• ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    ম্যানচেস্টার আজ লাল

    ম্যানচেস্টার আজ লাল    

    ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ২:১ ম্যানচেস্টার সিটি 


    ম্যাচের আগে পেপ গার্দিওলা বলেছিলেন, ডার্বির জন্য দুর্ধর্ষ কিছু ট্যাকটিসের চিন্তা করে রেখেছেন তিনি। তার সেই গোপন গেমপ্ল্যানকে বরবাদ করে দিয়ে ওল্ড ট্রাফোর্ডে দুর্দান্ত এক জয় তুলে নিয়েছে এরিক টেন হাগের শীর্ষরা। ব্রুনো ফার্নান্দেজ ও মার্কাস রাশফোর্ডের গোলে টানা নবম জয় পেয়েছে রেড ডেভিলরা। ভয়ানক ছন্দে থাকা রাশফোর্ড নিজে পেয়েছেন টানা সপ্তম ম্যাচে গোল।  

    ডার্বির জন্য গার্দিওলার ট্যাকটিস আসলে কী ছিল তা বুঝাই যায়নি প্রথমার্ধে। পুরো ৪৫ মিনিটে ডেভিড ডি হেয়া বরাবর কোনো শটই নিতে পারেনি সিটি। হালান্ড-ফোডেন-মাহরেজ বাকি দল থেকে প্রায় বিচ্ছিন্নই হয়ে যায়। যে কারণে সিংহভাগ সময় বলের দখল নিজেদের পায়ে রাখলেও ভুল পাসের মহড়া সাজানো সিটিজেনরা ইউনাইটেডের রক্ষণে কখনোই আতঙ্ক সৃষ্টি করতে পারেনি। অপরদিকে প্রেসিং ও কাউন্টার-অ্যাটাক নির্ভর ফুটবল খেলা ইউনাইটেড বেশ কয়েকবার সিটির রক্ষণে ত্রাস তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। 

    বিশেষ করে ৩৪ মিনিটে বক্স ছেড়ে ছুটে আসা এডারসনকে সহজেই ফাঁকি দিয়ে বক্সে ঢুকে পড়েছিলেন রাশফোর্ড। কিন্তু বক্সে সময় নিতে শট নিতে গিয়ে সুযোগ হাতছাড়া করেন রাশফোর্ড। ততক্ষণে গোলের সামনে পৌঁছে যাওয়া আকানজি ব্লক করে সেই শট। তিন মিনিট পর আবার বল নিয়ে বক্সে ঢুকেন রাশফোর্ড। এবার এডারসনকে একা পেয়েও বল জালে জড়াতে পারেননি এই স্ট্রাইকার।  

    দ্বিতীয়ার্ধে অবশ্য খেলার চেহারা বদলাতে সক্ষম হয় সিটি। মিডফিল্ডকে উপরে তুলে এই অর্ধের প্রথম মিনিট থেকেই আগ্রাসী ফুটবল খেলা শুরু করে গার্দিওলার দল। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেও সুবিধা করতে না পারা ফোডেনকেও দ্রুতই তুলে নেন গার্দিওলা। তার জায়গায় নামান জ্যাক গ্রিলিসকে। সিটির নাম্বার টেন নেমেই খেলায় সরাসরি প্রভাব ফেলতে শুরু করেন। এবং তার বদৌলতেই ম্যাচের ডেডলক ভাঙতে সমর্থ হয় সিটি। 

    ৬০ মিনিটে রাইট উইং থেকে বক্সের ডানপাশে থাকা ডি ব্রুইনাকে পাস দেন মাহরেজ। নিজের মার্কারকে পরাজিত করে বাইলাইনের কাছে এসে মাঝখানে ক্রস করেন ডি ব্রুইনা। তার ক্রসে হেড করে দলকে এগিয়ে নেন গ্রিলিস। এই গোলের পর ম্যাচের পুরো নিয়ন্ত্রণ চলে যায় সিটির কাছে। কিন্তু আক্রমণভাগের ধারের অভাবে দ্বিতীয় গোলের দেখা আর পায়নি তারা। বিশেষ করে ৯০ মিনিট খেলেও হালান্ড যেন একরকম অনুপস্থিতই ছিল এ ম্যাচে। 

    এদিকে ৭২ মিনিটে আলেহান্দ্রো গারাঞ্চোকে বদলি হিসেবে নামিয়ে ম্যাচের চেহারা আবার বদলে দেন এরিক টেন হাগ। আক্রমণভাগে নতুন প্রাণ পাওয়া ইউনাইটেড ছয় মিনিটের মধ্যে বিতর্কিত একটি গোল দিয়ে ম্যাচে সমতা ফেরায়। মধ্যমাঠ থেকে ক্যাসেমিরোর বাড়ানো থ্রু বলকে তাড়া করে বক্সের সামনে পর্যন্ত চলে যান রাশফোর্ড। কিন্তু তিনি বলে টাচ করার আগেই বল নিয়ে গোল করে বসেন ব্রুনো ফার্নান্দেজ। লাইন্সম্যান প্রথমে অফসাইড দিলেও ভিএআরের পরামর্শে গোল পায় ইউনাইটেড। 

    এভাবে গোল খেয়ে বিক্ষুব্ধ সিটি কিছু বুঝে ওঠার আগেই খেয়ে বসে আরেকটি গোল। এবার বক্সে ঢুকে গারাঞ্চোর করা কাটব্যাকে পা ছুঁইয়ে এডারসনকে নাটমেগ করেন রাশফোর্ড। উল্লাসে ফেটে পড়ে পুরো ওল্ড ট্রাফোর্ড। ম্যাচের বাকি সময়ে সিটি গোল পরিশোধ করার চেষ্টা করলেও ডি হেয়া বরাবর কোনো শটও নিতে সমর্থ হয় না হালান্ডরা। 

    ২-১ গোলে শেষ হওয়া এই ম্যাচ নিঃসন্দেহে এরিক টেন হাগ যুগের সবচেয়ে বড় জয়। ২০১৯ সালের পর এই প্রথম ঘরের মাঠে নগর প্রতিদ্বন্দ্বীদের হারিয়েছে ইউনাইটেড। আর এই ম্যাচের মধ্য দিয়ে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টানা নবম জয় পেয়েছে রাশফোর্ডরা, স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসনের অবসরের পর যা এই প্রথম। এই জয়ে সিটির দুই পয়েন্টের ব্যবধানে চলে এসেছে ইউনাইটেড।