• বাংলাদেশের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর
  • " />

     

    'রাসেল-ম্যানিয়া' আর মাহমুদউল্লাহর দিন

    'রাসেল-ম্যানিয়া' আর মাহমুদউল্লাহর দিন    

    তামিম-সাকিবের হর্ষ-বিষাদ 

    ক্যারিয়ারে ১০ম ওয়ানডে সেঞ্চুরি করলেন তামিম ইকবাল। তার ১০ সেঞ্চুরির মধ্যে বাংলাদেশ জিতল ৭ বারই। ২০১০ সালে ঢাকায় ইংল্যান্ড, ২০১৩ সালে হাম্বানটোটায় শ্রীলঙ্কা ও ২০১৭ সালে ওভালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তার সেঞ্চুরির পরও হেরেছিল বাংলাদেশ। 

    এ ইনিংসে তামিম খেলেছেন ১৬০ বল, তার ক্যারিয়ারে যা সবচেয়ে বেশি। ডাম্বুলায় গত বছর ১২৭ রানের ইনিংস খেলতে তামিম নিয়েছিলেন ১৪২ বল। তবে এই দীর্ঘ ইনিংসই তাকে দিয়েছে ম্যাচসেরার পুরস্কার। এ নিয়ে ১৩ বার ম্যাচসেরা হলেন তামিম। বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি ১৮ বার ম্যাচসেরা হওয়ার রেকর্ড এদিনই ৯৭ রানে আউট হওয়া সাকিবের, ওয়ানডে ক্যারিয়ারে এই প্রথম নড়বড়ে নব্বইয়ে কাটা পড়লেন যিনি। ২০০৯ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচজেতানো ৯২ রানের ইনিংসে অবশ্য অপরাজিত ছিলেন সাকিব। 

    এবং মাহমুদউল্লাহরও দিন

    ব্যাটিংয়ে শেষ বলে নেমে মেরেছেন চার। তাকে বোলিংয়েও আনেননি মাশরাফি। তবে মাহমুদউল্লাহ সরব ছিলেন ফিল্ডিংয়ে। ক্রিস গেইলের রান-আউটের থ্রোটা ছিল তার, শেষমুহুর্তে স্ট্রাইক-প্রান্ত থেকে দিক বদলে নন-স্ট্রাইক প্রান্তে ছুঁড়েছিলেন। আর মাশরাফির বলেই নিয়েছেন তিনটি ক্যাচ। এক ম্যাচে বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি চারটি ক্যাচের রেকর্ড সৌম্য সরকারের। তিনটি করে ক্যাচ নিয়েছেন মাহমুদউল্লাহসহ ছয়জন। দুইবার তিনটি করে ক্যাচ নিলেন মাহমুদউল্লাহ, এর আগে নিয়েছিলেন জুনাইদ সিদ্দিক ও সাব্বির রহমান। তবে এই তিনটি ক্যাচ দিয়ে ওয়ানডেতে ৫৫টি ক্যাচ হলো মাহমুদউল্লাহর, বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি ক্যাচের রেকর্ডে তিনি ছুঁলেন যার বলে এই তিনটি ক্যাচ নিয়েছেন, সেই মাশরাফিকেই। ৪৪টি ক্যাচ নিয়ে তিনে আছেন সাকিব, চারে থাকা তামিমের ক্যাচ একটি কম। 

    রিভিউ, নাকি নয়? 

    সাব্বির ক্রিজ ছেড়েছিলেন, তবে তার আগেই শেই হোপ ফেলে দিয়েছেন বেইলস। আম্পায়ার জোয়েল উইলসন শুধু সাব্বিরের ক্রিজ ছাড়াটাই দেখলেন, কখন ছেড়েছেন সেটা দেখলেন না! সরাসরি দিলেন আউট, টিভি আম্পায়ারের কাছে রিভিউ না চেয়েই! পরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ইনিংসে দেবেন্দ্র বিশুর বিপক্ষে এমন একটা স্টাম্পডের আবেদন করলেন মুশফিক, উইলসন অবশ্য এবার ভুল করলেন না, ডাকলেন টিভি আম্পায়ারকেই। 
    এই রিভিউয়ের মারপ্যাঁচে পড়লো দুই দলই, ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটিং ইনিংসে। ক্রিস গেইল এলবিডব্লিউ হতে পারতেন, রিভিউটা নিলেন না মাশরাফি। মূলত মুশফিক ও মিরাজের অনাপত্তিতেই নিতে পারলেন না তিনি। শেই হোপও রিভিউ নিলেন না রুবেলের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে, অথচ হক-আই দেখাচ্ছিল, বেঁচেই যেতে পারতেন তিনি! 

    রাসেল-ম্যানিয়া

    মুস্তাফিজকে প্রথমে টেনে যে ছয়টা মারলেন, সেটা আক্ষরিক অর্থেই ছেড়ে গেল মাঠ! নতুন বল আনা হলো, এবার স্ট্রেইট ড্রাইভে চার মারলেন রাসেল। সেই শটে কাবু হলেন তিনজন। বোলার মুস্তাফিজ পা সরিয়ে নিলেন, নন-স্ট্রাইকে থাকা অ্যাশলি নার্স আরেকপাশে সরে গেলেন, আর ডাক করতে হলো আম্পায়ার এস রভিকে। মাশরাফিকেও তুলে মারতে গিয়ে অবশ্য শেষ হয়ে গেল রাসেলের ইনিংস, তার শটটা এবার শুধু আকাশেই সময় কাটাল অনেক্ষণ, মাঠ দূরের কথা, ছাড়াতে পারলো না সীমানাই! 

    গোলাম যখন রাজা 

    দুইটি করে চার-ছয়ে আলজারি জোসেফ করলেন অপরাজিত ২৯ রান। ওয়ানডেতে এগার নম্বরে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্কোর। জোসেফ ছাড়িয়ে গেলেন ২০১১ সালে ভারতের বিপক্ষে ইন্দোরে করা সুনীল নারাইনের অপরাজিত ২৭ রানের ইনিংসকে। বল পেলে হয়তো জোসেফ ছাড়িয়ে যেতে পারতেন জোয়েল গার্নারকেও। ১৯৮৩ বিশ্বকাপে ওল্ড ট্রাফোর্ডে ভারতের বিপক্ষে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাটিংয়ের ‘গোলাম’ করেছিলেন ৩৭ রান। গার্নার, জোসেফ ও নারাইন- ‘গোলাম’দের তিন রাজসিক ইনিংসের পরও ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রতিবারই হেরেছে ম্যাচ।