• বাংলাদেশ-শ্রীলংকা
  • " />

     

    বাংলাদেশ ক্রিকেটের সঙ্গে কাজ করতে আর 'আগ্রহী' নন সুজন

    বাংলাদেশ ক্রিকেটের সঙ্গে কাজ করতে আর 'আগ্রহী' নন সুজন    

    বাংলাদেশ ক্রিকেটের সঙ্গে আর কাজ করতে ব্যক্তিগতভাবে আগ্রহ পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন। ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে হার ও শ্রীলঙ্কার সঙ্গে টেস্ট সিরিজ হারের পর টি-টোয়েন্টি সিরিজের আগে এমন কথা বললেন তিনি। 

    ‘ব্যক্তিগতভাবে আমি আর আগ্রহী না। আমার আসলে বাংলাদেশ ক্রিকেটের সঙ্গেই কাজ করতে ইচ্ছে করছে না। আমার আসলে নোংরা লাগছে সত্যি কথা বলতে গেলে ওইভাবে। এতবছর বাংলাদেশ ক্রিকেটের সঙ্গে কাজ করছি, বাংলাদেশের উন্নতির জন্যই কাজ করছি। এখানে আমার কোনো স্বার্থ নাই। আমি আর আগ্রহী না।’

    ‘নিদাহাস কাপে বোর্ড ঠিক করবে। কারণ পজিশনটা তো বোর্ড আমাকে দিয়েছে। কাজ করব না এই কথা কখনই বলতে চাই না। কিন্তু বাঙালি কেউ কাজ করলে সেটা আসলে সবচেয়ে বড় সমস্যা। আমি এখনো আছি টিকে- এটাই সবচেয়ে বড় কথা বাংলাদেশ হেরে যাওয়ার পরে। চন্ডিকা যখন প্রথম আসল। অনেক বড় বড় কোচ আসার পরও খারাপ রেজাল্ট হয়েছে শুরুতে। খারাপ রেজাল্ট আমি নিতেই পারি। বাংলাদেশ খারাপ খেলছে এটা আমাদের পরিকল্পনার ভুল হতে পারে। কিন্তু আরও গল্প তো আছে।’

     

     

    ঢাকা টেস্টে মোসাদ্দেক হোসেনের না খেলা ও ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে আবাহনীর হয়ে তার খেলা নিয়ে সংবাদমাধ্যমে ওঠা সমালোচনা সহ সবকিছুকেই ‘নোংরা’ বলে সুজন মন্তব্য করেছেন, ‘সবকিছুই। আমার কথা হচ্ছে সব কিছুই। এটা আসলে বলার কিছু নাই। আপনারাও জানেন, আমরাও জানি। নোংরা বলতে গেলে, সংবাদমাধ্যমে যেভাবে লেখা হয়। আমাদের ক্রিকেটের বড় অন্তরায় হচ্ছে- সংবাদমাধ্যমেরও একটা ব্যাপার আছে যে, আমরা এতো “ফিশি” হয়ে যাচ্ছি আসলে। এখন মিডিয়া “ফিশি”। মিডিয়ার কারণে আমাদের ক্রিকেট আটকে আছে কিনা সেটাও দেখতে হবে।’



    ‘আমি তো ঈশ্বর না। আমি তো খালেদ মাহমুদ সুজন। আমি খুবই সামান্য একটা মানুষ। আমি মনে করি আমার সামর্থ্য (বলতে), আমি এখানে দাঁড়িয়ে কাজ করেছি, মানুষ স্বীকার করুক না করুক আমি এটা ভালোবাসি। আমি যখন শুরু করেছি আপনারা(সংবাদকর্মীরা) হয়ত তখন খুব ছোট। জানেন না, হয়ত জানার কথাও না। আমি যখন শুরু করি ১২-১৩ বছর বয়সে। অন্য কিছু নিয়ে কথা বলা আমার মেজাজ খারাপ হইতে পারে। টেকনিক্যাল হয়ত খারাপ হইতে পারি। কিন্তু অন্য বিষয় নিয়ে যখন কথা বলে তখন এটা আমাকে খুবই আহত করে।’

    ‘সত্যি কথা বলতে গেলে যখন (সংবাদমাধ্যমে) আসে যে, আমি আবাহনীর হেড কোচ বলে আমি মোসাদ্দেককে খেলাই নাই এই কারণে যে আবাহনীতে খেলার জন্য। যখন জাতীয় স্বার্থ নিয়ে কথা বলে তখনই এটা খুবই আহত করে। আমি মনে করি না বাংলাদেশের থেকে আবাহনী বা অন্য কিছু আমাকে স্পর্শ করতে পারে। জীবনেও ছুঁতে পারবে না, ছুঁতে পারেওনি। এগুলো নিয়ে যখন কথা বলা হয় তখন আহত হই খুব। তখন মনে হয় এত বছর ক্রিকেটের সঙ্গে থেকে আসলে কী লাভটা হলো। মোসাদ্দেক আর আবাহনী যদি বাংলাদেশের ম্যাচ হারার কারণ হয়ে যায়- তাহলে খুব কঠিন আসলে।’

    তবে এসব নিয়ে সংবাদমাধ্যমে ওঠা সমালোচনা তিনি মেনে নিচ্ছেন না, ‘না, সংবাদমাধ্যমের দাবি মানছি না। আমি বলতে চাচ্ছি , আপনারা এটা দাঁড় করাতে চান। চন্ডিকা চলে গেল কেন? এটা দাঁড় করানো হয়েছে। আমরা তো বাচ্চা খোকা না এখন। সবাই তো বড় হয়েছি। অনেক কিছু দাঁড় করানো হয়। আমার পেছনে যদি লেগে থাকা হয়, আমি কোনদিন ভালো করলেও ভাল হব না। এত বছর খালি ভাল করতে তো শুনি নাই। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বলেন, সংবাদমাধ্যম বলেন। আজকে এমনও শুনেছি যে রাস্তায় গেলে আমাকে মারও খেতে হতে পারে। তো ক্রিকেট খেলার জন্য মার খেতে হলে এটা তো বিশ্রী আসলে। কথার কথা বলতেছি।’

     

     

    নিজের “বেসিক ফিল” সুজনকে বলছে, ‘ক্রিকেট আমরা এতবছর ধরে খেলছি। এখন এত গসিপিং! মিডিয়াতে ভাল খারাপ সবই হবে। কিন্তু কিছু কিছু জিনিসে নেতিবাচক হয়ে যাচ্ছি। ক্রিকেটের জন্য (যা) খুব কঠিন। একটে ছেলেকে তুলে নিয়ে আসা এত সহজ না। একটা ডেভলপমেন্ট থেকে শুরু করে তাকে তৈরি করে তোলা অনেক কঠিন আসলে। কোচ কাজ করে, অনূর্ধ্ব-১৯ দল, এইচপি- অনেক কিছু। এই কথাগুলো যদি ঠিক না হয় তাহলে আমার মনে হয় না বাংলাদেশের ক্রিকেট অনেক দূর যাবে আসলে।’

    ‘এটা মনে হয় যে আমি বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য ভাল কিছু করতেছি না। তাহলে আমার এখানে থেকে লাভটা কি। স্বার্থের জন্য আসিনি। আমার যা আছি আমি খুব ভালো আছি। আমি খুব খুশি, এখানে চাকরি করি, যতটুকু পাই, বা যেভাবে চলি।’