• কোপা আমেরিকা
  • " />

     

    কোপা জয়ের বর্ষপূর্তি: এক বছর কেমন গেল মেসিদের?

    কোপা জয়ের বর্ষপূর্তি: এক বছর কেমন গেল মেসিদের?    

    ঠিক এক বছর চারদিন আগে কোপা আমেরিকার শিরোপা জিতেছিল আর্জেন্টিনা। ২৮ বছরের শিরোপাখরা ঘুচেছিল আলবিসেলেস্তেদের।মারাকানায় ব্রাজিলকে ১-০ গোলে হারিয়ে ১৫ তম কোপা আমেরিকা শিরোপা জয়ের আনন্দে ভেসেছিলেন লিওনেল মেসিরা। ১৯৯৩ কোপা আমেরিকার পর এটাই আর্জেন্টিনার প্রথম আন্তর্জাতিকি শিরোপা, লিওনেল মেসিরও প্রথম। 

    সেই আনন্দযাত্রার পূর্ণ হয়েছে এক বছর। এই এক বছরে আর্জেন্টিনার শিরোপাজয়ী স্কোয়াডের সদস্যরা সমানতালে দাপিয়ে বেড়িয়েছেন আন্তর্জাতিক ও ক্লাব ফুটবলে। কোপা আমেরিকা জেতার পর থেকে কেমন ছিল আর্জেন্টাইনদের গত এক বছরের পারফর্ম্যান্স? 

    আর্জেন্টিনার প্রাণভোমরা লিওনেল মেসির জন্য ২০২১ সালটা বিচিত্র অভিজ্ঞতার। অর্থনৈতিক জটিলতায় ছেড়ে গেছেন দীর্ঘদিনের ক্লাব বার্সেলোনা। ছিন্ন হয়েছে দীর্ঘ ১৭ বছরের সম্পর্ক। বিদায়বেলায় তার অশ্রসিক্ত চেহারা দাগ কেটে গেছে ভক্তদের মনে। চোখের জল মুছে থিতু হয়েছেন ফরাসি ক্লাব প্যারিস সেইন্ট জার্মেইয়ে। 

     

    পিএসজির জার্সিতে নিজের ছায়া হয়েই ছিলেন মেসি। গত মৌসুমে খেলেছেন ৩৪ ম্যাচ। গোল পেয়েছেন মোট ১১টি, এর মধ্যে ৫টি চ্যাম্পিয়নস লিগে, বাকি ৬টি লিগ ওয়ানে। তবে আন্তর্জাতিক ফুটবলে ঠিকই আলো ছড়িয়েছেন এই ফরোয়ার্ড। ১১ ম্যাচে নামের পাশে ১০ গোল আর ২ এসিস্ট। ১০ গোলের ৫টিই করেছিলেন এস্তোনিয়ার বিপক্ষে। এর আগে দুই এসিস্ট করেছিলেন ইতালিকে ৩-০ ব্যবধানে হারানো ফাইনালিসিমায়। 

     

    যার গোলে কোপা আমেরিকা জিতেছিল আর্জেন্টিনা; সেই আনহেল ডি মারিয়া গত এক বছরে পিএসজির হয়ে ৩১ ম্যাচে করেছেন ৫ গোল, অ্যাসিস্ট ৯টি। যদিও পিএসজির সাথে চূক্তি শেষ হয়েছে তার। আর্জেন্টিনার জার্সিতে সব মিলিয়ে ১১ ম্যাচে ১ অ্যাসিস্ট আর ৩ গোল করেছেন। যার শেষটি জড়িয়েছিলেন ফাইনালিসিমায় ইতালির জালে। 

    সিরি আ’র গত মৌসুমে ফর্মের তুঙ্গে ছিলেন লাউতারো মার্টিনেজ। গত মৌসুমে হয়েছেন ইন্টারের সর্বোচ্চ গোলদাতা। জাতীয় দলেও ছিল ফর্মের ছোঁয়া। ৯ ম্যাচে ৬ গোল আর ৩ অ্যাসিস্ট এই স্ট্রাইকারের। 

    কোপা আমেরিকার গত আসরে মাঝমাঠটা গুছিয়েই নেমেছিল আর্জেন্টিনা। ফলটাও তারা পেয়েছিল টুর্নামেন্টজুড়ে। রদ্রিগো ডি পলের বাড়ানো এরিয়াল থ্রু থেকেই কোপার শিরোপা জেতানো গোলটা করেছিলেন ডি মারিয়া। বক্স টু বক্স প্লেইং স্টাইলে ভর করে গেল ১ বছরে জাতীয় দল, আর নতুন  ক্লাবের জার্সিতেও একই ছন্দে খেলেছেন এই সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার।

     

    সেন্ট্রাল কিংবা ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার; দুই ভূমিকাতেই খেলতে পারেন গুইদো রদ্রিগেজ । তবে জাতীয় দলের হয়ে গত এক বছরে ৪৪০ মিনিট খেলেও কোনো গোল বা অ্যাসিস্ট করতে পারেননি। মাঝ মাঠের আরেক যোদ্ধা লিয়েন্দ্রো পারেদেস অবশ্য গত মৌসুমের শেষদিকে ইনজুরির সাথেই লড়েছেন। নিজের ক্লাব পিএসজি আর আর্জেন্টিনার হয়ে সব মিলিয়ে খেলেতে পেরেছেন মাত্র ৩০ ম্যাচ। 

    বিশ্বকাপ বাছাই আর প্রীতি ম্যাচ মিলিয়ে সাতবার জাতীয় দলের জার্সি চড়েছে পাপু গোমেজের গায়ে। বাকি সময়টা তার কেটেছে সাইডবেঞ্চ কিংবা স্কোয়াডের বাইরে থেকেই। তবে সেভিয়ার হয়ে তার রেকর্ড খুব একটা খারাপ নয়। 

    গত মৌসুমে টটেনহাম আর ভিয়ারিয়াল মিলিয়ে ৪১ ম্যাচে ২ গোল আর ৩ অ্যাসিস্ট জিওভানি লো সেলসোর। বিশ্বকাপ কোয়ালিফায়ারে শেষদিকে দুই ম্যাচ খেলতে পারেননি নিষেধাজ্ঞায় পড়ে। তবে একাধিক পজিশনে খেলতে পারার সুবাদে কোচের পছন্দের তালিকায় থাকেন তিনিও। 

     

    গত বছর বেনফিকার হয়ে নিকোলাস ওটামেন্ডি খেলেছেন ৪৩ ম্যাচ, এর মধ্যে ক্লিন শিট রাখতে পেরেছেন ২৮ ম্যাচ ম্যাচে। আর জাতীয় দলের ১১  মাচে তার ক্লিন শিট ছিল ৭টিতেই। আরেক সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার ক্রিস্টিয়ান রোমেরোর গত মৌসুমের বেশিরভাগ কেটেছে মাঠের বাইরে, নেপথ্যে হ্যামস্ট্রিং ইনজুরি। স্পার্সের হয়ে ৩০ ম্যাচে ৮ ক্লিনশিট রাখা এই ডিফেন্ডার নিজ দেশের হয়ে ৬ ম্যাচের ৫টিতেই কোনো গোল হজম করেননি। 

     

    রাইট ব্যাক গঞ্জালো মন্টিয়েল গত মৌসুমে জাতীয় দল আর ক্লাব মিলিয়ে খেলেছেন মোট ৩১ ম্যাচ। এই ৩১ ম্যাচে ক্লিনশিট ১৪টি। নাহুয়েল মোলিনার মৌসুমটা অবশ্য ভালোই কেটেছে। ক্লাব, জাতীয় দল মিলিয়ে মোট ৪৮ ম্যাচে ৮ গোল আর ৭ অ্যাসিস্ট। সব মিলিয়ে ক্লিনশিট রেখেছেন ২০ ম্যাচে। 

     

    আয়াক্সের হয়ে গেল মৌসুমটা ভালোই কাটিয়েছেন নিকোলাস তাগলিয়াফিকো। ২৯ ম্যাচে ৩টি করে গোল আর অ্যাসিস্ট তার নামে। ক্লিনশিট রেখেছিলেন ১৮ ম্যাচে। আর আকাশি-সাদা জার্সি গায়ে তার খেলা ৬ ম্যাচের চারটিতেই কোনো গোল হজম করেনি আর্জেন্টিনা। 

    মেসি-ডি মারিয়াদের সাথে আর্জেন্টিনার কোপা আমেরিকা জেতার অন্যতম কারিগর এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। কোপা জয়ী এই আর্জেন্টাইন  নায়কের প্রিমিয়ার লিগে ৩৭ ম্যাচে ১১ ক্লিনশিট। জাতীয় দলের ৯ ম্যাচে ৬ ক্লিনশিট। সব মিলিয়ে ৪৭২০ মিনিটে গোল হজম করেছেন ৫৪টি