সেই সেভিয়াই থামালো রিয়ালকে
নির্ধারিত ৯০ মিনিট শেষে অতিরিক্ত সময়ের খেলা চলছে। খেলায় তখন ১-১ গোলের সমতা। চতুর্থ রেফারির দেওয়া অতিরিক্ত তিন মিনিটের প্রথম মিনিটে এস্কুদেরোর পাস থেকে কিছুটা ফাঁকায় বল পেলেন ইয়োভেটিচ। পাস দেওয়ার মত সঙ্গী না পেয়ে প্রায় ২৫ গজ দূর থেকে নিজেই শট নিলেন মন্টেনেগ্রোর এই স্ট্রাইকার। রিয়ালের কিপার কেইলর নাভাসের হাতে লেগে বল প্রবেশ করলো জালে। কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে ঠায় দাঁড়িয়ে রইলেন রিয়ালের খেলোয়াড়েরা। হারতেই ভুলে যাওয়া রিয়াল পিছিয়ে পড়লো ম্যাচের মিনিট দুয়েক বাকি থাকতে। এবার অবশ্য আর অন্তিম মূহুর্তের গোলে পার পাওয়া হয়নি রিয়ালের। রোনালদোর পেনাল্টির পর রামোসের আত্মঘাতী গোল এবং একেবারে শেষদিকে ইয়োভেটিচের ওই গোলে ২-১ গোলে হারলো জিদানের রিয়াল মাদ্রিদ। সেই সাথে ৪০-এই থেমে গেল রিয়ালের জয়রথ।
রামোসের সাথে সেভিয়া আল্ট্রাসদের এমনিতেই দা-কুমড়ো সম্পর্ক। তার ওপর গত সপ্তাহের কোপা দেল রের ম্যাচের পর দু পক্ষের মধ্যকার সংঘাতময় মনোভাবের দরুণ আজকের ম্যাচটি নিয়ে আলাদা এক উত্তাপ ছড়াচ্ছিল সেভিলে। সেই উত্তাপটা অবশ্য প্রথমার্ধে টের পাওয়া যায়নি একেবারেই। রোনালদো, নাসরিদের দুই-একটি বিচ্ছিন্ন আক্রমণ ছাড়া বলার মত সুযোগই তৈরি করতে পারেনি কোনো দল। জিদানের হঠাৎই ৪-৩-৩ থেকে সরে এসে ৩-৫-২ ফরমেশনে খেলানোর সিদ্ধান্ত বেশ অবাক করার মতোই।
কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে ক্রমান্বয়ে জেগে উঠতে থাকে দুই দলের আক্রমণভাগ। ৬৪ মিনিটে কারভাহালকে বক্সে ফেলে দিয়ে রিয়ালকে পেনাল্টি উপহার দেন সার্জিও রিকো। ১২ গজ থেকে বল সেভিয়ার জালে পাঠাতে ভুল করেননি রোনালদো। এই পেনাল্টির সুবাদে লা লিগার ইতিহাসে হুগো সানচেজের(৫৬) সাথে যৌথভাবে সর্বোচ্চ পেনাল্টি থেকে গোলের রেকর্ড এখন রোনালদোর। গোল খেয়ে আশাহত না হয়ে দ্বিগুণ উদ্যমে আক্রমণ করতে থাকে সেভিয়া। ফলাফলটাও পেয়ে যায় হাতেনাতেই। ৮৪ মিনিটে সারাবিয়ার ফ্রিকিক ক্লিয়ার করতে গিয়ে বল নিজ জালে ঠেলে দেন সার্জিও রামোস। এক দশকের অধিক সময় ধরে লা লিগায় খেললেও এটিই ছিল লিগে রামোসের প্রথম আত্মঘাতী গোল। এই মৌসুমে একাধিকবার এবং রিয়ালের শেষ দুই চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের ত্রাণকর্তা রামোস আবারো ম্যাচের শেষদিকে গোল করলেন, কিন্তু এবার তা আসলো রিয়ালের বিপক্ষে! ৯১ মিনিটে আসে সেভিয়ার মাহেন্দ্রক্ষণ। এস্কুদেরোর পাস থেকে দূরপাল্লার এক শটে রিয়ালকে হতবাক করে দেন স্টেফান ইয়োভেটিচ। মাত্র তিন দিন আগেই সেভিয়ার হয়ে অভিষেকে এই রিয়ালের বিপক্ষে লক্ষ্যভেদ করেছিলেন তিনি। সেবার সেভিয়াকে ম্যাচ জেতাতে না পারলেও এবার ঠিকই ‘প্রতিশোধ’টা নিয়ে নিলেন ইন্টার থেকে ধারে আসা এই স্ট্রাইকার।
আজকের হারে জয়রথটা থামলেও শীর্ষস্থান এখনো রিয়ালেরই। ১৭ ম্যাচে ৪০ পয়েন্ট শীর্ষে আছেন জিদানের শিষ্যরা। বার্সেলোনা নয়, ১৮ ম্যাচে ৩৯ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে আছে সাম্পাওলির সেভিয়া। ৩৮ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে এনরিকের বার্সা। ৩৪ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ স্থানে আছে সিমিওনের অ্যাটলেটিকো।