• লা লিগা
  • " />

     

    আট গোলের ম্যাচে জিতল রিয়াল মাদ্রিদই

    আট গোলের ম্যাচে জিতল রিয়াল মাদ্রিদই    

    এস্তাদিও বেনিতো ভিয়ামারিন ম্যাচের ৯১ মিনিট পর্যন্তও ছিল কানায় কানায় পূর্ণ। রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে ম্যাচ থেকে কিছু পাওয়ার সুযোগ তখনও টিকে ছিল  রিয়াল বেটিসের জন্য। কিন্তু করিম বেনজেমার গোলে সেই সুযোগটাও হাতছাড়া হল এর কিছুক্ষণ পর। পুরো ম্যাচে দলকে সমর্থন যুগিয়ে যাওয়া গ্যালারিও খালি হয়ে গেল নিমিষেই।  আট গোলের ম্যাচ শেষ পর্যন্ত রিয়াল মাদ্রিদ জিতল ৫-৩ ব্যবধানে। 

     

     


    বেটিস সমর্থকদের আশায় বুক বাধার অবশ্য অনেক কারণই ছিল। ১১ মিনিটেই মার্কো আসেনসিও গোল করে রিয়ালকে এগিয়ে দেওয়ার পর শুরুর ধাক্কাটা ভালোভাবেই সামাল দিচ্ছিল বেটিস। সাজানো আক্রমণে বাঁ দিক দিয়ে  বেশ কয়েকটি ভালো সুযোগও তৈরি করেছিল তারা। ২৬ মিনিটে হুয়াকিনের নেওয়া একটি ফ্রিকিকও পরিণত হতে পারত গোলে, কিন্তু কেইলর নাভাসের কাছে গোলবঞ্চিত হয়েছেন তিনি। বেটিসের আক্রমণ সামলাতে তখন কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছিল রিয়ালকে। এর উপর হ্যামস্ট্রিংয়ে টান পড়ে মার্সেলো ৩০ মিনিটে মাঠ ছাড়লে কাজটা আরেকটু কঠিন হয়ে যায় লা লিগা জয়ীদের জন্য। 



    মার্সেলো মাঠ ছাড়ার পর সমতাসূচক গোলের জন্য খুব বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি বেটিসকে। ৩৩ মিনিটে কর্নার থেকে হেড দিয়ে গোল করে ঘরের দলকে সমতায় ফেরান আইসা মেন্দি। প্রথম গোলের রেশ না কাটতেই আরও একবার রিয়ালের জালে বল জড়ায় বেটিস। জুনিয়র ফির্পোর নেওয়া শট গোললাইন থেকে ক্লিয়ার করতে গিয়ে নিজের জালেই ঢুকিয়ে দেন নাচো ফার্নান্দেজ।  প্রথমার্ধে ২-১ গোলে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় বেটিস।

    বিরতির পর বেটিসের অগোছালো খেলার সুযোগ নিয়ে সমতায় ফেরার জন্য আরও মরিয়া হয়ে ওঠে রিয়াল। ৫০ মিনিটেই কর্নার থেকে হেডে গোল করে আরও একবার দলকে ম্যাচে ফিরিয়ে আনেন সার্জিও রামোস। অধিনায়কের নেতৃত্বে সমতায় ফেরার পর ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে পুরো দলই।

    ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো, আসেনসিও, গ্যারেথ বেলদের দিয়ে আক্রমণভাগ সাজিয়েছিলেন জিনেদিন জিদান। শেষ পর্যন্ত তাকে হতাশ করেন কেউই। গ্যারেথ বেল গোলের দেখা পাননি, কিন্তু রামোসের গোলের পর বেটিসকে চেপে ধরার কাজটা করেছিলেন তিনিই। ৫৪ আর ৫৭ মিনিটে অবশ্য দুবারই গোলবঞ্চিত হয়েছেন গোলরক্ষক আন্টোনিও আদানের কাছে। কিন্তু ৫৯ মিনিটে আর রিয়ালকে আটকে রাখতে পারেননি আদান। ডান দিক থেকে করা লুকাস ভাসকেজের ক্রস থেকে নিখুঁত টাচে আদানের জালে আরও একবার বল জড়ান আসেনসিও। ম্যাচে আসেনসিওর প্রথম গোলটি ছিল হেডে করা। রোনালদো শট করেছিলেন, বেটিস গোলরক্ষকও ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। ফিরতি বল থেকেই গোল করেছিলেন আসেনসিও। চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ ম্যাচে দারুণ খেলার উপহার হিসেবে একাদশে সুযোগ পেয়েছিলেন, জোড়া গোল করে দলে নিয়মিত হওয়ার দাবিটা বেশ জোরে সোরেই আসেনসিও আজ জানান দিয়ে রেখেছেন। 

    ৬৫ মিনিটে রিয়ালের কাজটা আরও সহজ বানিয়ে দিয়েছিলেন রোনালদো। কাসেমিরোর কাছ থেকে পাওয়া বল ফার্স্ট টাচে রিসিভ করে ডিবক্সের ভেতর থেকে গোলার মতো শটে বল জড়িয়ে স্কোরলাইন ৪-২ করেছিলেন পর্তুগিজ। লিগের প্রথম অর্ধে গোলের দেখা পেতে কষ্ট করতে হলেও, এই বছর এরই মধ্যে ৮ গোল করে ফেলেছেন রোনালদো। চলতি বছরে তার চেয়ে বেশি গোল নেই কারোই। 

    শেষ দিকে বেনজেমার বদলি হয়ে রোনালদো মাঠ ছাড়ার আগেই অবশ্য খেলায় প্রাণ ফিরিয়ে এনেছিল বেটিস। আরেক বদলি সার্জিও লিওন গোল করে ৮৪ মিনিটে খেলার স্কোর বানিয়ে ফেলেন ৪-৩! সমর্থকদের দেখানো স্বপ্নটা শেষ পর্যন্ত আর নিজেরাই বাস্তবে পরিণত করতে পারেননি বেটিস খেলোয়াড়রা। আরেক বদলি বেনজেমাই হেসেছেন শেষ হাসিটা। ৮ ম্যাচ পর গোল করে, ৮ গোলের খেলায় রিয়ালের জয়েও অবদান রেখেছেন বেনজেমা।