পগবাঃ ইউরোপের সোনালী বালক
পোস্টটি ২০৬৬ বার পঠিত হয়েছেসাম্প্রতিক কালের সবচে নাটকীয় ট্রান্সফার উইন্ডো তে সবার উপরে নিঃসন্দেহে পল পগবার ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে পাড়ি জমানো। সকল জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে, পুরোনো ক্লাবে ফিরে আসেন এই ফরাসী মিড ফিল্ডার।২৩ বছর বয়সী এই ফুটবলার ইতিমধ্যে ফুটবল বিশ্বে বেশ পাকা ভাবেই নিজের স্থান করে নিয়েছেন। মিড ফিল্ড দাপিয়ে বেড়ানো এই তরুন কে কতটুকু চিনি আমরা? আসুন জেনে নেই পল পগবা সম্পর্কে ,
প্যারিস শহর থেকে প্রায় ৫০ মাইল দূরে উত্তরে ফ্রান্সের Lagny-sur-Marne শহরে ১৯৯৩ সালের ১৫ মার্চ পল পগবা জন্মগ্রহন করেন। তাঁর পুরো নাম পল লেবিল পগবা। ছয় বছর বয়স থেকেই পগবা তার ফুটবল জীবনে প্রবেশ করেন একটি লোকাল ক্লাব US Roissy-en-Brie এর মাধ্যমে। পরবর্তীতে তিনি চলে যান US Torcy তে যা ছিল তৎকালীন সময়ের বেশ নাম করা ইউথ একাডেমী। এখান থেকেই মূলত তার দিন বদল শুরু হয়। এক বছর পরেই তাকে প্রফেশনাল ফুটবল ক্লাব এ খেলার জন্য লে আভ্রে (Le Havre) তে আমন্ত্রন জানানো হয়।
কয়েক সিসন পরেই লে আভ্রে ইউথ টিম নজরে আসতে থাকে আর সে সাথে সকলের নজরে আসেন পল পগবা। ২০০৯ সালে পগবা তার ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ইউথ ক্লাবে যোগ দেওয়ার কথা জানান দেয়। কিন্তু লে আভ্রে'র সাথে তার এগ্রিমেন্ট থাকা সত্বেও অনেকটা বিতর্কীত ভাবেই তিনি ইউনাইটেড ইউথ একাডেমী তে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এই সময়ে পগবার ডিফেন্সে এগিয়ে আসে US Torcy, যারা লে আভ্রে'র আনা অভিযোগ এর বিরুদ্ধে বলেন, তারাও ইউনাইটেডের এই পথে হেঁটে এসেছেন অতীতে। সব শেষে পগবা ইউনাইটেড ইউথ একাডেমী তে যোগদান করেন এবং ২০১১-১২ তে তার ইউথ একাডেমীর সফলতা তাকে নিয়ে আসে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড রিসার্ভস টিম এ। পল পগবার অভিষেক হয় হাফ টাইম এর পর সাবস্টিটিউট হিসেবে Leeds United এর বিপরীতে ফুটবল লিগ কাপে, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১১, ফার্গুসন এর সময়কালে হাতে গোনা কয়েকটি ম্যাচ খেলার পর পর ই হাজারো রেড ডেভিলসের মনে আঘাত দিয়ে পগবা তাঁর পুরনো ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটান। নিজের টিম কে বিশেষ কিছু জানতে না দিয়ে Turin এর উদ্দ্যেশ্যে চলে যান। জুভেন্টাস এর সাথে প্রথম মৌসুমে তার কেবল ৫ টি গোল থাকলেও তার দক্ষতা, কৌশল চোখের আড়াল হয় নি কারো।
তার লম্বা পা এর জন্য তাকে “ পল দ্যা অক্টোপাস” আর তার আক্রমনাত্মক খেলার জন্য “পগবুম ( POGBOOM)” নাম দেওয়া হয়। ২০১৩ সালে ইউরোপের তরুন খেলোয়ার হিসবে পগবা পান “ইউরোপ’স গোল্ডেন বয়” উপাধি । তার প্রথম অংশগ্রহনে জুভেন্টাস Serie A এর প্রথম স্থান অধিকার করে। তাছাড়া তার ঝুলিতে আরো আছে একটি Coppa Italia, তিনটি Italia Supercoppa আর ২০১৪-১৫ সালে পগবার হাত ধরেই জুভেন্টাস চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে যায় কিন্তু বার্সেলোনার কাছে পরাজিত হয়। তাছাড়া ২০১৪ সালে পগবা, FIFA World Cup Best Young Player সম্মান লাভ করে।
পগবার ট্রান্সফার উইন্ডোঃ
মৌসুম |
তারিখ |
পুরোন টিম |
নতুন টিম |
মার্কেট ভ্যালু |
ট্রান্সফার ফি |
২০০৭-০৮ |
জুলাই ১,২০০৭ |
US Torcy |
Le Havre U19 |
- |
বিনামূল্যে |
২০০৯-১০ |
জুলাই ১, ২০০৯ |
Le havre U19 |
Man United U18 |
- |
- |
২০১১-১২ |
জুলাই ১, ২০১১ |
Man United U18 |
Man United U23 |
- |
- |
২০১১-১২ |
জানুয়ারী ১, ২০১২ |
Man United U23 |
Man United FC |
- |
- |
২০১২-১৩ |
অগাস্ট ৩, ২০১২ |
Man United FC |
Juventus |
৩.৫০ মিলিয়ন পাউন্ড |
বিনামূল্যে |
২০১৬-১৭ |
অগাস্ট ৯, ২০১৬ |
Juventus |
Man United FC |
৭০ মিলিয়ন পাউন্ড |
১০৫ মিলিয়ন পাউন্ড |
তিন বছর আগে ৮৩ মিলিয়ন পাউন্ডে রিয়েল মাদ্রিদে যোগ দিয়ে গ্যারেথ বেল হয়েছিলেন সবচেয়ে দামী প্লেয়ার। কিন্তু সর্বকালের সবচেয়ে দামী প্লেয়ারের এই উপাধী ও ছিনিয়ে নিলেন পগবা। ১০৫ মিলিয়ন পাউন্ডে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে যোগ দেন তিনি। প্রিমিয়ার লিগে, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের দ্বিতীয় খেলায় সাউথাম্পটনের বিপরীতে পল পগবা আবারো পা রাখেন ওল্ড ট্রাফোর্ডে, মরিনহোর ম্যানেজিং এ। পল পগবা শুধু ফুটবল মাঠেই নয়, তার মাঠের বাইরের জীবনেও বেশ প্রাণবন্ত বলে জানা যায়। তার ব্যাক্তিগত জীবন নিয়ে এখন পর্যন্ত বড় কোন স্ক্যান্ডাল শোনা যায় নি। ফুটবল থেকে ব্যাক্তিগত, দুই জীবনেই "পল পগবা" গোল্ডেন বয়।
- 0 মন্তব্য