• বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা সিরিজ ২০২২
  • " />

     

    আসিথার আগুনে দগ্ধ বাংলাদেশ হার মানল চা-বিরতির আগেই

    আসিথার আগুনে দগ্ধ বাংলাদেশ হার মানল চা-বিরতির আগেই    

    ২য় টেস্ট, মিরপুর (টস- শ্রীলঙ্কা/ ব্যাটিং)
    বাংলাদেশ- ৩৬৫ ও  ১৬৯ (সাকিব ৫৮, লিটন ৫২, মুশফিক ২৩, আসিথা ৬/৫১, রাজিথা ২/৪০, রমেশ ১/২০)
    শ্রীলঙ্কা- ৫০৬ ও ২৯/০ (ওশাদা ২১*, করুনারত্নে ৭*, এবাদত ০/৫)
    শ্রীলঙ্কা ১০ উইকেটে জয়ী

     

    চতুর্থ দিনের পড়ন্ত বিকেলে যেই ফলাফলের ইঙ্গিত মিলেছিল ম্যাচের পরিণতি হল তাই। সাকিব আল হাসান ও লিটন দাসের জুটি কেবলই সেই পরিণামকে বিলম্বিত করেছে। আর হ্যাঁ, বাংলাদেশকে বাঁচিয়েছে ইনিংস পরাজয়ের লজ্জা থেকে। তবে ম্যাচে সহজ জয় দিয়ে ১-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতল দিমুথ করুনারত্নের শ্রীলঙ্কাই।

    চা-বিরতির প্রায় আধা ঘণ্টা মত সময় হাতে থাকতে শ্রীলঙ্কা যখন ব্যাট হাতে নামল তখন বাংলাদেশ একটু হলেও হয়ত সেশন পারের আশা করছিল। সেসবের বালাই ছিল না ওশাদা ফার্নান্দোর। তাইজুল ইসলামের এক ওভারেই ১৬ রান নিয়ে ম্যাচ শেষ করে দিলেন তৃতীয় অভারেই।

    তবে এর আগে ম্যাচের পরিণতি নিশ্চিত করে ফেলেছিলেন লঙ্কান পেসার আসিথা ফার্নান্দো। প্রথম ইনিংসে দারুণ সেঞ্চুরি হাঁকানো মুশফিকের দিকে তাকিয়ে থাকা বাংলাদেশের মনের মাঝে লুকিয়ে থাকা শঙ্কাকে সত্যি করে আসিথার পেস বোলিং সঙ্গী কাসুন রাজিথা সকালেই উপড়ে ফেলেন মুশফিকের স্টাম্প। প্রথম ইনিংসে পঞ্চম উইকেটের পতন ঘটেছিল দলীয় ২৪ রানে, এবার ঘটল ৫৩ রানে - পার্থক্য শুধু এতটুকুই। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে দ্বিতীয় ইনিংসে যে বেহাল দশা হয়েছিল এবার অবশ্য তা হয়নি।

    মুশফিকের বিদায়ের পরে উইকেটে এসে তো সাকিব রীতিমত প্রতি আক্রমণ শুরু করেছিলেন। প্রথম ইনিংসে আসিথার বাউন্সার হুক করতে গিয়ে প্রথম বলেই উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছিলেন বলে সাকিবকে আসিথা সেই একই পরিকল্পনা দিয়েই স্বাগত জানিয়েছিলেন। সাকিব এবার মোক্ষম জবাব দেওয়ার পর স্পিনারদেরও নিলেন এক হাত, সাথে সব খারাপ বলেরই দিলেন যোগ্য জবাব। তবে আসিথা তখনও তার পরিকল্পনা থেকে সরে আসেননি, সাকিবও খেলেননি ঝুঁকিপূর্ণ কোনও শট। অন্য প্রান্তে লিটন তো একেবারেই অনড়। লাঞ্চের কিছু আগে ৮ম বাংলাদেশি হিসেবে ২০০০ টেস্ট রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন লিটন, বাংলাদেশিদের মধ্যে যা ইনিংসের হিসেবে ৩য় দ্রুততম। আর স্বচ্ছন্দে খেলতে থাকা সাকিব লাঞ্চের আগে শেষ বলে চার মেরে ৬১ বলেই তুলে নেন ২৭তম টেস্ট ফিফটি।

    দারুণ এক সেশন কাটানোর পর বাংলাদেশ হয়ত স্বপ্ন বুনতে শুরু করেছিল। সেই স্বপ্নের অন্যতম কারিগর লিটন লাঞ্চের পরপরই পূর্ণ করেন নিজের ১৩তম টেস্ট ফিফটি; সাকিব-লিটন জুটিও পার করে শতরানের মাইলফলক। তবে বাংলাদেশের স্বপ্নযাত্রা থেমে যায় ওখানেই, আর শুরু হয় আসিথার স্বপ্নযাত্রা। আসিথাকে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ৫২ রানে লিটন ফেরার কিছুক্ষণ পরে সেই বাউন্সার পরিকল্পনার শিকার হয়ে আসিথাকে উইকেট দিয়ে ৫৮ রানে ফেরেন সাকিব। এরপর সেই দলীয় ১৬৯ রানেই মোসাদ্দেক হোসেন রমেশ মেন্ডিসের কাছে এলবিডব্লিউর শিকার হয়ে ফেরার পর তাইজুল ও খালেদ আহমেদকে ফিরিয়ে প্রথমবারের  মত একাধারে টেস্ট ক্যারিয়ারে ইনিংসে ৫-উইকেট ও ম্যাচে ১০-উইকেটের দেখা পান আসিথা। আসিথার আগুনে বাউন্সারের গোলায় বিদগ্ধ বাংলাদেশের সেই সাথে আরও একবার দ্বিতীয় ইনিংসে নিজেদের দুর্বলতার মুখোশ উন্মোচিত হল, সেটাও চিরচেনা মিরপুরের মাটিতেই।