুনিম, ‘সুপার’ সাকিব আর নাঈমের ঘূর্ণিতে বরিশালের মধুর প্রতিশোধ
কুমিল্লা-বরিশাল (টস-কুমিল্লা/বোলিং)
ফরচুন বরিশাল- ১৫৫/৫, ২০ ওভার (সাকিব ৫০, মুনিম ৪৫, হৃদয় ৩১* ,তানভীর ২২/২, জানাত ৭/১)
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স- ১২৩/৯, ২০ ওভার (মুমিনুল ৩০, তানভীর ২১* লিটন ১৯, নাঈম ২৯/৩, সাকিব ২০/২, ব্রাভো ২৯/২)
ফলাফল: ফরচুন বরিশাল ৩২ রানে জয়ী
আগের দেখায় ফরচুন বরিশালকে ৬৩ রানে হারিয়েছিল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের দুর্দান্ত অলরাউন্ডিং পারফর্ম্যান্সে ভর করে সেই হারের প্রতিশোধ ভালোভাবেই নিয়েছে বরিশাল। মুনিম শাহরিয়ারের আদর্শ টি-টোয়েন্টি ব্যাটিংয়ের পর সাকিবের ফিফটিতে বিপিএলে প্রথমবারের মতো দেড়শো ছাড়ায় বরিশালের ইনিংস। এরপর সাকিব-ব্রাভো -নাঈমদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে সেই লক্ষ্য আর টপকাতে পারেনি কুমিল্লা।
'সুপার' সাকিব
বিপিএলে সাকিব যেন উড়ছেন। তার চওড়া ব্যাট আর ঘুর্ণি জাদুর ডানায় চড়ে উড়ছে বরিশালও। টানা দুই ম্যাচে ফিফটি পেয়েছেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। দুটোই এসেছে দলের সবচেয়ে দরকারি মুহূর্তে। টি-টোয়েন্টিতে ধারাবাহিক হওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছেন বাঁহাতি এই অলরাউন্ডার। গত ম্যাচে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে তার ফিফটিতে ভর করেই লড়াইয়ের রসদ পায় বরিশাল। আজ কুমিল্লার বিপক্ষেও তাই হয়েছে।
মুনিম শাহরিয়ারের ঝড়ো ইনিংসের পরও ৬৯ রানে তিন উইকেট হারায় বরিশাল। সেখান থেকে একপ্রান্ত আগলে দাঁড়ান সাকিব। নিয়মিত স্ট্রাইক রোটেট করে সচল রাখেন রানের চাকা। ফিফটি ছুঁয়েছেন মোস্তাফিজের বলে টানা দুই চার মেরে। ৩৭ বল খেলে ৫০ রানের ইনিংসটি সাজিয়েছেন চারটি চার ও দুটি ছক্কায়।
বল হাতেও ম্যাচের নায়ক সাকিব। তার স্পিন জাদুতেই ম্যাচের মোড়টা ঘুরেছে বরিশালের দিকে। কিপ্টে বোলিং আর দরকারি ব্রেক থ্রু দিয়ে কুমিল্লার টপ অর্ডারে প্রথম ধ্বসতা নামান তিনিই। কুমিল্লার আগের ম্যাচের দুই পারফর্মার ইমরুল কায়েস ও লিটন দাস ফিরেছেন তার বলেই।
সাকিবের শর্ট বলে সুইপ করতে গিয়ে হৃদয়ের হাতে ক্যাচ দেন কুমিল্লা অধিনায়ক ইমরুল। লিটন ফিরেছেন সাকিবের টার্নিং ডেলিভারিতে পরাস্ত হয়ে। স্টাম্পিং হন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান।
বিধ্বংসী মুনিমের ব্যাটে উড়ন্ত সূচনা
অন্য প্রান্তে ক্রিস গেইলকে দর্শক বানিয়ে মুনিম টানা খেলে গেছেন বড় শট। পাওয়ারপ্লের ফায়দা বেশ ভালোই তুলেছেন ডানহাতি এই ওপেনার। কিপ্টে বোলিংয়ের জন্য সুখ্যাতি পাওয়া নাহিদুলকে মেরেছেন দুই ছক্কা। সুমন খানের ওভারেও তুলেছেন ১৬ রান। তিন ছক্কা আর চারটি চারের মারে ৪৫ রানের ইনিংসটি সাজিয়েছেন মাত্র ২৫ বলে। আউট হয়েছেন মঈন আলীর বলে মিড অনে ইমরুলের হাতে ক্যাচ দিয়ে।
গত প্রিমিয়ার লিগ টি-টোয়েন্টিতে দারুণ ছন্দে ছিলেন মুনিম শাহরিয়ার। বিপিএলে নিজের প্রথম ম্যাচে সেই ঝলক না দেখাতে পারলেও এই ম্যাচে ঠিকই জ্বলে ওঠেছেন তিনি। গেইল চেনা ছন্দে নেই, তবে মুনিম আজ সেই অভাব বোধ করতে দেননি বরিশালকে।
ব্রাভো-নাঈমের সাথে পার্ট টাইমার শান্তর ভেলকি
পূঁজি ছিল ১৫৫ রান। কুমিল্লাকে থামাতে তাই শুরুতেই ব্রেক থ্রুর বিকল্প ছিল না বরিশালের। সেই কাজটা নিজ হাতে সারেন অধিনায়ক সাকিব। পরের আঘাতটা করেন ব্রাভো। ছন্দে থাকা মাহমুদুল থেমেছেন তার বলেই। নাঈম একে একে ফিরিয়েছেন কুমিল্লার তিন ব্যাটসম্যানকে। এর মধ্যে এক ওভারেই নিয়েছেন মুমিনুল ও নারাইনের উইকেট।
তবে ভেলকি দেখিয়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ৩৫ রানে তিন উইকেট পড়ার পর, অধিনায়ক সাকিব বল তুলে দেন শান্তর হাতে। সেই ওভারের তৃতীয় বলেই মঈনের উইকেট পান তিনি। শান্তর তৃতীয় টি-টোয়েন্টি শিকার হয়ে ফেরার আগে ছয় রান করেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান।