যে 'কিং' হতে চাননি নুরুল
উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান হিসেবে অ্যাডাম গিলক্রিস্টকে অনুসরণ করতেন নুরুল হাসান? অন্তত ব্যাটিংয়ের ধরনে তার মতো হতে চাইতেন কি? অ্যান্টিগা টেস্টে তার ফিফটিটায় গিলক্রিস্টের খেলার অনেকদূরের হলেও একটু ছায়া হতে পেতে পারেন আপনি, দ্রুত সময়ে রান তোলায়। সেই গিলক্রিস্টের সঙ্গে একটা তালিকায় যোগ দিলেন নুরুল। শুধু গিলক্রিস্ট নন, এ তালিকায় আছেন বীরেন্দর শেওয়াগ, জেমস অ্যান্ডারসনরাও। অবশ্য এ তালিকাটাই এমন, থাকতে চান না কেউই! এক টেস্টের দুই ইনিংসেই প্রথম বলেই আউট হতে চানই বা কে, তাও আবার কোনও রান না করেই! এরা হয়েছেন।
টেস্ট ইতিহাসের ২১তম ব্যাটসম্যান হিসেবে ‘কিং পেয়ার’ পেলেন নুরুল। কিংস্টন টেস্টে প্রথম ইনিংসের পর দ্বিতীয় ইনিংসেও মুখোমুখি হওয়া প্রথম বলেই এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরেছেন এই উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান। দ্বিতীয় বাংলাদেশী হিসেবে এই রেকর্ডটা সঙ্গী হলো তার। ২০০৭ সালে ঢাকায় ভারতের বিপক্ষে জাভেদ ওমর বেলিম দুই ইনিংসেই কোনও রান না করেই প্রথম বলেই আউট হয়েছিলেন।
সাম্প্রতিক কিং পেয়ার
নুরুল হাসান, বাংলাদেশ, বিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ২০১৮
নুয়ান প্রদীপ, শ্রীলঙ্কা, বিপক্ষ পাকিস্তান, ২০১৭
জেমস অ্যান্ডারসন, ইংল্যান্ড, বিপক্ষ ভারত, ২০১৬
ধাম্মিকা প্রসাদ, শ্রীলঙ্কা, বিপক্ষ পাকিস্তান, ২০১৫
রঙ্গনা হেরাথ, শ্রীলঙ্কা, বিপক্ষ পাকিস্তান, ২০১৪
বীরেন্দর শেওয়াগ, ভারত, বিপক্ষ ইংল্যান্ড, ২০১১
রায়ান হ্যারিস, অস্ট্রেলিয়া, বিপক্ষ ইংল্যান্ড, ২০১০
জাভেদ ওমর, বাংলাদেশ, বিপক্ষ ভারত, ২০০৭
অ্যাডাম গিলক্রিস্ট, অস্ট্রেলিয়া, বিপক্ষ ভারত, ২০০১
নুরুলের আগে শেষ এই ‘ভাগ্য’ হয়েছিল শ্রীলঙ্কার নুয়ান প্রদীপের। ২০১৭ সালে আবুধাবিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে দুই ইনিংসেই প্রথম বলেই প্রদীপ আউট হয়েছিলেন। ইতিহাসে প্রথম এই রেকর্ডটা গড়েছিলেন ইংল্যান্ডের উইলিয়াম অ্যাটাওয়েল, ১৮৯২ সালে, সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে।
২০১৬ সালে এই তালিকায় যোগ দেওয়ার পর বেশ একটা ‘অভ্যর্থনা’ পেয়েছিলেন অ্যান্ডারসন। গিলক্রিস্ট টুইট করেছিলেন, “ক্লাবে স্বাগতম, জিমি। কলকাতায় ২০০১ সালে প্রথম অস্ট্রেলিয়ান হিসেবে এই অভিজ্ঞতা হয়েছিল আমার।” আর শেওয়াগ টুইটে বলেছিলেন, “২০১১ সালে কিং পেয়ার দিয়ে অ্যান্ডারসন আমাকে আর্যভট্টকে শ্রদ্ধা জানাতে বাধ্য করেছিল। আজ তারও একটা কিং পেয়ার হলো।”
অ্যান্ডারসনের কথা আলাদা করে বলার অবশ্য আরেকটা কারণ আছে। ইতিহাসে তিনিই এখন পর্যন্ত একমাত্র ক্রিকেটার, যার কিং পেয়ার দেওয়া ও নেওয়া- দুই ধরনের অভিজ্ঞতায় আছে। শেওয়াগের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার রায়ান হ্যারিসকেও ‘কিং পেয়ার’-এর ‘তিক্ত’ অভিজ্ঞতা দিয়েছিলেন অ্যান্ডারসন, নিজে এর শিকার হওয়ার আগে।