ক্লাসিকোর আগে নিজেদের ঝালিয়ে নিল বার্সা
রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে আগামী শনিবার 'এল ক্লাসিকো'র প্রস্তুতিটা ভালমতই নিয়ে রাখল বার্সেলোনা। নিজেদের মাঠ ক্যাম্প ন্যুতে দেপোর্তিভো লা করুণাকে ৪-০ গোলে হারিয়েছে এর্নেস্তো ভালোভার্দের দল। বার্সার হয়ে জোড়া গোল করেছেন লুইস সুয়ারেজ এবং পলিনহো। ব্যবধানটা বাড়তে পারত আরও, গোল পেতে পারতেন লিওনেল মেসিও। কিন্তু ৭০ মিনিটে পেনাল্টি মিস করে আর গোলের দেখা পাওয়া হয়নি আর্জেন্টাইনের।
লা লিগা টেবিলের তলানীতে থাকা দেপোর্তিভোর বিপক্ষে বার্সার জয়টা আরও বড় হতে পারত। পুরো ম্যাচে দেপোর্তিভো গোলরক্ষক রুবেনের বীরত্বে তা আর হয়ে ওঠেনি। প্রথমার্ধে লিওনেল মেসি, সুয়ারেজ, অ্যালেক্স ভিদালদের অন্তত চারটি নিশ্চিত গোল বাঁচিয়ে দিয়েছেন এই স্প্যানিশ গোলরক্ষক। রুবেনের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের পাশাপাশি ভাগ্যকেও দুষতে পারে বার্সা। পুরো ম্যাচে কেবল মেসিরই তিনটি শট প্রতিহত হয়েছে বারে। অবশ্য এতকিছুর পরও বার্সাকে দমিয়ে রাখা যায়নি পুরোপুরি। ম্যাচের ২৯ মিনিটে ঠিকই লিড নেয় কাতালানরা। ইভান রাকিটিচের কর্ণার থেকে ডিবক্সের বাইরে বল পান আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা। স্প্যানিশ এই মিডফিল্ডারের চিপ করা পাস ডিবক্সের মধ্যে নিয়ন্ত্রণে এনে সুয়ারেজের দিকে বাড়ান মেসি। ফাঁকা পোস্টের সামনে থেকে লক্ষ্যভেদ করতে ভুল করেননি 'এল পিস্তোলেরো'।
ম্যাচে বার্সার ব্যবধান দ্বিগুণ করার দারুণ একটি সুযোগ পেয়েছিলেন মেসি। চমৎকার এক প্রতি আক্রমণে ৩৮ মিনিটে তার শট ফিরে আসে বারে লেগে। ৪১ মিনিটে মেসির আরও একটি শট বারে প্রতিহত হলেও ফিরতি শটে বার্সার ব্যবধান ঠিকই দ্বিগুন করেন পলিনহো। প্রথমার্ধের একেবারে অন্তিম সময়ে আসে ম্যাচের অন্যতম বিতর্কিত মূহুর্ত। সুয়ারেজের শট লাইন থেকে ফিরিয়ে দেন রুবেন। অবশ্য বল গোল লাইন অতিক্রম করেছিল কি না, তা নিয়ে আছে বিতর্ক। শট নিয়েই উদযাপনে মেতে ওঠেন সুয়ারেজ। কিন্তু গোল না দেওয়ার সিদ্ধান্তের কারণে প্রথমার্ধ শেষেও রেফারির সাথে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় করতে দেখা যায় মেসি, সুয়ারেজকে। প্রথমার্ধ শেষের বাঁশির সাথে সাথেই রেফারির মাতেও লাহোযের উদ্দেশ্যে দুয়োধ্বনিতে ভারী হয়ে উঠে সমগ্র ক্যাম্প ন্যু।
প্রথমার্ধের শেষদিকে গোল বিতর্কের রেশ কাটতে না কাটতেই দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই নিজের দ্বিতীয় গোল পেয়ে যান সুয়ারেজ। ৪৭ মিনিটে ডানপ্রান্ত থেকে সার্জি রবার্তোর ক্রসে ডানপায়ের আলতো টোকায় রুবেনকে পরাস্ত করেন এই উরুগুইয়ান। সুয়ারেজ গোল পেলেও শত চেষ্টার পরও দ্বিতীয়ার্ধেও খালি হাতে ফিরতে হয়েছে মেসিকে। ৬৯ মিনিটে পেনাল্টি পেলেও ১২ গজ থেকে মেসিকে আবারও হতাশ করেন রুবেন। এর মিনিট দুয়েক আগে প্রায় ২৫ গজ দূর থেকে নেওয়া ফ্রিকিকও বারে লেগে ফিরে আসে মেসির।
এর কিছুক্ষণ পরেই ম্যাচের ৭৫ মিনিটে নিজের দ্বিতীয় গোল পেয়ে যান পলিনহো। জর্দি আলবার শট রুবেন ফিরিয়ে দিলেও ফিরতি বল জালে পাঠাতে ভুল করেননি এই ব্রাজিলীয়ান মিডফিল্ডার। তিনটি শট বারে প্রতিহত হওয়ার পাশাপাশি পেনাল্টি মিসের পরও গোলের জন্য হন্যে হয়ে ছুটেছেন মেসি। ৮১ মিনিটে রুবেনকে একা পেয়েও গোল করতে ব্যর্থ হন তিনি। ম্যাচের পাঁচ মিনিট বাকি থাকতে হ্যাটট্রিকটা প্রায় পেয়েই গিয়েছিলেন সুয়ারেজ। পলিনহোর সাথে দারুণ এক 'ওয়ান-টু'র পর তার শটও বাইরে চলে যায় বারে লেগে। শেষমেশ মাত্র চার গোলের ব্যবধানের জয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় কাতালানদের।