• জিম্বাবুয়ে-ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ
  • " />

     

    বুলাওয়ের ড্রয়েও 'রাজা' সিকান্দাররাই

    বুলাওয়ের ড্রয়েও 'রাজা' সিকান্দাররাই    

    বুলাওয়ে টেস্ট
    জিম্বাবুয়ে ১ম ইনিংস ৩২৬ অল-আউট (মাসাকাদজা ১৪৭, রাজা ৮০, রোচ ৩/৪৪) ও ২য় ইনিংস ৩০১/৭(রাজা ৮৯, চাকাভা ৭১*, গ্যাব্রিয়েল ২/৩৪, রোচ ২/৩৭)
    ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস ৪৪৮ অল-আউট(পাওয়েল ৯০, হোল্ডার ১১০, ডওরিচ ১০৩, রাজা ৫/৯৯, সিসোরো ৩/১১৩) 
    ফল : ম্যাচ ড্র 


    অনেক ধারণা, হিসাব নিকাশ ছিল পঞ্চম দিনকে ঘিরে। সব ছাপিয়ে ড্রই হয়েছে বুলাওয়ে টেস্ট। 

    ১৫ ওভারের মতো বাকি ছিল দিনের খেলা। ২৯১ বল ধরে অবিচ্ছিন্ন জিম্বাবুয়ের ৮ম উইকেট জুটি, রেজিস চাকাভা অপরাজিত ৭১ রানে। তবে চাকাভার সেঞ্চুরি বা ৮ম উইকেট জুটি ভাঙ্গা, দুইটির একটির জন্যও অপেক্ষা করার দরকার পড়লো না। ফল হিসেবে এলো ড্র, তবে যে ড্রটা জিম্বাবুয়ের অর্জিত, সকালে থেকেই তো চোখ রাঙাচ্ছিল পরাজয়! জিম্বাবুয়ে সে রাঙানি উপেক্ষা করেছে, শেষদিনে হারিয়েছে মাত্র তিন উইকেট। 

    দিনের শুরুটা শুরু হয়েছিল শঙ্কাজাগানিয়াই। দ্বিতীয় ওভারেই গালিতে ক্যাচ দিয়েছেন পিটার মুর, শ্যানন গ্যাব্রিয়েলের বলে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের জন্য তাই শুরুটা ছিল দারুণ। এরপর ম্যালকম ওয়ালারের শুরুটা হলো নড়বড়ে। অল্পের জন্য বেঁচে গেলেন বার দুয়েক। পরে রাজার সঙ্গ পেয়েই কিনা একটু থিতু হলেন, তবে বিশুর শরীরঘেঁষা বল সরিয়ে দিতে গিয়েই ঘটলো বিপত্তি। নতুন বল তখন প্রাপ্য হয়ে গেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের, তবে পুরোনো বলেই এঁটে থাকার পুরষ্কার সে ওভারেই এনে দিলেন বিশু। 

    চাকাভা রানের কলাম পূর্ণ করার আগেই সিকান্দার রাজাকে এলবিডাব্লিউ দিলেন আম্পায়ার, রিভিউ নিয়ে বেঁচে গেলেন তিনি। জিম্বাবুয়ের মনোভাব তারও আগে থেকেই পরিষ্কার, বুলাওয়েতে ড্রটাই হবে তাদের কাছে জয়ের সমান। সে অনুযায়ীই খেলছিলেন সিকান্দার রাজা। জেসন হোল্ডারের অসাধারণ এক বলে হলেন বোল্ড। সেঞ্চুরি মিস করলেন, জিম্বাবুয়ে পড়ে গেল আরেকবার শঙ্কায়। তার আগেই একটা কীর্তি গড়ে ফেললেন রাজা, একই টেস্টের দুই ইনিংসে ৮০ বা ততোধিক রান ও ৫ উইকেট নেয়া মাত্র তৃতীয় ক্রিকেটার হলেন তিনি। 

    জিম্বাবুয়ের পরাজয়ের শঙ্কা কাটালেন ফিফটি করা চাকাভা, সঙ্গে ছিলেন অধিনায়ক গ্রায়েম ক্রেমার। ক্রেমারের সঙ্গে ছিল ভাগ্যের অনেক ছোঁয়াও। প্রথম বলেই গ্লাভসে লেগে ক্যাচ গিয়েছিল উইকেটকিপারের কাছে, আউট দেননি আম্পায়ার। রিভিউ তার আগেই শেষ উইন্ডিজের। এরপর রসটন চেজের প্রায় একই রকম দুইটি বলে এলবিডাব্লিউ হতে পারতেন, এবারও আউট দেননি আম্পায়ার। আউট দেবেন কি, ওয়েস্ট ইন্ডিয়ানরা তো আবেদনই করলেন না ঠিকমতো। চাকাভার একটা ক্যাচও ফেলেছেন উইকেটকিপার। 

    জিম্বাবুয়ে চা-বিরতিতে গিয়েছিল ১৩৭ রানের লিড নিয়ে। চা-বিরতি থেকে ফিরেও ক্রেমার-চাকাভার রক্ষণের দেয়াল ভাঙতে পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বুলাওয়েতে পাঁচদিন ধরে তাই হলো অসাধারণ এক ম্যাচ, যে ম্যাচে জিম্বাবুয়ের সবচেয়ে বড় নায়কের নাম সিকান্দার রাজা। 

    দ্বিতীয় টেস্ট ড্র করলেও সিরিজ হারতে হয়েছে জিম্বাবুয়েকে। তবে এই টেস্টের ফল বোধহয় ছাপিয়ে যাবে সেটাকে, অন্তত জিম্বাবুইয়ানদের জন্য তো বটেই! স্বেচ্ছা নির্বাসন থেকে ফিরে এই প্রথমবার ড্র করলো জিম্বাবুয়ে, শেষ ড্র হয়েছিল ২০০৫ সালে বাংলাদেশের সঙ্গে ঢাকা টেস্টে। আর পাঁচ বছর পর বিদেশের মাটিতে সিরিজ জিতলো উইন্ডিজ। 
     

     

    (adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});