বার্সাকে জেতাল জিরোনাই
লা লিগায় নতুন আসা তিন দলের ভেতরও সবচেয়ে অখ্যাত তারা। ঘরের মাঠ স্টাডিও মন্টিলিভোতে ধারণ ক্ষমতা সাড়ে তের হাজারেরও কিছু কম। সেই মাঠেই বার্সেলোনার বিপক্ষে খেলতে নেমেছিল নবাগত জিরোনা এফসি। ম্যাচ শুরুর আগে এমন দলের বিপক্ষে বার্সার সহজ জয়টাই দেখেছিলেন সবাই। জিতেছেও বার্সাই, কিন্তু বহু কষ্টে! আসলে জিরোনাই জিতিয়ে দিয়েছে প্রতিপক্ষকে। দুইটি আত্মঘাতী আর লুইস সুয়ারেজের গোলে ভর করে জিরোনাকে ৩-০ ব্যবধানে হারিয়েছে বার্সেলোনা।
জিরোনার বিপক্ষে শুরুর একাদশে বেশ কিছু অদল-বদল করেছিলেন কোচ এর্নেস্তো ভালভার্দে। ছিলেন না জেরার্ড পিকে, নেলসন সেমেদো, সার্জিও বুস্কেটসরা। অ্যালেক্স ভিদাল, সার্জি রবার্তোদের সাথে শুরু করেছিলেন পলিনহোও। ভালভার্দের সেই সিদ্ধান্তকে শুরুতেই ভুল প্রমাণ করতে পারত জিরোনা। ম্যাচে প্রথম সুযোগটা পেয়েছিল তারাই। কিন্তু ডাবল সেভে দলকে বাঁচান মার্ক আন্দ্রে টার স্টেগান। প্রথমে ক্রিশ্চিয়ান পর্তুর দূরপাল্লার শট টের স্টেগেন রুখে দিলে ফিরতি শটে মাইকেল অলুঙ্গাকেও গোল বঞ্চিত করেন তিনি।
এরপর আসলে জিরোনাই ম্যাচটা সহজ করে দেয় বার্সার জন্য। লিওনেল মেসির নেয়া কর্নার কিক নেয়া থেকে জর্দি আলবার ভলি বারপোস্টের অনেকখানি বাইরে দিয়েই যাচ্ছিল। কিন্তু জিরোনা মিডফিল্ডার আদায়ের গায়ে লেগে সেই বল ঢুকে পরে জালে। আত্মঘাতী গোল আদায় করে ম্যাচে এগিয়ে যায় বার্সা।
ওই গোলের আগে অবশ্য সুয়ারেজও ভালো সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু হাতছাড়া করেছেন সেই দফায়। প্রথমার্ধের বাকিটা সময়ে বার্সার কাছে বলের দখল থাকলেও আক্রমণে ছিল ছন্নছাড়া। বিরতির পর অবশ্য শুরুটা দারুণ করেছিল তারা। গোল পেয়ে যেতে পারতেন লিওনেল মেসি। প্রথমার্ধে একবার ফ্রি কিক ঠেকিয়ে দিয়েছিলেন। জিরোনা গোলরক্ষক ইরাইজোজ এবারও শক্ত হাতেই ফেরালেন আর্জেন্টাইনকে। এই দুইটি শট ছাড়া পুরো ম্যাচে আর গোলে শট করারই সুযোগ পাননি মেসি। ইরাইজোজকে তাই বেগ পেতে হয়নি। তাকে কড়া পাহারায় রেখেছিলেন জিরোনা মিডফিল্ডার পাবলো মাফফেও।
মেসিকে গোল করতে না দিলেও নিজেদের জালে নিজেরাই আরও একবার গোল করে ম্যাচটা হাতছাড়া করে জিরোনা। ৪৮ মিনিটে ভিদালের ক্রস ডামি করে ছেড়ে দেন সুয়ারেজ। কিছু বুঝে ওঠার আগেই গোলরক্ষক ইরাইজোজের পায়ে লেগেই বল ঢুকে যায় তার নিজের জালেই।
দুই গোলে এগিয়ে গিয়ে ম্যাচ অনেকটাই নিজেদের করে নিলেও বল দখলের লড়াইয়ে পিছিয়ে ছিল বার্সা। জিরোনার আক্রমণ সামলাতেও দ্বিতীয়ার্ধে ব্যস্ত সময় পার করতে হয় মাসচেরানো, উমতিতিদের। ডগলাস সোয়ারেস, অনুঙ্গারাও ভালো সুযোগ হাতছাড়া করেছেন গোল করার। নইলে বার্সার জন্য জয়টা আরও কঠিনই হতে পারত।
সুযোগ কাজে না লাগানোর শাস্তিটা হাতে নাতেই পায় জিরোনা। ৬৯ সার্জি রবার্তোর লম্বা বল থেকে জিরোনার জালে তিন নম্বর গোলটি করেন সুয়ারেজ। ম্যাচের বাকি সময় দুই দলের কেউই আর তেমন কোনো আক্রমণ করতে পারেবি, আর কোনো গোলও হয়নি।