• ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    হাডার্সফিল্ডকে পাত্তাই দিল না চেলসি

    হাডার্সফিল্ডকে পাত্তাই দিল না চেলসি    

    চেলসিকে ঢেলে সাজাচ্ছেন নতুন কোচ মারুসিও সারি। সেই প্রক্রিয়াটা যে সময় নেবে সেটা জানা কথা। ম্যানচেস্টার সিটির কাছে কমিউনিটি শিল্ডের ম্যাচে পাত্তা না পেলেও, সারির ছন্দময় খেলার একটা ছাপ ছিল চেলসির খেলায়। সেই ছাপটা দেখা গেল প্রিমিয়ার লিগের প্রথম ম্যাচেও। হাডার্সফিল্ড টাউনের বিপক্ষে জিততে কোনো বেগই পেতে হয়নি চেলসিকে। ৩-০ গোলের জয় দিয়ে চেলসিতে সারির যুগের সূচনা হয়েছে।

    নাপোলি থেকে চেলসিতে যোগ দেওয়ার সময় জর্জিনিয়োকে সঙ্গে করে নিয়ে এসেছিলেন সারি। তার কৌশলে জর্জিনিয়ো কেন গুরুত্বপুর্ণ সেটার প্রমাণ মিলল প্রথম ম্যাচেই। জর্জিনিয়ো খেলেছেন দুর্দান্ত। গোলও করেছেন একটা, চেলসিতে প্রথমার্ধেই দুই গোলের লিড এনে দেওয়া গোলটাই তার করা। তার আগে চেলসিকে এগিয়ে দিয়েছিলেন এনগোলো কান্তে। গোলদাতার নামটা অবাক করাই। বিশ্বকাপের অন্যতম সেরা মিডফিল্ডার ক্লাবের জার্সিতে ফিরেও ছিলেন সপ্রতিভ। তবে আর যাই হোক তার কাছ থেকে হয়ত গোলটা আশা করেননি সারি! তাকে চমকে দিয়েই ৩৪ মিনিটে গোলটা করেন তিনি।


    এডেন হ্যাজার্ড শুরু থেকেই ছিলেন না। তার জায়গায় খেলছিলেন উইলিয়ান। ভয়ঙ্করও হয়ে উঠছিলেন সময়ে সময়ে। ৩৪ মিনিটে বাঁ প্রান্ত দিয়ে করলেন ক্রস, সেটাই খুঁজে পেয়েছিল কান্তেকে। শটটা অবশ্য ভালোমতো করতে পারেননি কান্তে, তাতে কিছু যায় আসেনি যদিও। ওই শটই জড়ায় হাডার্সফিল্ডের জালে। গত মৌসুমে প্রতিপক্ষের ডিবক্সের সবমিলিয়ে মাত্র ১৯ বার বলে টাচ করেছিলেন কান্তে। সেই মিডফিল্ডারই নতুন কোচের অধীনে প্রথম ম্যাচেই করলেন গোল। সারির ফুটবল কেমন হবে সেটারও একটা জলছাপ পাওয়া গেল কান্তের গোলে।


    বিরতির আগেই চেলসির কাজটা আরও সহজ হয়ে যায়।  ৪৫ মিনিটে গোলের দিকে এগুতে থাকা মার্কোস আলোন্সোকে ফাউল করে বসেন ক্রিস্টফার শিন্ডলার। স্পটকিক থেকেই গোল করেন জর্জিনিয়ো। দুই গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর খেলার পুরো নিয়ন্ত্রণই ছিল চেলসির কাছে। জর্জিনিয়ো, কান্তেদের সমন্বয় ভালো কিছুরই ইঙ্গিত দিচ্ছে চেলসিকে। কিন্তু আলভারো মোরাতার ফর্মটা রয়ে গেছে আগের মতোই। হাডার্সফিল্ডের বিপক্ষেও মোরাতা ছিলেন নিজের ছায়া হয়ে।  

    চেলসির গোলবারের নিচে দাঁড়িয়েছিলেন কেপা আরিজাবালাগা। বিশ্বের সবচেয়ে দামী গোলরক্ষককে প্রথম ম্যাচে তেমন কোনো পরীক্ষাই দিতে হয়নি। প্রথমার্ধে ডেভিড লুইজ আর অ্যান্টোনিও রুডিগার বেশ কয়েকটি ক্রস বিপদ হওয়ার আগেই ফিরিয়ে দিয়েছিলেন দক্ষতায়। দ্বিতীয়ার্ধে সেই সুযোগগুলোও তৈরি করা হয়নি হাডার্সফিল্ডের। কেপাও তাই কাটিয়েছিলেন অবসর সময়, কর্নার থেকে হাডার্সফিল্ডের একটা হেড ঠেকানো বাদে তেমন কিছু করতে হয়নি স্প্যানিশ গোলরক্ষককে। 

    দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই ব্যবধান বাড়ানোর ইঙ্গিত দিচ্ছিল চেলসি। ৫৬ মিনীটে রুডিগারের হেড লক্ষ্যেই ছিল, কিন্তু গোলরক্ষককে হারাতে পারেননি। এর মিনিট খানেক পর আলোন্সোর ওভারহেড কিক ফেরত আসে বারপোস্টের মাথায় লেগে। চেলসির জয়ের ব্যবধান বাড়ে এডেন হ্যাজার্ড নামার পর। মাঠে নামার কয়েক মিনিটের ভেতরই নিজের স্বভাবসুলভ গতি দিয়ে হাডার্সফিল্ডের রক্ষণ ছিন্ন ভিন্ন করে দিয়ে পাস বাড়ান পেদ্রোর উদ্দেশ্যে। দারুণ এক ফিনিশে গোল করে পেদ্রো বাড়ান জয়ের ব্যবধান। ৮০ মিনিটের ওই গোলে নিশ্চিত হয় চেলসির বড় জয়।

    হাডার্সফিল্ডের বিপক্ষে জয় নিয়ে অবসহ খুব বেশি আত্মতৃপ্তিতে ভোগার সুযোগ পাচ্ছে না চেলসি। স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে পরের সপ্তাহেই আবার বড় পরীক্ষা দিতে হবে চেলসিকে। প্রতিপক্ষ আর্সেনাল। আর দলবদলের বাজারে কেনার সুযোগ শেষ হয়ে গেলেও, এখনও দল ছাড়ার সুযোগ আছে ইংলিশ লিগে খেলা খেলোয়াড়দের। হ্যাজার্ডকে ধরে রাখাটাও তাই সারির জন্য একটা চ্যালেঞ্জই।