• রিও অলিম্পিক ২০১৬
  • " />

     

    কিক অফের আগে: প্রতিশোধ নিতে পারবেন নেইমাররা?

    কিক অফের আগে: প্রতিশোধ নিতে পারবেন নেইমাররা?    

    মনে পড়ে সেই ছোট্ট ছেলেটির কথা? যে কোমল পানীয়ের গ্লাসে মুখ ঢেকে অঝোরে কাঁদছিল। আজও হয়তো সে নতুন আশা বুকে বেঁধে মায়ের সাথে স্টেডিয়ামে আসবে। মনে পড়ে সেই গোঁফওয়ালা বুড়ো লোকটির কথা, কান্নাভেজা চোখে যে শূন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল রেপ্লিকা ট্রফি হাতে নিয়ে? প্রয়াত এই বৃদ্ধ হয়তো স্বর্গ থেকে তাকিয়ে থাকবেন মারাকানার দিকে। গত বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে জার্মানির কাছে ৭-১ গোলে পরাজয়ের এই দৃশ্যগুলো কি নেইমারের চোখে ভেসে উঠবে আজ?  আজ কি ঘরের মাঠে অলিম্পিকে সোনা জিতে প্রতিশোধ  নিতে পারবে ব্রাজিল?

     

     

    ইনজুরির জন্য ডাগআউটে বসে সেদিন কিছুই করার ছিলনা নেইমারের। কিন্তু আজ তাঁর নেতৃত্বেই অলিম্পিকের ফাইনালে খেলবে ব্রাজিল, প্রতিপক্ষ সেই জার্মানি। বিশ্বকাপ এবং অলিম্পিক সম্পূর্ণ আলাদা দুটি ইভেন্ট হলেও ম্যাচের আগে বারবার সেই ৭-১ এর দুঃস্মৃতি ফিরে ফিরে আসছে ব্রাজিলিয়ানদের চিন্তায়।

    ‘প্রতিশোধ’ শব্দটা ব্যবহার করতে নারাজ ব্রাজিল কোচ রোজারিও মিকেল, “বিশ্বকাপ আর অলিম্পিক ভিন্ন দুটি আসর। নেইমার সেই ম্যাচে খেলেইনি, তাহলে প্রতিশোধের প্রশ্ন ওঠার কথা না।”

    অলিম্পিকে মূলত অনূর্ধ্ব-২৩ দলকেই খেলতে দেখা যায়। তিনজন খেলোয়াড় শুধুমাত্র ২৩ এর বেশি বয়সী হতে পারে। বিশ্বকাপের দলের সঙ্গে আজ তাই আকাশ পাতাল ব্যবধান। দুই বছর আগের ওই দলের শুধু দুজনই আছেন আজ। নেইমার অবশ্য ওই ম্যাচ চোটের জন্য খেলতে পারেননি। জার্মানির ম্যাথিয়াস জিন্টারও সেবার বেঞ্চে বসে ছিলেন।  

    ১৯৫০ সালে উরুগুয়ের বিপক্ষে সেই ট্রাজেডির কথা এখনো ভুলতে পারেননি ব্রাজিল। মারাকানাজোর ওই স্মৃতি অনেক দিনই তাড়িয়ে বেড়াবে। সাথে যোগ হয়েছে দুইদিন আগে মেয়েদের সেমিফাইনালে ব্রাজিল দলের ট্রাইবেকারে হার। সব মিলিয়ে দর্শকরা স্বস্তিতে নেই। আবারো যদি ওরকম কিছু ঘটে যায়? পরপর এতগুলো ধাক্কা কি সামলাতে পারবে মারাকানা?

    তবে ব্রাজিলের গত দুটি ম্যাচ দেখলে দর্শকদের একটু আশার আলো দেখতে পাবার কথা। ডেনমার্ক, হন্ডুরাসকে উড়িয়ে দিয়ে ফাইনালে উঠেছে নেইমাররা। দলের রক্ষণভাগ-আক্রমণভাগের খেলোয়াড়রা আছেন দারুণ ফর্মে, মাঠে নেইমারের ক্যারিশম্যাটিক উপস্থিতি যোগ করেছে নতুন মাত্রা।

    জার্মান দলকে শক্ত প্রতিপক্ষই মানছেন ব্রাজিল কোচ মিকেল, “জার্মানরা অনেক শক্তিশালী দল। পুরো টুর্নামেন্ট তাঁরা ভাল খেলেই ফাইনালে উঠেছে। আমরা নিজেদের সেরাটা দেব, এরপর ফলাফল যাই হোক দেখা যাবে।” জার্মান কোচ অবশ্য এগিয়ে রাখছেন ব্রাজিলকেই, “তাঁরা স্বাগতিক হিসাবে সুবিধা পাবে। আমরাও মারাকানাতে খেলতে পেরে আনন্দিত। ভাল একটা ম্যাচ আশা  করছি।”

    নেইমার কি পারবেন মারাকানার সেই কান্না ঘুচিয়ে সবার মুখে হাসি ফোটাতে? গোঁঁফওয়ালা সেই বুড়ো দাদু অন্যলোক থেকে সেটির অপেক্ষাতেই!