• অ্যাশেজ ২০১৭-১৮
  • " />

     

    আবারও 'হতে হতে হলো না' ইংল্যান্ডের দিন

    আবারও 'হতে হতে হলো না' ইংল্যান্ডের দিন    

    ৫ম টেস্ট, সিডনি
    টস- ইংল্যান্ড (ব্যাটিং)
    ১ম দিনশেষে 
    ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস ২৩৩/৫* (রুট ৮৩, মালান ৫৫*, কামিন্স ২/৪৪, হ্যাজলউড ২/৪৭)


    সিডনিতে গোলাপি টেস্টের ১০ বছর হয়ে গেল। ম্যাকগ্রা ফাউন্ডেশনকে সহায়তা করতেই মূলত এই টেস্টের গোলাপি রঙ। ১০ বছর ধরে গোলাপি রঙের মাত্রা বেড়েছে, গোলাপি টেস্ট অস্ট্রেলিয়ার গন্ডি ছাড়িয়ে ছড়িয়ে পড়েছে  বিশ্বে। পুরোনো গোলাপি টেস্টে ফিরে এল এই অ্যাশেজের চেনা ইংল্যান্ড। প্রথম দিনটা হতে হতেও শেষ পর্যন্ত হয়নি তাদের। শেষবেলায় জো রুট ও জনি বেইরস্টোর উঠোউঠি উইকেটে উলটো এগিয়ে গেছে অস্ট্রেলিয়া। যেভাবে তারা সিরিজজুড়েই এগিয়ে আছে ইংল্যান্ডের চেয়ে, যেভাবে তারা জিতেই গেছে অ্যাশেজ। 

    বৃষ্টির কারণে শুরুর সেশনটা হয়নি। মেঘাচ্ছন্ন আকাশের নিচেও ব্যাটিং নিয়েছেন জো রুট, খানিক বাদেই সূর্যের ঝিলিক তাকে নিশ্চয়ই দিয়েছে একরাশ স্বস্তি। মার্ক স্টোনম্যান ড্রাইভ করছিলেন, অ্যালেস্টার কুক ছিলেন নড়বড়ে। প্যাট কামিন্সের লাফিয়ে ওঠা বলে স্টোনম্যান সামনে নাকি পেছনের পায়ে খেলবেন- সেটা ঠিক করার আগেই তার ব্যাট ছুঁয়ে ক্যাচ গেছে টিম পেইনের কাছে। 

    স্টোনম্যানের মতো অবস্থা জেমস ভিনসেরও। শট ঠিকঠাক হলে সেগুলো হয় দারুণ, দাপুটে। আর নাহলে ফিরে আসে পুরোনো আক্ষেপ, তিনি হয়ে পড়েন অসহায়। কামিন্সের বলে স্ল্যাশ করতে গিয়ে তিনিও উইকেটের পেছনে দিলেন ক্যাচ, আরেকবার বড় ইনিংস না খেলার আক্ষেপ সঙ্গী তার। সুযোগ শুধু হাতছাড়াই হচ্ছে তার, ভিনস কি সেটা বুঝতে পারছেন? 

     

     

    এমসিজির মহাকাব্যিক ইনিংসের পর ঠিক নিজেকে যেন ধাতস্থ করতে পারেননি অ্যালেস্টার কুক, ৩৯ রানের ইনিংসের শুরুর দিকে তো ছিলেন বেশ নড়বড়ে। আলগা শট খেলতে গেছেন, এমসিজিতে যেসব বল অবলিলায় ছেড়েছেন, এসসিজিতে খেলতে গিয়েছেন সেগুলোও। তবে শেষদিকে কিছু ড্রাইভে ছন্দে ফেরার ইঙ্গিত ছিল, সেটা মিলিয়ে গেছে জশ হ্যাজলউডের ফুললেংথের বল মিস করায়। রিভিউ নিয়ে এলবিডাব্লিউয়ের সিদ্ধান্তটা নিজেদের পক্ষে পেয়েছে অস্ট্রেলিয়া। 

    অস্ট্রেলিয়াকে এরপর হতাশ করে গেছেন রুট ও ডেভিড মালান। ড্রাইভে রুটের নিয়ন্ত্রণ ছিল দারুণ, অবশ্য একটা পুল গিয়ে পড়েছে ডিপে দুই ফিল্ডারের মাঝে। তবে তার আগেই ফিফটি হয়ে গেছে তার, এই অ্যাশেজে নিজের সর্বোচ্চ ইনিংসটাও খেলেছেন। দ্বিতীয় নতুন বলের প্রথম ওভারে স্টার্ককে প্রথমে স্ট্রেইট ড্রাইভে মারলেন চার, এরপর ইয়র্কার ইনসাইড-এজ হয়েও ফাঁকি দিল স্টাম্প। ভাগ্য ইংলিশ অধিনায়ককে বেশিক্ষণ সমর্থন দিল না, পরের বলেই ফ্লিক করতে গিয়ে স্কয়ার লেগে মিচেল মার্শের দারুণ ক্যাচের শিকার বনে গেলেন তিনি। টেস্ট শুরুর আগেই বলেছিলেন, দুই দলের পার্থক্য গড়ে দিচ্ছেন স্টিভেন স্মিথ, সেই পার্থক্যটা তিনি কেন গড়তে পারছেন না, তার অনেক বড় প্রমাণ এই ইনিংস। 

    জনি বেইরস্টো নেমে প্রতি-আক্রমণ করতে গেলেন, টিকলেন না। হ্যাজলউডের বলে আগবাড়িয়ে ড্রাইভ করতে গিয়ে তিনিও জমা পড়লেন পেইনের গ্লাভসে। শেষ দশ মিনিটের ঝড়ে নড়বড়ে হয়ে গেল ইংল্যান্ডের ইনিংস! তাদের সারাদিনের কঠোর পরিশ্রম। শুধু টিকে রইলেন মালান, যিনি ফিফটি পেয়েছেন, সুযোগ বুঝে যিনি শট খেলেছেন, আবার চা-বিরতির পর প্রথম রান নিতে যার সময় লেগেছে ৪২ মিনিট! 

    কাল মালানকে সঙ্গী করে নামবেন এ টেস্টে জায়গা বাঁচিয়ে রাখা মইন আলি। তিনি করতে পারবেন নতুন কিছু? নাকি সঙ্গী হবে সেই পুরোনো দীর্ঘশ্বাস? স্টোনম্যান-ভিনস-রুট-বেইরস্টো বা পুরো ইংল্যান্ডেরই সঙ্গী যে দীর্ঘশ্বাস! যেটা নতুন করে তাদেরকে সিডনির প্রথম দিনে মনে করিয়ে দিল অস্ট্রেলিয়া।