• ক্রিকেট

রিভার্স ওয়াইন্ড ২

পোস্টটি ২৭২৯ বার পঠিত হয়েছে
'আউটফিল্ড’ একটি কমিউনিটি ব্লগ। এখানে প্রকাশিত সব লেখা-মন্তব্য-ছবি-ভিডিও প্যাভিলিয়ন পাঠকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজ উদ্যোগে করে থাকেন; তাই এসবের সম্পূর্ণ স্বত্ব এবং দায়দায়িত্ব লেখক ও মন্তব্য প্রকাশকারীর নিজের। কোনো ব্যবহারকারীর মতামত বা ছবি-ভিডিওর কপিরাইট লঙ্ঘনের জন্য প্যাভিলিয়ন কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না। ব্লগের নীতিমালা ভঙ্গ হলেই কেবল সেই অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবেন।

 

১৯৮৩ সালের বিশ্বকাপ চলছে। গ্রুপ পর্বে মুখামুখি ভারত-জিম্বাবুয়ে। জিম্বাবুয়ে তখন এখনকার মতই মাঝে মাঝে তাক লাগিয়ে দেওয়ার মত দল। এই যেমন সেদিন ভারতের টপ অর্ডারকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিল জিম্বাবুইয়ান বোলাররা। ঘটনা তাইলে খুলেই বলি। টসে জিতে ব্যাট করতে নামা কপিল দেবের ভারত মাত্র ১৭ রানেই হারিয়ে ফেলে সেরা ৫ ব্যাটসম্যানকে। সবাই ভাবছিল ১০০ করাই বুঝি ভারতের জন্য অনেক দুরের পথ। কিন্তু খেলাটা তো ক্রিকেট। তখনই সব বলে দেওয়া যাচ্ছিল না। প্রথমে রজার বিনিকে নিয়ে হাল ধরার চেষ্টা করেন। দুজন মিলে যোগ করেন ৬০ রান। দলের স্কোর থেকে তখনও গরিবি তকমাটা যায় নি। দলের রান যে মোটে তখন ৭৭।

এই অবস্থাতেই রজার বিনিও আউট হয়ে যান। মাত্র ১ রান যোগ হতেই রবি শাস্ত্রীও প্যাভিলিয়নের দিকে হাটা দেন। কপিল তখন অসহায় হয়ে দেখছিলেন সঙ্গীদের আসা যাওয়া। ৭৮ রানে ৭ উইকেট নেই। দর্শকরা তখন আক্ষেপ করছিলেন পয়সা উসুল করার জন্য। বোধকরি তাদের এসব হা হুতাশ কপিলের কানে গিয়েছিল। সেখান থেকেই শুরু করলেন ওয়ানম্যান আর্মির লড়াই। জিম্বাবুয়েন বোলারদের উপর ক্ষেপে গেলেন। শুরু করলেন ঝড়। বল ছুটতে থাকে মাঠের চারদিকে। তাকে যোগ্য সঙ্গ দিচ্ছিলেন মদনলাল।

কপিলের পিটুনির চোটে ১০০ নিয়ে টানাটানি থাকা ভারতের স্কোর এক সময় ২০০ ছাড়িয়ে যায়। প্রথমবারের মত সেঞ্চুরির দেখা পান কপিল দেব। সেঞ্চুরি করে আরও বিধ্বংসী হয়ে উঠেন। ওভারের পর ওভার গড়ায় কিন্তু কপিলের ঝড় আর থামে না। যখন ৬০ ওভার শেষ হয়ে গেল তখন দেখা গেল কপিল দেবের নামের পাশে জ্বলজ্বল করছে ১৭৫ রানের এক অনবদ্য ইনিংস। শেষ জুটিতে কিরমানিকে নিয়ে যোগ করেছিলেন ১২৬ রান। তাতে কিরমানির অবদান মাত্র ২৪। যেখানে কপিল একাই করেছিলেন ১৭৫ সেখানে দলের বাকি ব্যাটসম্যানরা মিলে করেছেন মাত্র ৮৯ রান। তার প্রায় অর্ধেক। এই পরিসংখ্যান দিয়েও কপিলের ইনিংসের মহাত্মা বুঝানো সম্ভব না। জাস্ট সিম্পলি চিন্তা করেন ৭৮ রানে ৭ উইকেট নেই সেখান থেকে একক অবদানে ২৬৬ পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া।

আর হ্যাঁ বলাই তো হয় নি ভারতের দুই ওপেনারই ডাকের পেয়ার মারছিল। কপিলের এই ইনিংসটাকে ভিভের পরেই দ্বিতীয় সেরা ওয়ানডে ইনিংস হিসাবে বিবেচনা করা হয়। এই রকম ওয়ানম্যান শো হালে তেমন দেখা যায় না। কপিল ১৭৫ না করলে ভারত গুটিয়ে যেত ১০০ রানের আগেই। ২৬৬ রানের টার্গেট দিলেও ভারতকে জয় পেতে ভালই বেগ পেতে হয়েছিল। যথেষ্ট ফাইট দিয়েছিল জিম্বাবুয়ে। ৩১ রানে ম্যাচ হারলেও অনেক ফাইট করেছিল।