• ফিফা বিশ্বকাপ ২০২২
  • " />

     

    এনার ভ্যালেন্সিয়ায় ম্লান কাতারের উৎসবমুখর উদ্বোধনী দিন

    এনার ভ্যালেন্সিয়ায় ম্লান কাতারের উৎসবমুখর উদ্বোধনী দিন    

    কাতার ০:২ ইকুয়েডর 

     

    কাতারের জন্য আজকের দিনটি নিঃসন্দেহে একটি স্মরণীয় দিন। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জন করা, আয়তনে সিলেট বিভাগের চেয়েও ছোট এই দেশটির ইতিহাসে হয়তো এরচেয়ে গর্বের দিন আর আসেনি। তবে তাদের বিশ্বকাপ আয়োজনের গর্ব যেমন প্লাবিত হয়েছে নানা বিতর্কে, তেমনি সেই বিশ্বকাপের উদ্বোধনী দিনটিও প্লাবিত হয়েছে এক পরাজয়ে। বিশ্বকাপের ইতিহাসে প্রথম আয়োজন দেশ হিসেবে উদ্বোধনী দিনের পরাজয়ের মুখ দেখেছে কাতার।

    আর তাদের দুর্গতিতে বিশ্বকাপের উদ্বোধনী দিন মাতিয়েছে ল্যাটিন আমেরিকার দল ইকুয়েডর। ২-০ গোলের জয়ের পথে তাদের অধিনায়ক এবং মূল তারকা এনার ভ্যালেন্সিয়া একাই করেছেন গোল দুটো। 

    ২০১০ সালে যখন কাতারে বিশ্বকাপ আয়োজনের ঘোষণা দেওয়া হয়, তখন ফিফা র‍্যাংকিংয়ে কাতারের অবস্থান ছিল ১১৩তম। এরপর দীর্ঘস্থায়ী পরিকল্পনা নিয়ে দল গুছিয়েছে কাতার। সেই পরিকল্পনার একটি অংশ ছিল স্বল্পোন্নত দেশগুলো থেকে ফুটবল প্রতিভা স্কাউট করা। কাতারের আজকের একাদশের অর্ধেক খেলোয়াড়ের জন্মই কাতারের বাইরে। ক্লাব পর্যায়ে এই দলের সিংহভাগ ফুটবলারই খেলে থাকেন আল সাদে, যে ক্লাবের কোচ ছিলে জাভি হার্নান্দেজ। কিন্তু বিশ্বের সবচেয়ে বড় ফুটবল আসরের জন্য সেসব প্রস্তুতিও যথেষ্ট ছিল না। 

    আল বায়াত স্টেডিয়ামে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান যথেষ্ট জাঁকজমকপূর্ণ হলেও খেলা মাঠে গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গেই উবে যায় কাতারের সব শৌর্য। ম্যাচের তৃতীয় মিনিটেই গোল খেয়ে বসে স্বাগতিকরা। তবে ফেনেরবাচ তারকা এনার ভ্যালেন্সিয়ার সেই গোল বাতিল হয় ভিএআরের পরামর্শে। তবে ভ্যালেন্সিয়াকে বেশিক্ষণ আটকে রাখতে পারেনি তারা। দশ মিনিটের মাথায় গোলরক্ষককে কাটিয়েই গোল দিতে বসেছিলেন ভ্যালেন্সিয়া। কিন্তু কাতার কিপার সাদ আল শিব পিছন থেকে তাকে ফাউল করে বসলে তা করতে ব্যর্থ হন ভ্যালেন্সিয়া। তবে পেনাল্টি থেকে ঠিকই বল জালে জড়ান এই ৩৩ বছর বয়সী স্ট্রাইকার। 

    ৩১ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ভ্যালেন্সিয়া। এবার ডিবক্সের ভিতর তাকে মার্ক করতেই ব্যর্থ হয় কাতারের রক্ষণ। রাইটব্যাক আর্টন প্রেসিয়াদোর ক্রস তাই সরাসরি গিয়ে পড়ে তার মাথায়। আর দুর্দান্ত এক হেডে আবার আল শিবকে পরাস্ত করেন ভ্যালেন্সিয়া। 

    ম্যাচের প্রথম ৪০ মিনিটে বলতে গেলে কোনো আক্রমণই করতে পারেনি স্বাগতিকরা। উল্টো বার বার বল হারিয়ে প্রতিপক্ষকে করে দিয়েছে আক্রমণের সুযোগ। তবে প্রথমার্ধের শেষ কয়েক মিনিট এবং দ্বিতীয়ার্ধে শুরুতে বলের দখল রেখে ম্যাচে কিছুটা নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয় কাতার। তবে তাদের টিকি-টাকাসুলভ ফুটবল ইকুয়েডরের রক্ষণে কখনোই ত্রাস সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়নি। যে কারণে ২-০ ব্যবধানেই শেষ হয় ম্যাচ। 

    নেদারল্যান্ডস-সেনেগালের গ্রুপে এই উদ্বোধনী জয় ইকুয়েডরকে আত্মবিশ্বাস দিবে। এর আগে মাত্র একবার গ্রুপ পর্ব পেরোনো দক্ষিণ আমেরিকার দেশটির নকআউট পর্ব নিশ্চিত করতে হলে বাকি দুই ম্যাচের একটিতে অন্তত জিততে হবে। ওদিকে কাতারের জন্য সামনের রাস্তা আরও হতাশাজনক। গ্রুপের অপেক্ষাকৃত দুর্বল দলটির বিপক্ষেই হেরে বসা আয়োজক দেশটির জন্য এখন অপেক্ষা করছে সেনেগাল ও নেদারল্যান্ডস।