বার্সাকে বাঁচালেন স্টেগান
স্কোরলাইন দেখে অবশ্য বার্সেলোনার জয়টা সহজই মনে হওয়ার কথা। সান মামেসে অ্যাথলেটিক বিলবাওকে ২-০ গোলে হারিয়েছে বার্সা। প্রথমার্ধে লিওনেল মেসির গোলের পর জয় নিশ্চিত করতে বার্সাকে অপেক্ষা করতে হয়েছে ম্যাচের শেষ পর্যন্ত। যোগ করা সময়ে অ্যাথলেটিক বিলবাওয়ের আক্রমণ থেকেই বল পেয়ে গিয়েছিলেন মেসি। সেখান থেকে প্রায় ফাঁকা বারে গোল করে পলিনহো নিশ্চিত করেছেন বার্সার তিন পয়েন্ট। কিন্তু এর আগে বার্সাকে ম্যাচে টিকিয়ে রেখেছিলেন মার্ক আন্দ্রে টার স্টেগান। জার্মান গোলরক্ষকের বীরত্বেই শেষ পর্যন্ত জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে পেরেছে এর্নেস্তো ভালভার্দের দল।
নিজের সাবেক দল বিলবাওয়ের বিপক্ষে আগের ম্যাচের একাদশ থেকে চারজন বদলে জেরার্ড পিকে, জর্দি আলবা, আন্দ্রে গোমেজ ও পলিনহোকে নামিয়েছিলেন ভালভার্দে। প্রথমার্ধে দুই দল নেমেছিল গোল মিসের মহড়ায়! আর্তিজ আদুরিজ, মেসি- দু পাশেই সহজ সুযোগ নষ্ট করেছেন। দারুণ এক আক্রমণ থেকে গোলরক্ষককে কাটিয়েও ফাঁকা বারে গোল দিতে পারেননি মেসি। আদুরিজ অবশ্য গোল বঞ্চিত হয়েছেন টার স্টেগানের কারণেই। প্রথমে দারুণ এক হেড, তারপর ওয়ান অন ওয়ানেও আদুরিজকে খালি হাতে ফিরিয়েছেন প্রথমার্ধে। বিলবাওয়ের ইনাকি উইলিয়ামসও গোল করার মতো পরিস্থিতি থেকে পাস না দিয়ে নিজে শট করলে বিপদে ফেলতে পারতেন স্টেগানকে।
৩৬ মিনিটে অবশ্য আর ভুল করেননি মেসি। দারুণ এক আক্রমণ থেকে জর্দি আলবার ক্রসকে জালে পাঠান আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড। এর কিছুক্ষণ আগেই স্বরূপে ফিরেছিল বার্সা, গোলটা প্রাপ্যই ছিল মেসিদের। প্রথমার্ধের আগেই দুই গোলের লিডও নিয়ে নিতে পারত কাতালান ক্লাবটি। মেসির পাস থেকে পলিনহোর নেওয়া শট বারপোস্টে লেগে ফেরত আসলে, ১-০ তেই শেষ হয় প্রথমার্ধের খেলা।
দ্বিতীয়ার্ধে অবশ্য বার্সাকে আর সেভাবে খুঁজে পাওয়া যায়নি, নিয়ন্ত্রণটা ছিল বিলবাওয়ের কাছেই। বার্সার বেশিরভাগ আক্রমণই দেখেনি সফলতার মুখ। বিলবাও ডিফেন্ডারদের দৃঢ়তায় গোলবঞ্চিত হয়েছেন লুইস সুয়ারেজ, গোমেজরা।
ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সমতাসূচক গোলের জন্য একের পর এক আক্রমণ করে গেছে বিলবাও। রাউল গার্সিয়ার হেড বারপোস্টে লেগে ফেরত আসলে আর সমতায় ফেরা হয়নি ঘরের দলের। এর পর বাকিটা সময় গোলবারে ‘দুর্গ’ হয়ে দাঁড়ান টার স্টেগান। বিলবাও আর গোলের মধ্যে পার্থক্য ছিল কেবল স্টেগানই। প্রথমার্ধের মতো আরও দুইবার আদুরিজকে নিশ্চিত গোলবঞ্চিত করেন জার্মান গোলরক্ষক।
শেষদিকে আরও ছন্দ হারায় বার্সার মিডফিল্ড। মেসিও ছিলেন নিজের ছায়া হয়েই, আক্রমণভাগে সুয়ারেজও নিষ্প্রভ। ৮১ মিনিটে রেফারির সিদ্ধান্তে হাত তালি দিয়েও দ্বিতীয় হলুদ কার্ডের হাত থেকে বেঁচে গেছেন স্যামুয়েল উমতিতি।
বিলবাওয়ের সমতাসূচক গোলটা মনে হচ্ছিল সময়েরই ব্যাপার। কিন্তু শেষদিকে সেই আক্রমণই কাল হয়ে দাঁড়ায় বিলবাওয়ের জন্য। রক্ষণ ফাঁকা রেখে সবাই উপরে উঠে যাওয়ায় বল পেয়ে যান মেসি। সুয়ারেজকে পাস দিলেও তিনি কাজে লাগাতে পারেননি। তাঁর শট ঠেকিয়ে দেন বিলবাও গোলরক্ষক। কিন্তু ফিরতি বলে জালে বল জড়িয়ে বার্সার জয় নিশ্চিত করেন পলিনহো।