• আইপিএল
  • " />

     

    তেওয়াতিয়া-মিলার জুটিতে গুজরাটের আরও একটি জয়ের দিনে মুম্বাইয়ের বহুল আরাধ্য 'প্রথম'

    তেওয়াতিয়া-মিলার জুটিতে গুজরাটের আরও একটি জয়ের দিনে মুম্বাইয়ের বহুল আরাধ্য 'প্রথম'    

    রাজস্থান-মুম্বাই, মুম্বাই (টস-মুম্বাই/বোলিং)
    রাজস্থান রয়্যালস- ১৫৮/৬, ২০ ওভার (বাটলার ৬৭, আশ্বিন ২১, মিচেল ১৭, মেরেডিথ ২/২৪, শকিন ২/৪৭, কার্তিকেয়া ১/১৯)
    মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স- ১৬১/৫, ১৯.২ ওভার (সূর্যকুমার ৫১, তিলক ৩৫, কিষান ২৬, আশ্বিন ১/২১, বোল্ট ১/২৬, কৃষ্ণা ১/২৯ )
    ফলাফল: মুম্বাই ৫ উইকেটে জয়ী

     

    অবশেষে জয়ের খাতা খুলল মুম্বাই, সেটাও দুর্দান্ত ফর্মে থাকা রাজস্থানকে হতাশ করে। অরেঞ্জ ক্যাপের দৌড়ে শীর্ষস্থানীয় জস বাটলার আবারও পেয়েছিলেন ফিফটি। তবে জাসপ্রিত বুমরাহ-রাইলি মেরেডিথদের দারুণ ডেথ বোলিংয়ে লাগামছাড়া হতে পারেনি রাজস্থান। সূর্যকুমার যাদব-তিলক ভার্মার জুটিতে জয়ের পথেই থাকা মুম্বাই পথ হারিয়ে বসলেও তাদের জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেয় টিম ডেভিডের দারুণ ক্যামিও।

    বাটলারের আরও একটি ফিফটি; বুমরাহ-মেরেডিথের হিসেবী দুটি ডেথ ওভার

    জীবনের সেরা ফর্মে থাকা বাটলারকে দমিয়ে রাখা সম্ভব হল না এক ম্যাচের বেশি। তরুণ স্পিনার আক্রমণে এসেই অন্য প্রান্তে ঋত্তিক শকিনের শিকার হয়ে দেবদুত পাডিক্কাল ফিরে যান। এরপর বাটলার একেবারেই খোলস বন্দী হয়ে পড়েন । মাঝের ওভারগুলোতে মৌসুমে প্রথম নামা কার্তিকেয়ার সাথে কাইরন পোলার্ড-রাইলি মেরেডিথদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে একেবারে কোণঠাসা হয়ে বাটলার এক সময়ে ছিলেন ৪৬ বলে ৪৩ রানে। পরের ওভারে শকিনকে টানা ৪ ছয় মেরে বাটলার বার্তা দেন হাত খোলার, সেই সাথে পূর্ণ করেন আসরে নিজের ৬ষ্ঠ ৫০+ রানের ইনিংস। তবে শেষ বলে এই লড়াইয়ে জয়ের হাসি নিয়ে ফেরেন শকিন, ৫২ বলে ৬৭ রানে বাটলারকে লং অফে সূর্যকুমারের তালুবন্দি করে। মাঝের ওভারের পাশাপাশি শেষ দিকেও এরপর নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ দেন মেরেডিথ; ১৮তম ওভারে রিয়ান পরাগকে ফেরানোর পর শেষ ওভারে ফেরান ৯ বলে ২১ রানের দারুণ ক্যামিও খেলা রবিচন্দ্রন আশ্বিনকে, ওভারে মাত্র ৩ রান গুনে। এর আগে ১৭তম ওভারে বুমরাহও দিয়েছিলেন মোটে ৪ রান। সেই চাপেই অপরাজিত থেকেও শিমরন হেটমায়ারের রান ছিল ১৪ বলে ৬*!

    সূর্যকুমারের ঔজ্জ্বল্য, ডেভিডের ম্যাচজয়ী ক্যামিও

    জন্মদিনেও ব্যাট হাতে ব্যর্থ রোহিত শর্মা, ২৬ রানে ফিরে যান ওপেনিং সঙ্গী ঈশান কিষানও। মুম্বাইয়ের দুঃসহ এক মৌসুমে ব্যাট হাতে আলো ছড়িয়েছেন সূর্যকুমার। সব ম্যাচেই সেটা চাপা পড়লেও এবার আর সেটা হয়নি। তরুণ তিলককে সঙ্গী করে জয়ের দিকে এগিয়ে নিয়েছিলেন দক্ষতার সাথে। তবে ১৫তম ওভারে যুজবেন্দ্র চেহেলকে বেরিয়ে এসে খেলতে গিয়ে সূর্যকুমার ৩৯ বলে ৫১ রানে থামলে পরের ওভারে প্রাসিধ কৃষ্ণার আঘাতে শেষ হয় তিলকের ৩৫ রানের ইনিংসও। আবারও যখন মুম্বাইয়ের পা হড়কানোর শঙ্কা জেগে উঠেছে তখনই নিজের মূল্যের সুবিচার করে দারুণ এক ক্যামিও খেলেন টিম ডেভিড। চেহেলকে দারুণ এক ছয় মারার পরের ওভারে কুলদিপ সেনকে মারেন দুই চার। অন্য প্রান্তে অবশ্য পোলার্ডের স্বভাববিরুদ্ধ ১৪ বলে ১০ রানের ইনিংসে আবারও ভেস্তে যেতে বসেছিল জয়ের সম্ভাবনা। তবে উইকেটে এসে প্রথম বলেই ছয় মেরে সেসব সম্ভাবনা তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেন ড্যানিয়েল স্যামস।


    গুজরাট-বেঙ্গালুরু, ব্রাবোর্ন (টস-বেঙ্গালুরু/ব্যাটিং)
    রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু- ১৭০/৬, ২০ ওভার (কোহলি ৫৮, পাটিদার ৫২, ম্যাক্সওয়েল ৩৩, সাংওয়ান ২/১৯, রশিদ ১/২৯, ফার্গুসন ১/৩৬)
    গুজরাট টাইটান্স- ১৭৪/৪, ২০ ওভার (তেওয়াতিয়া ৪৩*, মিলার ৩৯*, গিল ৩১, শাহবাজ ২/২৬, হাসারাঙ্গা ২/২৮)
    ফলাফল: গুজরাট ৬ উইকেটে জয়ী

     

    ক্রিকেট বিধাতা যেন এদিন ব্রাবোর্নে দুই দলকে দেখালেন মুদ্রার দুই পিঠ। বেঙ্গালুরুর টানা ৩য় হারের পিঠে ছুটেই চলল গুজরাটের জয়রথ। আসরে প্রথম ফিফটির দেখা পেয়েছিলেন ওপেন করতে নামা ভিরাট কোহলি। সাথে রজত পাটিদারের ফিফটি ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের ক্যামিওতে লড়াকু সংগ্রহ পেয়েছিল বেঙ্গালুরু। তবে বেঙ্গালুরুর আশা ভেস্তে দিলেন এই মৌসুমে বেশ কয়েক রানতাড়ার নায়ক ডেভিড মিলার ও রাহুল তেওয়াতিয়া। শেষ ওভারে গড়ানো ম্যাচে অবিছিন্ন থেকে এই জুটি আরও একবার ছিনিয়ে আনেন জয়।

    অথচ দিনটা হতে পারতো কোহলির। প্রতিপক্ষ পেসার প্রদীপ সাংওয়ানের আইপিল প্রত্যাবর্তনের দিনে শুরুতেই তিনি ফিরিয়েছিলেন ফাফ ডু প্লেসিকে। এরপর পাটিদারকে নিয়ে লড়ে গিয়েছিলেন কোহলি। স্বভাবসুলভ কোনও ইনিংস নয় একেবারেই, ছিল অস্বস্তির স্পষ্ট ছাপ। তবে সেসব সামলে মাটি কামড়ে পড়ে ছিলেন কোহলি। পাটিদারকে তার জন্য ধন্যবাদ দিতেই পারেন তিনি। অন্য প্রান্তে নিয়মিত প্রান্ত বদল করে রানের চাকা সচল রেখেছিলেন তিনি।

    শামির বল থেকে এরপর সিঙ্গেল বের করে কোহলি তাই ঠিকই ফিফটি পেয়েছিলেন, ৪৫ বলে, ১৪ আইপিএল ম্যাচ পরে। তবে টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে প্রথম ব্যাটার হিসেবে যেকোনো এক দলের হয়ে ৫০ ফিফটির মাইলফলক স্পর্শ করেন এই স্বস্তির ফিফটি দিয়ে। এক ওভার পরে লকিকে দারুণ এক চার মেরে ৩১ বলে নিজের প্রথম ফিফটি পূর্ণ করেন পাটিদার। দুর্দান্ত বল করে যাওয়া সাংওয়ানের আঘাতে পরের ওভারেই অবশ্য শেষ হয় পাটিদারের ৩২ বলে ৫২ রানের ইনিংস। কিছুক্ষণ পরেই ওই শামির ইয়র্কারে স্টাম্প লুটিয়ে পরে শেষ হয় কোহলির ৫৩ বলে ৫৮ রানের ইনিংস। শেষ দিকে ম্যাক্সওয়েলের ১৮ বলে ৩৩ রান ও অভিনব মনোহর৮ বলে ১৬ রানের ক্যামিও খেললেও নিয়মিত উইকেট তুলে নিয়ে নাগালের মধ্যেই বেঙ্গালুরুর সংগ্রহ রাখতে সমর্থ হয়ু গুজরাট।

    সেই লক্ষ্যে শুবমন গিল-ঋদ্ধিমান সাহা জুটির শুরুটা হয়েছিল দারুণ। ৮ম ওভারে এসে ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা অবশ্য ভাঙেন ৫২ রানের জুটি। পরের ৩ ওভারের মধ্যে গিল ও হার্দিককে হারিয়ে রানতাড়ায় খেই হারিয়ে বসে গুজরাট। শেষ ৫ ওভারে ৫৮ রান প্রয়োজন হলে ত্রাতা হয়ে আসেন উইকেটে থাকা তেওয়াতিয়া-মিলার জুটি। শুরুতে দারুণ দুই ওভার করা জশ হেজলউডের ওপর চড়াও হয়ে ১৮তম ওভারে দুজন মিলে দুই চার ও এক ছয়ে নেন ১৭ রান। শেষ ওভারে ৭ রান প্রয়োজন হলে ওই হেজলউডকে চার মেরে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন তেওয়াতিয়া।