প্লেয়ার রেটিং : আর্জেন্টিনা-ক্রোয়েশিয়া
আর্জেন্টিনা-ক্রোয়েশিয়া ম্যাচের প্লেয়ার রেটিং
আর্জেন্টিনা
উইলি কাবায়ারো ১/১০
আইসল্যান্ডের ম্যাচেও ইঙ্গিত পেয়েছিলেন, আজও শুরু থেকেই পাচ্ছিলেন। কোনোকিছু থেকেই শিক্ষা নেননি। নিচ থেকে বিল্ড আপ করেই খেলার চেষ্টা করে গেছেন। নিয়মিত গোলরক্ষক নন, তবুও ওই ভুলটা অমার্জণীয়। নিজেকেই হয়ত ক্ষমা করতে পারবেন না। প্রথম গোলের পরই খেলার চেহারা পালটে গেছে।
নিকোলাস অটামেন্ডি ৩/১০
থ্রি ম্যান ডিফেন্সের খেলার অভ্যাস তেমন নেই। সেটা বোঝা গেছে আজও। একজন যোগ্য সহকারি দরকার ছিল অটামেন্ডি। কাউকেই পাননি। নিজেও ভালো করেননি।
গ্যাব্রিয়েল মের্কাদো ২/১০
পেরিসিচের সঙ্গে পেরে ওঠেননি। হাস্যকর সব ভুল করেছেন। তার যোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন উঠতে পারে।
নিকোলাস টালিয়াফিকো ৪/১০
প্রথমার্ধে ক্রোয়েশিয়ার আক্রমণগুলো ভালোভাবেই পড়তে পেরেছিলেন। কিন্তু আক্রমণে দলকে সাহায্য করতে পারেননি মোটেই। ফরোয়ার্ড পাসিংয়ে দুর্বলতা স্পষ্ট ছিল। প্রথম গোলের পর রক্ষণের মনোযোগও হারিয়েছেন।
এদুয়ার্দো সালভিও ৫/১০
প্রথমার্ধে তিনিই আর্জেন্টিনার হয়ে সবচেয়ে বেশি বলের দেখা পেয়েছেন। ইভান স্ট্রিনিচকে ভালো ভুগিয়েছেন। কিন্তু সবকিছুর পর ভালো ক্রসটাই করতে পারেননি আর।
হাভিয়ের মাসচেরানো ৪/১০
খেলায় পুরনো ধারটা নেই একদমই। রাকিটিচ, মদ্রিচদের বিপক্ষে একেবারেই সাদামাটা ছিল তার খেলা। তার খেলাও ভুগিয়েছে আর্জেন্টিনাকে।
এনজো পেরেজ ৪/১০
ভাগ্য বদলে দেওয়ার সুযোগ এসেছিলেন দলের। ফাঁকা বারেও গোল করতে পারেননি। বলের পজেশন হারিয়েছেন বারবার। বাকি মিডফিল্ডারদের সঙ্গে সমন্বয় ছিল না পেরেজের খেলায়।
মার্কোস আকুনিয়া ৩/১০
লেফট উইংব্যাক হিসেবে খেলতে নেমেছিলেন। শারীরিক সক্ষমতা দিয়ে খেলেছেন। বুদ্ধিদীপ্ত পাস বা লং বলের যোগান দিতে পারেননি, সেটাই ছিল দায়িত্ব।
ম্যাক্সিমিলিয়ানো মেজা ৪/১০
দলগতভাবে বাজে খেলার দিনে খুব বেশি কিছু করার ছিল না মেজার। আর্জেন্টিনার যে দুটি আক্রমণ সফল হতে পারত, তার দুইটি তার কাছে গিয়েছিল। ভালো ফিনিশের অভাবে ভুগেছে আর্জেন্টিনা।
সার্জিও আগুয়েরো ২/১০
আক্রমণে প্রায় একাই পড়েছিলেন। আগুয়েরোকে অবশ্য আলাদা করে দোষ দেওয়া কঠিন। বলের যোগানই তো পাননি তিনি!
লিওনেল মেসি ২/১০
আরও একটি হতাশাজনক পারফরম্যান্স। ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে মিডফিল্ডেও নেমে আসেননি। সতীর্থদের কাছ থেকে পাসও পাননি। মেসি হয়ে ছিলেন নিজের ছায়া। পুরোপুরি অকার্যকর হয়ে টানা দ্বিতীয় ম্যাচ পার করলেন।
বদলি
গঞ্জলো হিগুয়াইন ৫/১০
মাঠে নামার পরই ভালো একটা আক্রমণে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। মাঝমাঠেও নেমে এসে বল দখলের লড়াইয়ে যোগ দিয়েছিলেন।
ক্রিশ্চিয়ান পাভন ৪/১০
আগের ম্যাচের মতো এবার আর বদলি নেমে প্রভাব ফেলতে পারেননি তেমন।
পাউলো দিবালা ৩/১০
নিজেকে প্রমাণ করার সময় পেয়েছেন অল্প। সেটাও কাজে লাগাতে পারেননি।
ক্রোয়েশিয়া
ড্যানিয়েল সুবাসিচ ৬/১০
ক্লিনশিট রাখলেও বাজে ডিস্ট্রিবিউশনে বেশ কয়েকবার দলকে ঝামেলায় ফেলেছিলেন। তবে ৬৪ মিনিটে মেজার একটা শট দারুণভাবে রুখে দিয়েছিলেন। তা হলে হয়ত তখনই সমতায় ফিরত আর্জেন্টিনা।
সিমে ভ্রাসালকো ৭/১০
ডানপ্রান্তে পুরোটা ম্যাচেই ছিলেন নির্ভুল। রক্ষণে ভিদা-লভ্রেনদের যেমন সাহায্য করেছেন, তেমনি পেরিসিচ-রেবিচদের বল জুগিয়েছে আক্রমণভাগে। তাকে ঠেকাতে রীতিমত হিমশিমই খেতে হয়েছিল নিকালোস তালিয়াফিকোকে। মানজুকিচ সহজ হেড মিস না করলে একটি অ্যাসিস্টও পেতে পারতেন তিনি।
দেয়ান লভ্রেন ৭/১০
এক দুর্ভেদ্য দেয়ালই হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। ম্যাচের শুরুতেই আগুয়েরোর একটি শট দুর্দান্তভাবে ব্লক করে দলকে রেখেছেন সমতায়। আগুয়েরো, হিগুয়াইন, মেজা- কাউকেই এক চুল জায়গা পর্যন্ত দেননি তিনি।
দোমাগজ ভিদা ৬.৫/১০
শুরুতেই এনজো পেরেজের গোলমুখী শট ঠেকিয়েছেন ব্লক করে। এরপর যেন নিখুঁত ‘স্লাইড ট্যাকেল’ করার এক পসরাই সাজিয়ে বসলেন। আর্জেন্টাইন আক্রমণভাগের কেউই পেরে উঠেননি স্বর্ণকেশী এই ডিফেন্ডারের সাথে। বেশ কয়েকবার অবশ্য ভুল পাস দিয়েছিলেন নিজের রক্ষণ থেকেই, কিন্তু সেগুলোর শাস্তি পেতে হয়নি আজ।
ইভান স্ট্রিনিচ ৬/১০
রক্ষণে বেশ ভালোই ছিলেন। প্রথমার্ধে মেজা, পরে দিবালাকেও রুখে দিয়েছেন দক্ষভাবে। তবে আক্রমনে সেরকম স্বচ্ছন্দ ছিলেন না।
মার্সেলো ব্রোজোভিচ ৭/১০
মেসি-আগুয়েরোদের বোঝাপড়া ঠেকানোর মূল দায়িত্বটা পড়েছিল তার কাঁধেই। ভিদা-লভ্রেনদের সাহায্য করার কাজটা করেছেন নির্ভুলভাবে। হলুদ কার্ড দেখলেও তার পারফরম্যান্সে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলতেই পারেন মাইকেল গ্রিজিনিচ।
আনতে রেবিচ ৭.৫/১০
শুরু থেকেই সাম্পাওলির নড়বড়ে রক্ষণভাগকে তটস্থ রেখেছিলেন। ‘হাই প্রেসিং’ করে ওটামেন্ডিদের একাধিক ভুল পাসে বাধ্য করেছিলেন। বাকি ছিল গোল পাওয়াটাই। ৫৩ মিনিটে উইলি কাবায়েরোর ভুলে পেয়ে গেলেন সেটিও। ৫৭ মিনিটে ইনজুরিতে পড়ে উঠে যাওয়ার সময় তাকে দাঁড়িয়ে অভিবাদন জানাচ্ছিলেন ক্রোয়েশিয়ার সমর্থকেরা।
লুকা মদ্রিচ ৯/১০
নিঃসন্দেহে ক্রোয়েশিয়ার সেরা খেলোয়াড় আজ। মাঝমাঠ নিয়ন্ত্রণ করেছেন, নিচে নেমে মেসিদের থামাতে সাহায্য করেছেন ব্রোজোভিচকেও। ভুল পাস দিয়েছেন মাত্র ৩টি। ৮১ মিনিটে দুর্দান্ত এক গোলে জয় নিশ্চিত করেছেন তিনিই।
ইভান রাকিটিচ ৮.৫/১০
খুব সম্ভবত ক্রোয়েশিয়ার জার্সিতে তার সেরা পারফরম্যান্স। ৬৪ মিনিটে গোলের সামনে থেকে মেসিকে গোলবঞ্চিত করেছেন। মাঝমাঠে তার মুভমেন্ট, পাসিংয়ে রীতিমত দিশেহারাই হয়ে পড়েছিলেন মাসচেরানোরা। ৮৬ মিনিটে দুর্দান্ত এক ফ্রিকিকে কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন আর্জেন্টিনার গোলপোস্ট। তবে দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ে আর্জেন্টিনার কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দিয়েছেন তিনিই।
ইভান পেরিসিচ ৭/১০
ম্যাচের ৫ মিনিটে আরেকটু হলেই গোলটা পেয়েই গিয়েছিলেন। কিন্তু ম্যাচের বাকিটা সময় আক্রমণভাগে বেশ নিরবই ছিলেন। বিশেষ করে বার কয়েক তার ভুল ক্রসে গোলের সুযোগ তৈরিতে ব্যর্থ হতে হয়েছে ক্রোয়েশিয়াকে।
মারিও মাঞ্জুকিচ ৬.৫/১০
৩২ মিনিটে গোলের একেবারে সামনে থেকে হেড করেছেন বাইরে। গতির অভাবে ক্রোয়েশীয়দের প্রতি আক্রমণেও তেমন সুবিধা করতে পারেননি।
বদলি
ভেদ্রান করলুকা
জয় নিশ্চিত দেখে ৯০ মিনিটে শততম বারের জন্য দেশের জার্সিতে নেমেছিলেন। স্বাভাবিকভাবেই খেলায় প্রভাব ছিল না তার।
মাতেও কোভাসিচ ৭/১০
ম্যাচের শেষ ১০ মিনিটে নামলেও মূল একাদশে নামার এক জোর দাবিই দিয়ে রেখেছেন। ৯৩ মিনিটে রাকিটিচের গোল এসেছে তার পাস থেকেই।
আন্দ্রে ক্রামারিচ ৬/১০
৬০ মিনিটে রেবিচের জায়গায় নেমেছিলেন। বাঁ-প্রান্তে ঝলক দেখিয়েছেন কয়েকবার, কিন্তু ‘ফাইনাল থার্ড’-এ সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগেছেন বেশ। ক্রসিং ছিল বেশ দূর্বল।