• ফিফা বিশ্বকাপ ২০২২
  • " />

     

    জিরুর রেকর্ড গড়ার দিনে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের দাপটে ধরাশায়ী সকারুস

    জিরুর রেকর্ড গড়ার দিনে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের দাপটে ধরাশায়ী সকারুস    

    ফ্রান্স ৪:১ অস্ট্রেলিয়া


     

    কান্তে, পগবাদের অভাব কী ফ্রান্স পূরণ করতে পারবে নাকি সেটা নিয়ে ছিল শঙ্কা, বেনজেমার বিশ্বকাপ শেষ হয়ে যাওয়ার পর প্রশ্ন উঠেছিল ফরওয়ার্ড লাইনআপের দক্ষতা নিয়েও। সেই সাথে ইতিহাস তো ছিলই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে। সব সমীকরণ, ইতিহাস, শঙ্কাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে গুড়িয়ে দিয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা শুরু করল দাপট দেখিয়েই। আদ্রিয়েন রাবিয়ো বিশ্বকাপ অভিষেকেই পেলেন গোল, আর এমবাপের খেলায় তো দর্শকরা ভাবতেই পারে গত বিশ্বকাপ আর এই বিশ্বকাপের মাঝে যেন কোনও সময়ই পেরোয়নি। সেই পুরনো, বিধ্বংসী, কিন্তু আরও পরিণত এমবাপের গোল সত্ত্বেও পাদ প্রদীপের আলোয় এদিন শুধুই অলিভিয়ের জিরু। থিয়েরি অঁরির রেকর্ডে ভাগ বসিয়ে ৫১ গোল নিয়ে তিনি আজ হয়েছেন যৌথভাবে ফ্রান্সের ইতিহাসের সর্বোচ্চ গোলদাতা।

    অথচ সেই রেকর্ড গড়ার উপলক্ষ আসবে কি না সেটা নিয়েই ছিল শঙ্কা। গত বিশ্বকাপে এই অস্ট্রেলিয়াকে ২-১ গোলে ফ্রেঞ্চরা হারালেও এদিন শুরুতেই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের ভড়কে দিয়েছিল সকারুস। বাঁ প্রান্ত দিয়ে লুকাস হার্নান্দেজকে দারুণ কলাকৌশলে ভূপাত করে লেকি নিচু এক ক্রসে খুঁজে নেন ডি বক্সে ওঁত পেতে থাকা গুডউইনকে। গুডউইনের ঠাণ্ডা মাথার ফিনিশে ৯ মিনিটেই পিছিয়ে পড়া ফ্রেঞ্চরা অবশ্য নিজেদের গুছিয়ে নেয় কিছুক্ষণের মধ্যেই। ২৭ মিনিটের মাথায় থিও হার্নান্দেজের বাড়িয়ে দেওয়া ক্রসে মাথা ছুঁইয়ে ফ্রান্সের গোলের খাতা খোলেন রাবিও। তার ঠিক পাঁচ মিনিটের মাথায় দারুণ প্রেসিংয়ে বল কেড়ে নিয়ে এমবাপের সাথে বল আদান প্রদান করে সেই রাবিও খুঁজে নেন জিরুকে। নিজের সাথে থাকা ডিফেন্ডারকে ছিটকে ফেলে বল জালে জড়াতেও ভুল করেননি তিনি।  গত বিশ্বকাপে কোনও গোল না পেলেও বেনজেমার ছিটকে পড়ায় একাদশে সুযোগ পাওয়ার পূর্ণ সদ্ব্যবহার করে বিশ্বকাপের গোলের খাতা তিনি খুললেন এবার প্রথম ম্যাচেই।

    দ্বিতীয়ার্ধে দুই প্রান্ত থেকে এমবাপে-ডেম্বেলের সাঁড়াশি আক্রমণে হাঁসফাঁস করতে থাকা সকারুস ডিফেন্ডাররা। ৬৮ মিনিটের মাথায় তার পরিক্রমাতেই এমবাপে পেয়ে যান গোলের দেখা। তার তিন মিনিটের মাথায় বাঁ প্রান্তে ডিফেন্ডারদের সাথে এক্কাদোক্কা খেলে জায়গা বানিয়েই দারুণ এক বল বাড়িয়ে দেন এমবাপে। বাড়িয়ে দেওয়া সেই বল থেকে ইতোমধ্যেই ফ্রান্সের ইতিহাসের সবচেয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ গোলদাতা হওয়ার রেকর্ড গড়ার দিনে ব্রেসটাও পূরণ করলেন, অঁরির সিংহাসনেও জেঁকে বসলেন জিরু। বাকি সময়টুকুতে ফ্রান্স ম্যাচে ফেরার কোনও সুযোগই দেয়নি অস্ট্রেলিয়াকে। শুরুটা নড়বড়ে হলেও কোনাটে-উপামেকানো জুটি ও পরে কুন্ডে রেখেছেন নির্ভরতার সাক্ষ্যপ্রমাণ।  ২০০৬ সালে ব্রাজিলের ১-০ গোলের জয়ের পর এই প্রথম বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা নিজেদের প্রথম ম্যাচে জয় তো পেলই, সেটাও পেল ব্রাজিলের চেয়ে বড় ব্যবধানে, দাপটের সাথে।