• ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    শেষের নাটকে জয় পেল সিটি

    শেষের নাটকে জয় পেল সিটি    

    নির্ধারিত ৯০ মিনিটের খেলা শেষ হয়েছে আগেই। অতিরিক্ত ৫ মিনিটেরও খেলা প্রায় শেষের দিকে। এই বুঝি শেষ বাঁশি বাজাবেন রেফারি। স্কোরবোর্ডে তখন ১-১ গোলের সমতা ম্যানচেস্টার সিটি এবং সাউদাম্পটনের মধ্যে। এমন সময় প্রতিপক্ষের ডি-বক্সের বাইরে বল পেলেন রহিম স্টার্লিং। সতীর্থ কেভিন ডি ব্রুইনের সাথে দারুণ এক ‘ওয়ান-টু’ করে ডিবক্সের বাইরে থেকে শট নিলেন তিনি। পুরো ম্যাচে সার্জিও আগুয়েরো, গ্যাব্রিয়েল হেসুসদের একাধিকবার ফিরিয়ে দেওয়া সাউদাম্পটন গোলরক্ষক ফ্রেজার ফরস্টার সর্বাত্মক চেষ্টা করেও পারলেন না। ম্যাচের ৯৬ মিনিটে জালে জড়াল স্টার্লিং-এর বাঁকানো শট। বুনো উল্লাসে ফেটে পড়লেন পেপ গার্দিওলা। সেই সাথে যেন শিরোপা জয়েরই উদযাপনে মেতে উঠল সিটি সমর্থকেরা। গত সপ্তাহে হাডার্সফিল্ডের পর আবারও সিটির জয়সূচক গোল করলেন স্টার্লিং। শেষের নাটকীয়তায় সাউদাম্পটনকে ২-১ গোলে হারাল সিটি।

     

     

    স্টার্লিং-এর গোলের আগে দ্বিতীয়ার্ধের ৪৭ মিনিটে লিড নেয় সিটি। বাঁ-প্রান্ত থেকে ডি ব্রুইনের ফ্রি কিক ক্লিয়ার করতে গিয়ে নিজ জালেই বল ঠেলে দেন সাউদাম্পটন ডিফেন্ডার ভার্জিল ভ্যান ডাইক। লিডের আগে এবং পরে একাধিক সুযোগ পেয়েছিল ‘সিটিজেন’রা। কিন্তু ‘সেইন্টস’ গোলরক্ষক ফরস্টারের দক্ষতায় তা আর হয়ে ওঠে নি। সিটি লিড নিলেও ম্যাচে গোলের প্রথম সুযোগটা পেয়েছিল সাউদাম্পটনই। প্রথমার্ধে ওয়েসলি হোয়েটের হেড ক্রসবারে প্রতিহত হলে সে যাত্রায় বেঁচে যায় সিটির রক্ষণভাগ। কিন্তু ৭৫ মিনিটে আর শেষ রক্ষা হয়নি। ডানপ্রান্তে সোফিয়ান বুফালের ক্রসে ডানপায়ের জোরাল শটে দলকে সমতায় ফেরান ওরিওল রোমেউ। জয়সূচক গোলের জন্য সিটিকে অপেক্ষা করতে হয়েছে আক্ষরিক অর্থেই অন্তিম মুহুর্ত পর্যন্ত। অতিরিক্ত সময়ের শেষ মিনিটে স্টার্লিং-এর গোলেই দ্বিতীয় স্থানে থাকা নগর প্রতিদ্বন্দ্বী ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের চেয়ে ৮ পয়েন্টেই এগিয়ে থাকল গার্দিওলার দল।

     

     

     

    সিটির নাটকীয়তার রাতে জয় পেয়েছে ‘বিগ ফোর’-এর আর্সেনালও। নিজেদের মাঠ এমিরেটসে হাডার্সফিল্ডের বিপক্ষে মাত্র ৩ মিনিটেই এগিয়ে যায় আর্সেনাল। অ্যারন রামসির পাস থেকে দলকে এগিয়ে দেন আলেকজান্ডার লাকাজেত। এরপরের ঘণ্টাখানেক ‘গানার’দের দমিয়ে রাখলেও পাঁচ মিনিটের মেসুত ওজিল ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে যায় হাডার্সফিল্ডের সব আশা-ভরসা। ৬৮ মিনিটে ওজিলের ক্রস থেকেই পায়ের আলতো টোকায় ব্যবধান দ্বিগুণ করেন অলিভিয়ের জিরু। এর মিনিটখানেক পরই ৬৯ মিনিটে আবারও ওজিলের পাস থেকে জয় নিশ্চিত করেন অ্যালেক্সিস সানচেজ। দুই ‘অ্যাসিস্ট’- এর পর ৭২ মিনিটে গোলটাও পেয়ে যান ওজিল। ৮৭ মিনিটে সিড কোলাসিনাচের পাস থেকে ম্যাচে নিজের দ্বিতীয় এবং আর্সেনালের পঞ্চম গোল করেন জিরু। এই জয়ে ২৮ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলে ৪র্থ স্থান ধরে রাখল আর্সেন ওয়েঙ্গারের দল।

     

     

    আর্সেনালের মতই সহজ জয় পেয়েছে লিভারপুলও। স্টোক সিটির মাঠে ম্যাচের ১৭ মিনিটেই ‘অল রেড’-দের এগিয়ে দেন সাদিও মানে। প্রথমার্ধের শেষদিকে ব্যবধান দ্বিগুণ করার দারুণ এক সুযোগ পেয়েছিলেন সেনেগালের এই ফরওয়ার্ড। কিন্তু মানের ঐ শটটি বারে প্রতিহত হলে ব্যবধান প্রথমার্ধে আর দ্বিগুণ করা হয়নি লিভারপুলের। দ্বিতীয়ার্ধের ৬৭ মিনিটে মাঠে নামেন এই মৌসুমে লিভারপুলের অন্যতম বড় তারকা মোহাম্মদ সালাহ। ৭৭ এবং ৮৩ মিনিটে জোড়া গোল করে দলের জয় নিশ্চিত করেন মিশরের এই উইঙ্গার। আজকের জয়ে পয়েন্ট টেবিলের ৫ম স্থানে উঠে আসল লিভারপুল।

     

     

    আর্সেনাল, লিভারপুলের মত বড় ব্যবধানের জয় পায়নি চেলসি। এডেন হ্যাজার্ড, সিজার অ্যাজপিলিকুয়েতাদের অনুপস্থিতি চেলসির খেলায় ছিল স্পষ্ট। টেবিলের তলানীতে থাকা সোয়ানসি সিটির বিপক্ষের গোলের জন্য চেলসির অপেক্ষা করতে হয়েছে ৫৫ মিনিট পর্যন্ত। এন’ গোলো কান্তের ক্রস থেকে হেড করে ‘ব্লুজ’দের হয়ে জয়সূচক গোল করেছেন জার্মান সেন্টারব্যাক আন্তোনিও রুডিগার। প্রিমিয়ার লিগে এটিই ছিল তার প্রথম গোল।

     

     

    চেলসি জিতলেও আজকের ম্যাচটি হয়ত খুব একটা মনে করতে চাইবেন না কোচ আন্তোনিও কন্তে। ম্যাচের ৪৩ মিনিটে রেফারির সাথে বাগবিতন্ডায় জড়িয়ে লাল কার্ড দেখতে হয়েছে কন্তেকে। ম্যাচের বাকিটা তাই দর্শকসারিতে বসেই উপভোগ করতে হয়েছে এই ইতালিয়ানকে।

     

     

    রাতের অন্য খেলায় ওয়েন রুনির হ্যাটট্রিকে ওয়েস্ট হ্যামকে ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত করেছে এভারটন।