• " />

     

    তোমার হল শুরু, আমার হলো সারা...

    তোমার হল শুরু, আমার হলো সারা...    

    স্যার ডন ব্র্যাডম্যান তখন পুরোদস্তুর অবসর জীবন যাপন করছেন। ক্রিকেট ছেড়েছেন অনেক আগেই, শুধু টিভির পর্দাতেই যা একটু চোখ রাখা হয়। এমন সময় টিভিতে এক ব্যাটসম্যানের ওপর চোখ আটকে গেল। "আরে, এই ছেলে তো আমার মতো ব্যাট করে"- স্যার ডন সবিস্ময়ে বলে উঠেছিলেন। সেই ছেলে একদিন মহীরুহ হয়েছে। কিন্তু কে জানত, শচীন টেন্ডুলকার ও ডন ব্র্যাডম্যানকে ইতিহাস অনেক আগেই এক সুতোয় গেঁথে ফেলেছে!

     

    ব্র্যাডম্যান জীবনের শেষ ইনিংস খেলেছিলেন আজ থেকে ঠিক ৬৭ বছর আগে। আর ঠিক ২৫ বছর আগে এই দিনেই টেন্ডুলকার পেয়েছিলেন নিজের প্রথম আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরি।

     

    ১৯৪৮ সালের ওভালের এই দিনটা ক্রিকেট পুরাণেরই অংশ হয়ে গেছে। ইংল্যান্ডের সঙ্গে নিজের শেষ টেস্ট যখন খেলতে নেমেছিলেন, ব্র্যাডম্যানের গড় তখন ১০১.৩৯। আর চার রান করলেই ইতিহাসের দ্রুততম ক্রিকেটার হিসেবে সাত হাজার রান ছুঁয়ে ফেলতেন।

     

     

    গড়টাও হয়ে যেত ঠিক ১০০। ইংল্যান্ড প্রথম ইনিংসে ৫২ রানে অলআউট, ব্র্যাডম্যানের সামনে মঞ্চ প্রস্তত। ব্যাট করতে যখন নামলেন, ওভাল দাঁড়িয়ে তাঁকে সম্মান জানাল। স্পিনার এরিক হোলিসের প্রথম বলে রান হলো না। দ্বিতীয় বলটা ছিল গুগলি, ব্র্যাডম্যান সেটা বুঝতে পারলেন না। ব্যাট-প্যাডের ফাঁক দিয়ে হয়ে গেলেন বোল্ড। সাত হাজার রান আর করা হলো না, গড়ও থেমে গেল ৯৯.৯৪ এ। অনেকেই বলেন, ব্র্যাডম্যান চোখে জল নিয়ে সেদিন মাঠ ছড়েছিলেন। যদিও অস্ট্রেলিয়া কিংবদন্তি পরে সেটা অস্বীকার করেছেন।

     

    ঠিক ৪২ বছর পর ইতিহাস লেখা হলো সেই ইংল্যান্ডেই। ওল্ড ট্রাফোর্ডে মুখোমুখি ভারত-ইংল্যান্ড। প্রথম ইনিংসে টেন্ডুলকার করেছিলেন ৬৮ রান। দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতের সামনে লক্ষ্য ৪০৮ রান। টেন্ডুলকারের বয়স তখন মাত্র ১৭ বছর ১১২ দিন। ১১৯ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংসে দলকে পরাজয় থেকে বাঁচিয়ে দিলেন, ম্যাচসেরাও হলেন।

     

     

    শুধু মুশতাক মোহাম্মদ ও পরে মোহাম্মদ আশরাফুলই টেন্ডুলকারের চেয়ে কম বয়সে আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন। বালকবীরের বেশে সেই যে বিশ্বজয়ের আভাস দিলেন শচীন, সেটা পরে অনুদিত হয়েছে রূপকথার আখরে। একে একে সব রেকর্ডই এসে মিলেছে টেন্ডুলকারের চরণতলে।