'প্রার্থনা' করুন, রান করুন
প্রথম দিনে ১৪টি, দ্বিতীয় দিনে ১৪টি। মিরপুরের পিচে দুইদিনেই পড়েছে ২৮টি উইকেট। ব্যাটসম্যানদের জন্য রীতিমতো বধ্যভূমি এটা, শুধু দিগ্বিদিক ছুটছেন যেন সবাই! এই টার্নিং ও অসম বাউন্সের উইকেটে ব্যাটিং করতে করতে বা খেলা দেখতে দেখতে আপনার মনে হতেই পারে, এখানে টিকে থাকার উপায় কী! রোশেন সিলভার কাছে আছে খুব সহজ উত্তর। প্রার্থনা!
‘ব্যাট করতে যাওয়ার আগে আমার মনে হয়, প্রার্থনাই সবচেয়ে উপযুক্ত কাজ’, দ্বিতীয় দিনশেষে সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন ৫৮ রানে অপরাজিত থাকা সিলভা।
পরেই অবশ্য নিজের কৌতুকটা ধরিয়ে দিয়েছেন, ‘আমি আসলে কৌতুক করছি। তবে আপনি যদি এ উইকেটে ভাল বলের মুখোমুখি হয়ে যান, আপনার কিছুই করার থাকবে না। আপনি দ্রুতই দুই-একটা উইকেট হারিয়ে ফেলতে পারেন। আপনাকে আলগা বল থেকে অবশ্যই রান করতে হবে।’
এই আলগা বলে স্কোরিং-ই গড়ে দিচ্ছে মূলত পার্থক্য। বোলারদের ক্ষেত্রে সফল হতে যেমন ধারাবাহিক থাকতে হবে, ব্যাটসম্যানদের কাজটা সুযোগের অপেক্ষায় থাকা। সে সুযোগটা অবশ্য আসবে না সহসাই। প্রথম ইনিংসের চেয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে শ্রীলঙ্কা ছিল আরও বেশি আক্রমণাত্মক। বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার প্রথম ইনিংসের প্রথম ২০ ওভারে দুইদলই আক্রমণাত্মক শটে ছিল কাছাকাছি, তবে দ্বিতীয় ইনিংসে শ্রীলঙ্কা সেটা বাড়িয়ে দিয়েছে অনেক। মূলত ব্যাক অব আ লেংথ থেকে ব্যাকফুটের দিকে বেশি নজর ছিল তাদের। রোশেন সিলভার ৫৮ রানের মাঝে কাট শট থেকেই এসেছে সবচেয়ে বেশি ২০ রান।
এ উইকেটে তিনশ রানটাকেও অসম্ভব মনে হচ্ছে এ ম্যাচে জোড়া ফিফটি করা সিলভার কাছে, ‘আমার মনে হয় না এই উইকেটে ৩০০-এর বেশি রান করা সম্ভব। এটা “কমন সেন্স”, কিন্তু ক্রিকেট “ফানি গেম”। আমরা তাদেরকে ১০০(১১০) রানে অল-আউট করেছি, আর আমরা ৩০০-এর বেশি রান (লিড) করতে চেয়েছি, যেটা আমরা করেছি। আগামীকাল সকালে আমরা যতোখানি সম্ভব রান যোগ করার চেষ্টা করবো।’
নিজের ক্যারিয়ারেও সিলভা এতোদিন চেষ্টা করে গেছেন টেস্ট দলে সুযোগ পাওয়ার। শতাধিক প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলা সিলভার এটি মোটে তিন নাম্বার টেস্ট। প্রথম পাঁচ ইনিংসের চারটিতেই তিনি ছাড়িয়েছেন ফিফটি। এর পেছনের পরিশ্রমের কথাও জানালেন তিনি, ‘এখানে আসার আগে আমরা কঠোর পরিশ্রম করেছি। আমরা জানতাম কেমন কন্ডিশন ও বোলিং আক্রমণের মুখোমুখি আমরা হতে যাচ্ছি। আমি মানসিকভাবে প্রস্তুত ছিলাম। তবে ঘরোয়া পর্যায়ে আমি যেসব রান করেছি, আন্তর্জাতিকে তা আমাকে সহায়তা করবে না।’
রোশেন সিলভার এই শেষ কথাটা মিরপুরের উইকেটে ব্যাটিংয়ের মতোই। সহায়তা নেই, যা আছে শুধুই বোলারদের জন্য। আর হ্যাঁ, প্রার্থনার উপায়টা তো আছেই!