• বিপিএল
  • " />

     

    শানাকার 'শাইনিং' পারফরম্যান্সে খুলনার তিনে তিন; সিলেটে স্পিন-মন্ত্রে কুমিল্লার জয়

    শানাকার 'শাইনিং' পারফরম্যান্সে খুলনার তিনে তিন; সিলেটে স্পিন-মন্ত্রে কুমিল্লার জয়    

    বিপিএল ২০২৪
    ১ম ম্যাচ (টস - রংপুর/ফিল্ডিং)
    খুলনা টাইগার্স - ১৬০/৬, ২০ ওভার (নাওয়াজ ৫৫, শানাকা ৪০, লুইস ৩৭, হাসান ৩/২৯, মাহেদী ২/২০, রিপন ১/৪১)
    রংপুর রাইডার্স - ১৩২, ১৮.৪ ওভার (নবী ৫০, শামীম ৩০, মাহেদী ১২, শানাকা ৪/১৬, নাওয়াজ ২/১৩, ওয়াসিম ২/৩১)
    ফলাফল - খুলনা ২৮ রানে জয়ী

    ২য় ম্যাচ (টস - সিলেট/ফিল্ডিং)
    কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস  - ১৩০/৮, ২০ ওভার (কায়েস ৩০, জাকের ২৯, খুশদিল ২১, সামিত ৩/১৬, এনগারাভা ২/২৫, কাটিং ১/১০)
    সিলেট স্ট্রাইকার্স- ৭৮, ১৬.২ ওভার (জাকির ৪১, বার্ল ১৪, আলিস ৪/১৭, চেইজ ২/১৭, খুশদিল ১/৪)  
    ফলাফল - কুমিল্লা ৫২ রানে জয়ী


     

     

    পাকিস্তানিদের ভিড়ে তারকা নাওয়াজ, শানাকা চেনালেন নিজের জাত

    খুলনা, রংপুর দুই দল মিলিয়ে ম্যাচ জেতানোর সামর্থ্য রাখে এমন পাকিস্তানিদের কমতি ছিল না। তাদের মাঝেই তারকা মোহাম্মদ নাওয়াজ। ব্যাট হাতে ম্যাচের ও দিনের প্রথম ফিফটির পর বল হাতেও দারুণ এক স্পেলে নিয়েছেন দুই উইকেট। সাকিব, নবী, মাহেদীদের মত একগাদা অলরাউন্ডারের ভীড়ে সব্যসাচী বনে গেলেন এই বাঁহাতি ব্যাটার, বাঁহাতি অফ স্পিনার। তবে অলরাউন্ডারদের তালিকায় নাম থাকলেও সচরাচর তেমন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স তার কাছ থেকে দেখা না গেলেও আজকের প্রথম ম্যাচে ম্যাচ সেরা দাসুন শানাকা, ব্যাটে-বলে সমান ঔজ্জ্বল্য ছড়িয়ে।

    খুলনাকে ২৫ বলে ৩৭ রানে আবারও ভালো শুরু এদিন এনে দিয়েছিলেন লুইস। তবে সেখান থেকে পথ হারিয়ে বসতে পারত তারা। লুইস যখন ফিরলেন তখন ৯.৪ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে বসা খুলনার রান মোটে ৬৪। সেখান থেকেই শানাকা-নাওয়াজ গড়লেন দারুণ এক জুটি। ৭৭ রানের জুটি গড়ে রংপুরের বিপক্ষে মনস্তাত্ত্বিকভাবে সেখানেই যেন এগিয়ে গিয়েছিল তারা। শুরু থেকেই রংপুরের ধীরগতির ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি নিয়মিত উইকেট হারানো তাই বলে। শুরুতে রনির উইকেট পাওয়ার পর মাঝে মাহেদী, সাকিবের উইকেট নিয়ে রংপুরের ম্যাচে ফেরার রাস্তাগুলো শানাকাই বন্ধ করেন। নবী একা ফিফটি করে লড়লেও তাই সঙ্গীর অভাবে কাজ সারতে পারেননি।

     

    কুমিল্লার 'স্পিন টু উইন' মন্ত্র

    প্রথম ম্যাচ হারার পর কুমিল্লা জানিয়েছিল তারা ফিরবেই। হচ্ছেও তাই। সিলেটকে সিলেটেই হারিয়ে তারা পেল টানা দ্বিতীয় জয়। মন্থর উইকেটে তাদের জয়ের মন্ত্র আজ ছিল স্পিন। প্রথম ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে তাদের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন অধিনায়ক ইমরুল কায়েস। তার ৩০ রানটাই যেন পথ বাতলে দিয়েছে তার জয়ের জন্য। সামিত পাটেলকে সামলাতে যেভাবে হিমশিম খেয়েছে কুমিল্লা সেখান থেকেই লক্ষ্য ডিফেন্ড করতে কোন পথে হাঁটতে হবে তা নিয়ে হয়ত দুবার ভাবতে হয়নি কায়েসকে।

    অফ স্পিনার আলিস আল ইসলামকে দিয়ে শুরু থেকেই সাফল্য পেয়েছে কুমিল্লা। এদিন তিনি যেন দুষ্পাঠ্য কোনও অধ্যায়। দারুণ এক স্পেলে ৪ উইকেট নিয়েছেন; শেষ উইকেট নিয়ে যখন প্রতিপক্ষ অধিনায়ক মাশরাফিকে ফেরালেন তখন সিলেটের স্কোরবোর্ড বলছে ৭.৪ ওভারে ২৮-৬! ম্যাচ এক অর্থে ওখানেই শেষ। তাও শেষ পর্যন্ত একাই লড়ে গিয়েছেন জাকির; ৪১ রান করে। ব্যবধানটা কমানো ছাড়া অবশ্য তিনি আর কিছুই করতে পারেননি। আলিসের পর চেইজ, তানভিররা ছড়ি ঘুরিয়ে শেষমেশ বড় জয় এনে দিয়েছেন কুমিল্লাকে।

     

    সিলেটের প্রথম দিন - বদখৎ ক্রিকেটের বিজ্ঞাপন

    প্রথম ম্যাচে সেই অর্থে উত্তেজনা ছিল না। তবে প্রথম ইনিংসে স্পোর্টিং উইকেটের ছোঁয়া মিলেছিল। দিন যত গড়িয়েছে, তা ধীরে ধীরে ম্রিয়মাণ। আর দ্বিতীয় ম্যাচে তো দেখা মেলেনি তার ছিটেফোঁটাও। বিপিএল ও বাংলাদেশের ক্রিকেট গত কয়েক বছরে যেই দুর্নাম কুড়িয়েছে, রাতের ম্যাচটা যেন তার সবকিছুই লালন করেই মাঠে গড়িয়েছে। প্রথম ইনিংসে ব্যাটিং করতে হলে ১৩০-এর আশেপাশে রান তুলুন; এরপর স্পিনের মন্ত্রে প্রতিপক্ষকে গুটিয়ে দিন - কুমিল্লাকে আজ সেই মুখস্ত বাংলাদেশি মন্ত্রই জপতে দেখা গেল। ম্যাচে ছিল না উত্তেজনার লেশমাত্র। দৃষ্টিনন্দন ব্যাটিং দেখার সুযোগ হয়নি ম্যাচের কোনও পর্যায়েই। আর স্পিনাররা বাইশ গজে বল ফেললেই যেন ব্যাটারদের ছেড়ে দে মা, কেঁদে বাঁচি গান ধরতে হচ্ছে। স্পোর্টিং উইকেটের জন্য সিলেট সুনাম কুড়ালেও প্রথম দিনটায় এই উইকেটে যেন ভর করেছিল মিরপুরের ভূত।