• ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    ওয়েস্টহামকে উড়িয়ে বার্তা দিল লিভারপুল

    ওয়েস্টহামকে উড়িয়ে বার্তা দিল লিভারপুল    

    সালাহ-মানে-ফিরমিনোরাই গত মৌসুমে কেড়ে নিয়েছিলেন লিভারপুলের সব শিরোনাম। রক্ষণ যেমন তেমন, আক্রমণে মানেই ভয়ঙ্কর লিভারপুল। নতুন মৌসুমের প্রথম ম্যাচেই সেই পুরনো গল্পটাই চলল। রক্ষণের সমস্যাটাও বোঝা গেল না।  যেখানে শেষ করেছিল লিভারপুল, সেখান থেকেই করল শুরু। অ্যানফিল্ডে নতুন মৌসুমের শুরুটা এর চেয়ে ভালো হতে পারত না কপদের। ওয়েস্টহ্যামকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে লিভারপুল। প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাসে শুরুর ম্যাচে এটি লিভারপুলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বড় জয়। 

    সহজ জয়ে জোড়া গোল করেছেন সাদিও মানে। তার আগে নতুন মৌসুমে লিভারপুলের গোলের খাতা খুলেছেন আগের মৌসুমের সর্বোচ্চ গোলদাতা, মোহাম্মদ সালাহ। পুরো ম্যাচেই লিভারপুলের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি ওয়েস্টহ্যাম। শুরু থেকেই দেখা মিলেছে লিভারপুলের চমৎকার সব আক্রমণের। ১৪ আর ১৭ মিনিটে দুইবার ভালো দুইটি পাস বাড়িয়েছিলেন জেমস মিলনার। প্রথমবার মানে বলের নাগালটা পাননি, আর পরেরবার বাঁ দিক থেকে করা ক্রসে পা ছোঁয়ালেই হত গোল। রবার্তো ফিরমিনো মিস করেছেন সুবর্ণ সুযোগটা। সেটা নিয়ে ফিরমিনোর আক্ষেপ থাকলেও লিভারপুল সমর্থকেরা মনে রাখবেন না। অবশ্য ফিরমিনো নিজেও আক্ষেপ করার সময় পাননি। দুই মিনিট পরই গোলটা করেন সালাহ।   



    আক্রমণটা গুছিয়ে দিয়েছিলেন নতুন যোগ দেওয়া নাবি কেইতা। ডিবক্সের বাইরে থেকে পাস দিয়েছিলেন বাঁ প্রান্তে, অ্যান্ডি রবার্টসনকে। ক্রস, সেখান থেকেই ট্যাপ ইন করে গোল, এগিয়ে গেল লিভারপুল।  মিনিট ছয়েক পর অ্যালেক্সান্ডার আর্নল্ডের ফ্রি কিক ঠেকিয়ে দিয়ে দলকে ম্যাচে টিকিয়ে রাখেন লুকাস ফাবিয়ানস্কি। ২৫-৩০ মিনিট ওই সময়টুকুতেই কিছুক্ষণের জন্য ম্যাচে ছিল ওয়েস্টহ্যাম। মার্কো আর্নাতুভিচকে লং বল পাঠিয়েছিলেন মাসুয়াকু। দারুণ দক্ষতায় সেই বলের নাগাল নিলেও, ফিনিশটা করতে পারেননি অস্ট্রিয়ান স্ট্রাইকার। ওই কর্নার থেকেই প্যারাগুইয়ান ডিফেন্ডার বালবুয়েনার হেডও গোলরক্ষক অ্যালিসনকে টলাতে পারেনি এতোটুকুও। 

    এরপর ম্যাচের গল্পটা এগিয়েছে একই তালে। লিভারপুলের আক্রমণ আর ওয়েস্টহ্যামের প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা। সেই চেষ্টায় যে পুরনোপুরি ব্যর্থ ম্যানুয়েল পেলেগ্রিনির দল তাতো স্কোরলাইনই বলে দিচ্ছে। সালাহ নিজের গোলসংখ্যা প্রথমদিনেই  বাড়িয়ে নিতে পারতেন আরও। ৩৬ মিনিটে হেড করেছিলেন একটা, ফাবিয়ানস্কি ঠেকিয়ে দিয়েছেন সেটা। এরপর ফাবিয়ানস্কি করেছেন দুর্দান্ত আরেকটি সেভ। ফিরমিনোর ক্রস থেকে গোলটা প্রায় করেই ফেলেছিলেন সালাহ, কিন্তু সালাহ মেরেছিলেন সরাসরি ফাবিয়ানস্কির দিকেই। তাই আর গোল পাওয়া হয়নি। 

    যদিও প্রথমার্ধ শেষের আগেই মানে গোল করে ব্যবধান বাড়ান। হেন্ডেরসনের শুরুর একাদশে না থাকায় মিলনার ছিলেন অধিনায়ক। তিনি এবার গোলের উৎস, মানেকে প্রায় ফাঁকা জালে বল জড়াতে কষ্ট করতে হলো না একদমই। ৫৩ মিনিটে মানে নিজের দ্বিতীয় গোল করলে জয়টা সময়ের ব্যাপারই হয়ে দাঁড়ায় লিভারপুলের জন্য। ফিরমিনোর কাছ থেকে বল রিসিভ করার সময় মানে ছিলেন অফসাইড পজিশনে। যদিও রেফারির চোখ এড়িয়ে গেছে সেটা, গোল পেয়েছে লিভারপুল। 

    জয় নিশ্চিত জেনেই শেষদিকে বেশ কয়েকটি পরিবর্তন করেন ইয়ুর্গেন ক্লপ।  হেন্ডেরসন, শাকিরির অবশ্য পারেননি। কিন্তু মাঠে নামার এক মিনিটের মধ্যেই নিজের প্রথম টাচেই গোল করেন ড্যানিয়েল স্টারিজ। সেই গোলটা স্টারিজের জন্য যতখানি স্বস্তির, স্বস্তির লিভারপুল সমর্থকদের জন্যও। নতুনদের মধ্যে আজ ছিলেন কেইতা আর অ্যালিসন। গোলরক্ষককে তেমন কিছু করতে হয়নি, তবে কেইতা ছিলেন অসাধারণ। পুরনোরাও আছেন ফর্মে, সবমিলিয়ে একটা বার্তা লিভারপুল পাঠিয়েই রাখল প্রথম ম্যাচেই। এবার কি অন্যরকম কিছু হবে?