• লা লিগা
  • " />

     

    নতুন শুরুর অপেক্ষায় জিদান...

    নতুন শুরুর অপেক্ষায় জিদান...    

    প্রথম মৌসুমেই চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়, পরের মৌসুমটা আরও ভালো। লা লিগার সাথে চ্যাম্পিয়নস লিগটাও জিতে গেল রিয়াল মাদ্রিদ। ম্যানেজার হিসেবে জিনেদিন জিদানের রিয়াল ক্যারিয়ারটা গেছে স্বপ্নের মতোই। এবারের মৌসুমটাও দুর্দান্তভাবেই শুরু করেছিল জিদানের দল কিন্তু এর পরই লিগে পথ হারিয়েছে তারা। শীর্ষে থাকা বার্সেলোনার চেয়ে ১৯ পয়েন্ট পিছিয়ে চার নম্বরে ঠাঁই হয়েছে চার নম্বরে।  ক্লাবের দায়িত্ব নেওয়ার দুই বছরের মধ্যে এমন খারাপ সময় পার করতে হয়নি জিদানের।

     

    ম্যানেজারের পদটাই তো এমনই, সেক্ষেত্রে ব্যাতিক্রম ছিলেন জিদানই। সাফল্য ধরা দিয়েছিল শুরুতেই। মুদ্রার উলটো পিঠটা দেখতে যে জিদানকে এতোদিন অপেক্ষা করতে হয়েছে- এটাই বরং অবাক করার মতো। পর পর দুই মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতার মতো তুঘলোকি কান্ডটাকে যদি মধুচন্দ্রিমা বলা যায়, তাহলে এখনের সময়টাই বাস্তবতা জিদানের জন্য।


    লিগে রিয়ালের পিছিয়ে থাকার সবচেয়ে বড় কারণ বোধ হয় ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর ফর্মহীনতা। ১৪ ম্যাচে জালের ঠিকানা খুঁজে পেয়েছেন মাত্র ৪ বার। যার চরিত্রগত স্বভাবই গোল করা, তার জন্য এমন পরিসংখ্যান বেমানান। আবার ফুটবল মাঠে পরিসংখ্যানের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্যই হল, পরিসংখ্যান মিথ্যাবাদী। চ্যাম্পিয়নস লিগে নিজেকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে গেলেও, লা লিগার রোনালদোর জন্য পরিসংখ্যানটাকেও মিথ্যাবাদী অপবাদ দেওয়া যাচ্ছে না। মাঠের খেলাতেও বিবর্ণ মনে হয়েছে রোনালদোকে।

    একজন খেলোয়াড়ের জন্য পুরো দলের নুয়ে পড়ার যুক্তিটা আর যাই হোক রিয়াল মাদ্রিদের মতো ক্লাবের সাথে খাপ খায় না। আলভারো মোরাতাকে ক্লাব ছাড়া করার ব্যাপারটিও তাই এসে যায় রিয়ালের ফর্মহীনতার বিশ্লেষণ করতে বসলে। রোনালদোর জায়গায় যাদের গোল করার কথা ছিল, তারাও সুবিধা করতে পারছেন না তেমন। মার্কো আসেনসিও, লুকাস ভাসকেজদের ওপর খুব বেশি দোষ চাপানো যায় না। তবে করিম বেনজেমার দায়টা এবার চোখে পড়ার মতোই মনে হচ্ছে।


    রোনালদো, বেনজেমা, বেল, ইস্কোর মতো খেলোয়াড় থাকতে জিদানের মোরাতাকে বিক্রি করার সিদ্ধান্তের পেছনে কারণগুলো তাই সহজেই বোঝা যায়। ভবিষ্যৎ আঁচ করতে না পারার দোষটা কোচের কাঁধেই বর্তায়। কিন্তু এমন খারাপ সময়ের প্রয়োজনটাও বোধ হয় জরুরীই ছিল জিদানের কোচিং ক্যারিয়ারের জন্য! আহামরি কৌশল না, বরং দলের সঠিক সমণ্বয়ই ছিল জিদানের কোচিং বৈশিষ্ট্য। নিজের সেই ‘কমফোর্ট জোন’ থেকেই জিদানকে বের হতে হবে এখন। সেই পাজেল যদি রুবিক্স কিউব হয়, তাহলে ফ্রেডরিখ মেথডটাও জানাই আছে জিদানের। শুধু কিউব রোটেশনের নতুন ধারাটায় মন দিতে হবে তাঁকে। জিদানের পরিবর্তনটা তাই সময় নিচ্ছে খানিকটা।  

    কিছুদিন আগে মার্সেলো একবার বলেছিলেন, ‘আমরা সবকিছুই ঠিক ঠাক করছি। কেবল গোলটাই হচ্ছে না। আমি জানিনা এখান থেকে উতরানোর উপায় কী!’। এই উপায়টাই এখন বাতলে দিতে হবে জিদানকে। এই কাজ জিদানের চেয়ে ভালো আর কে পারবেন?

    ২০১৬ তে রিয়ালের দায়িত্ব বুঝে নেওয়ার পর জিদানের প্রতিপক্ষ ছিল দেপোর্তিভো লা করুনা। ধুঁকতে থাকা একটা দলকে সাফল্যের চূড়ায় নিয়ে গিয়েছিলেন এরপরই। কাল আবারও সেই দেপোর্তিভোর সাথেই খেলা রিয়ালের। জিদানের নতুন চক্রের শুরুটাও হতে হবে সেই পুরনো জায়গা থেকেই।