• ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    প্রিমিয়ার লিগের পঞ্চ-তন্ত্র

    প্রিমিয়ার লিগের পঞ্চ-তন্ত্র    

    প্রথম সপ্তাহেই নিজের চিরায়ত রুপে ফিরেছে প্রিমিয়ার লিগ। গোল, উত্তেজনা, পিছিয়ে থেকে থেকে ফিরে আসা, রেফারির বিতর্কিত সিদ্ধান্ত, শিহরণ জাগানো মুহুর্ত- কী ছিল না! প্রিমিয়ার লিগের নতুন মৌসুম শুরুটা হয়েছিল শুক্রবার। প্রথমবারের মতো। সাত গোলের প্রথম ম্যাচ সহ প্রিমিয়ার লিগের এই সপ্তাহ দেখেছে মোট ৩১টি গোল! দশ ম্যাচের মাত্র একটি হয়েছে গোলশূন্য ড্র। 

    প্রিমিয়ার লিগের প্রথম সপ্তাহে হয়ে যাওয়া সেরা ঘটনারগুলোর দেখা নেয়া যাক এক নজরেঃ

    ১)  মোরাতাই কন্তের সান্ত্বনা

     

    হার দিয়ে প্রথম ম্যাচ শুরু, তাও আবার বার্নলির কাছে নিজেদের মাঠে- আন্তোনিও কন্তে নিশ্চয় অতটা আশা করেননি। ১৩ মিনিটে গ্যারি কেহিলের লাল কার্ডটাই আসলে ঘুরিয়ে দিয়েছিল ম্যাচের মোড়। দশ জনের দল নিয়ে খেলা গুছিয়ে ওঠার আগেই প্রথম গোলটা খেয়ে বসে চেলসি।



    কমিউনিটি শিল্ডের মতো এই ম্যাচেও আলভারো মোরাতাকে দ্বিতীয়ার্ধেই মাঠে নামিয়েছিলেন আন্তোনিও কন্তে। স্প্যানিশ স্ট্রাইকারই তিন গোল ও একজন খেলোয়াড়ে পিছিয়ে থাকা দলকে ফিরে আসার স্বপ্নটা দেখাচ্ছিলেন। প্রথম দিনেই যেন প্রিমিয়ার লিগের সাথে মানিয়ে নিয়েছেন মোরাতা! গোল করার পাশাপাশি চেলসির দ্বিতীয় গোলেও অবদান আছে তার। পরে ফ্যাব্রেগাসও লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়লে নয় জনের দল নিয়েও লড়াইটা চালিয়ে গেছে চেলসি। হ্যাজার্ড-বাকায়োকোহীন ম্যাচ থেকে সেটাই হতে পারে কন্তের সান্ত্বনা।




    ২) অভিষেকে গোল পেয়েছেন প্রায় সবাই!

    কারও জন্য প্রিমিয়ার লিগের প্রথম গোল। কেউ আবার ক্লাব বদলে পেয়েছেন গোলের দেখা। দুই বছর বিরতির পর প্রিমিয়ার লিগে ফেরত এসেও জালে বল জড়িয়েছেন প্রথম ম্যাচেই!

    ওয়েইন রুনি, লুকাকু অদল-বদল করেছেন নিজেদের ক্লাবের ঠিকানা। স্টোক সিটির সঙ্গে তাঁর গোলেই ম্যাচ জিতিয়ে ১৩ বছর পর শৈশবের ক্লাবের হয়ে মাঠে ফেরার মুহুর্তটা স্মরণীয় করে রেখেছেন রুনি। আর ওয়েস্ট হামের বিপক্ষে জোড়া গোলে লুকাকু জানান দিয়েছেন নিয়মিত জালের ঠিকানা খুঁজতে নতুন ক্লাবেও বেগ পেতে হবে না তাকে!

    রিয়াল মাদ্রিদ, জুভেন্টাসেও অভিষেকে গোল করেছিলেন মোরাতা। এবার চেলসির হয়েও করলেন প্রিমিয়ার লিগে। আর লিভারপুলের হয়ে আবার প্রিমিয়ার লিগের দ্বিতীয় অধ্যায়েও  মোহাম্মাদ সালাহ।

    ৩) লিভারপুল আর লিভারপুলের রক্ষণ...

    মৌসুম শুরুর আগে লিভারপুলের মূল সমস্যা ধরা হয়েছিল তাদের রক্ষণভাগকে। লিভারপুল সমর্থকদের সেই আশঙ্কাই সত্যি হল প্রথম ম্যাচেই। নিজেদের রক্ষণের ভুলেই পয়েন্ট খুঁইয়েছে ক্লপের দল।





    সেট পিস থেকে গোল হজম যেন লিভারপুলের অভ্যেসই হয়ে দাঁড়িয়েছে। ক্লপ দলের দায়িত্ব নেয়ার পর লিগে এখন পর্যন্ত সেটপিস থেকে ২৭ বার লিভারপুলের জালে বল ঢুকেছে। শুধু ক্রিস্টাল প্যালেস আর ওয়েস্টব্রম আছে এই তালিকায় লিভারপুলের নিচে!


    ৪) অবশেষে নিজের দলটা পেয়েছেন মরিনহো?

    বড় দলগুলোর ভেতর সবচেয়ে দাপুটে ছিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডই। প্রথম ম্যাচ থেকেই ইউনাইটেডের মাঝমাঠে হাল ধরেছেন নেমানিয়া মাতিচ। সেই সুযোগটা ভালো মতই কাজে লাগিয়েছে মরিনহোর আক্রমণ ভাগ। পল পগবা খেলেছেন অনেকটা উপরে এসে। প্রথম ম্যাচে গোলও পেয়েছেন তিনি। 


     

    আর রোমেলু লুকাকু প্রিমিয়ার লিগে নিজের দারুণ ফর্মটাই টেনে এনেছেন ওল্ড ট্রাফোর্ডেও। সবমিলিয়ে ওয়েস্ট হামকে ৪-০ ব্যবধানে হারানো ম্যাচটা মরিনহোকে অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছে বড় স্বপ্ন দেখার। অবশেষে বোধ হয় মনের মতো দলটাই পেলেন ইউনাইটেড ম্যানেজার।

    ৫) ভার্ডি ফিরলেন ‘পার্টি’ মুডে!

    আর্সেনালের বিপক্ষের দল জিততে না পারলেও ভার্ডির জোড়া গোল মনে করিয়ে দিয়েছে দুই মৌসুম আগের সেই রুপকথা! মাহরেজ-ভার্ডি খেলেছেন ঠিক সেই পুরনো লেস্টার সিটির মতোই। লেস্টারের তৃতীয় গোল প্রিমিয়ার লিগ দর্শকদের দিয়েছে দেজাভু!

    পুরো ম্যাচে আর্সেনালের রক্ষণকে চাপেই রেখেছিলেন ইংলিশ স্ট্রাইকার। হাই প্রেসিং, নিখুঁত ফিনিশ, মাহরেজের সাথে লিংক আপ প্লে- এ যেন সেই পার্টি মুডে থাকা ভার্ডি! বাকি মৌসুম মাহরেজ-ভার্ডি এই খেলাটা চালিয়ে গেলে লেস্টার সিটির আক্রমণ সামলাতে ভালোই ঝামেলা পোহাতে হবে বাকি দলগুলোর।