• অস্ট্রেলিয়ান ওপেন
  • " />

     

    সব কৃতিত্ব স্ত্রী মিরকাকেই দিলেন ফেদেরার

    সব কৃতিত্ব স্ত্রী মিরকাকেই দিলেন ফেদেরার    

    রজার ফেদেরারের প্রায় সব ম্যাচে দর্শক সারিতে তিনি থাকেন। কোর্টে খেলতে নামা ফেদেরারের চেয়েও তাঁর দুশ্চিন্তা কয়েকগুণ বেশি। কখনো উত্তেজনায় নখ কামড়াচ্ছেন, কখনো স্নায়ুচাপে দুই হাত দিয়ে ঢেকে রেখেছেন মুখ। আবার পয়েন্ট পেলে চিৎকার করে ফেটে পড়েছেন উল্লাসের। বরাবরের মতো এবারের অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের ফাইনালেও মিরোস্লাভা মিরকা উপস্থিত ছিলেন রড লেভার অ্যারেনায়। নিজের ১৮তম গ্র্যান্ড স্ল্যাম জেতার পর ফেদেরার তাঁর ক্যারিয়ারের সব অর্জনের কৃতিত্বটা মিরকাকেই দিয়েছেন।

     

    ২০০০ সালের সিডনি অলিম্পিকে প্রথম দেখা। ‘লাজুক’ ফেদেরারের সাথে সেখানেই বন্ধুত্বের সূচনা। দুজন একসাথে খেলাও শুরু করেছিলেন। ২০০২ সালের হপম্যান কাপে দ্বৈত বিভাগে অংশগ্রহণ করেন ফেদেরার-মিরকা জুটি। দুর্ভাগ্যক্রমে সেই বছরই পায়ের ইনজুরিতে পড়েন মিরকা। শেষ পর্যন্ত টেনিসকে বিদায় বলতেও বাধ্য হন। 

     

     

    টেনিসকে বিদায় বললেও ফেদেরারকে ‘বিদায়’ বলতে পারেননি। ধীরে ধীরে বন্ধুত্বটা মোড় নেয় অন্যদিকে। যেখানেই ফেদেরার, সেখানেই মিরকা; এ যেন এক অলিখিত নিয়ম হয়ে গিয়েছে গত ১৫ বছরে। শুধু সমর্থন জানিয়েই ক্ষান্ত হননি, ফেদেরারের দৈনন্দিন সময়সূচী, স্পন্সরদের সাথে চুক্তি সামলানো, ছোট ছোট ব্যাপারগুলো টুকে রাখাসহ সবকিছু করেছেন। এমনকি স্বামীর জন্য ভাভরিঙ্কার সঙ্গে একবার বাগযুদ্ধেও জড়িয়ে পড়েছিলেন। ফেদেরার তাই মানছেন, মিরকাই তাঁর সাফল্যের চাবিকাঠি, “মিরকা আমাকে ছাড়া থাকতে পারে না। আমিও তাঁকে ছাড়া থাকতে পারি না। বছরের পর বছর ধরে সে আমার পাশে থেকে সমর্থন জুগিয়ে গিয়েছে। জানি না তাঁকে ছাড়া সবকিছু কিভাবে সামলাতাম!”

     

    দীর্ঘ ক্যারিয়ারে অনেক চড়াই উতরাই পার করেছেন। আশেপাশের অনেক কিছুই বদলে গিয়েছে। শুধু বদলাননি মিরকা। অতীতের স্মৃতিগুলো রোমন্থন করে কিছুটা আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন ‘ফেড এক্সপ্রেস’, “যখন আমার কিছুই ছিল না তখন মিরকাকে পাশে পেয়েছি। আজ আমার কাছে ৮৯ টি ট্রফি আছে, কিন্তু এখনো সে আগের মতোই আছে! আমার ক্যারিয়ারের প্রায় সব অর্জনই তাঁর কারণে সম্ভব হয়েছে। এক আমি কিছুই না।”

     

     

    ২০০৯ সালে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন। দুজনের ঘর আলো করে এসেছে চারটি জমজ সন্তান। মাইলা রোজ, চার্লিন রিভা, লিও ও লেনর্টকে নিয়ে ব্যস্ততার শেষ নেই মিরকার। তবে এতশত দায়িত্বের মাঝেও নিয়ম করেই খেলা দেখতে আসেন। ফেদেরারও ব্যাপারটা দারুণ উপভোগ করেন, “বাচ্চারা আসার পর কাজ অনেক বেড়ে গিয়েছে মিরকার। তবুও সে আমার খেলা দেখতে আসে। অনেক কঠিন মুহূর্তে তাঁকে পাশে পেয়েছি। আজীবনই এরকম পেতে চাই।”

     

    ক্যারিয়ারের সায়াহ্নে অবস্থান করছেন। এক সময়ের প্রবল প্রতাপধারী ফেদেরার গত কয়েক বছর ধরে ছিলেন নিজের ছায়া হয়ে। হয়তো খুব বেশিদিন খেলে যেতে পারবেন না। তবে মিরকাকে হয়তো সারাজীবনই পাশে পাবেন।