তেমন ভালো না খেলেও ইকুয়েডরের বিপক্ষে ২-০ এ জয় সেলেসাওদের
পোস্টটি ৮১৬২ বার পঠিত হয়েছে-->যদি আপনি স্কোর কিংবা জয় দেখেই সন্তুষ্ট হন তবে বলবো আপনি ভুল নক্ষত্রে বসবাস করছেন। আপনি কখন স্কোর বা জয় দেখে খুশি হতে পারতেন জানেন? যদি ব্রাসিলের অবস্থা বর্তমান আর্জেন্টিনার মত হতো। দুঙ্গার সময় ব্রাসিলের ভালো খেলার চেয়ে জয় পেলেই আপনি খুশি হতে পারতেন তাতে কোন সমস্যা ছিলো না। কারন ব্রাসিলের তখন ম্যাচ জিতে বিশ্বকাপে চান্স পাওয়াটা খুব দরকার ছিলো..! মনে রাখবেন এখন ব্রাসিল ধরাছোঁয়ার বাহিরে..! অতএব, এই ম্যাচ হারলে তাদের কোন সমস্যা হতো না। কিন্তু যেটা দরকার ছিলো তা হলো ভালো খেলা এবং নিজেদের মধ্যে কম্বিনিশন বিল্ড আপ করা, যা এই ম্যাচে তেমন দেখা যায় নাই। এটা অন্তত দরকার বিশ্বকাপ অবধি....!
-->দুটো ভালো ফিনিশিং ই আপনাকে জয় এনে দিতে পারে..! এর জন্য আহামরি তেমন খাটতে হয় না...! যার প্রমান আজকের দুই সুন্দর গোল। কিন্তু ওই জয়ের অন্তরালে নিশ্চুপ ভাবে নিহিত হয়ে রয়েছে কিছু ভুল যা শুধরানো খুবই দরকার এখন, কারন সামনে বিশ্বকাপ..! পাওলিনহোর সুন্দর ফিনিশিং এ তার ভুলগুলো অন্তরালে ঢেকে গেলেও তার এখন ই উচিত এগুলো রিকভার করা..!
-->বিশ্বকাপ নিশ্চিত হওয়াতে সেলেসাওদের এই লাগাম ছাড়া খেলা তেমন কটাক্ষ মনে না হলেও যদি এভাবেই খেলে থাকে বাকী ম্যাচগুলো তাহলে ইউরোপের যেকোন দলের থেকে নিশ্চিত মারা খাবে..! গোলকিপার, ডিফেন্স এবং ফরোয়ার্ড নিয়ে কোন কথা না থাকলেও মিডফিল্ড নিয়ে আজও বড় সংশয় থেকে যায় এবং মিডফিল্ডারদ্বয় যতই খারাপ খেলুক তাদের যে টিটে বেঞ্চ করাবেন না তা একপ্রকার ২০০ শতাংশ নিশ্চিত..!
-->এবার আসি ম্যাচের অভন্তরীন কিছু কথা নিয়ে..!!
======================================
-->পুরো ম্যাচে সেলেসাওদের তেমন আহামরি কোন এটাক ই ছিলো না..! আর ইকুয়েডের তো শুধু বল পাস করতে এসেছে এমনটাই মনে হয়েছিলো। কোন এটাক ই ছিলো না তাদের..!
-->ম্যাচের ৮ মিনিটেই পাওলিনহোর ৩ জন ডিফেন্ডারকে বোকা বানিয়ে নেওয়া শটটি গোল হলে আজ ব্রাসিলের স্কোর আরও উন্নত হতে পারতো..!
-->৯ মিনিটে ডি বক্সের বাহির থেকে উইলিয়ানের ডান পায়ের জোড়ালো শটটি বার ঘেঁষে মিস হয়ে যায়..!
-->৩৩ মিনিটে ক্যাসমিরোর থেকে বল পেয়ে জেসুস জোড়ালো শট নিলে তা প্রতিহিত করে ইকুয়েডরের গোলকিপার...!
-->৫৬ মিনিটে রাইট উইং ঘেঁষে আলভেজ এগিয়ে এসে ক্রস করে ডিবক্সে থাকা জেসুসের দিকে। ভেসে আসা বলটিকে হেডের মাধ্যমে গোল দিত চাইলে হয়ে যাওয়া গোলটিকে আবারও নিপুন হাতে প্রতিহিত করে ইকুয়েডরের গোলকিপার...!
-->৬৯ মিনিট। ব্রাসিল কর্ণার পেলো। আব্বুকে বললাম গোল হলে এই কর্ণার থেকেই হবে। যেই বলা সেই কাজ। উইলিয়ানের করা ভেসে আসা কর্ণার কিকটি একদম পাওলিনহোর পায়ে এসে পড়ে। বলটিকে একটু বাড়িয়ে ডান পায়ের জোড়ালো শটে ২য়ার্ধে সেলেসাওদের গোলের আনন্দে ভাসান তিনি। ক্যারিয়ারে ব্রাসিলের হয়ে ৪২ ম্যাচ খেলে ১০ গোল করেন সদ্য চাইনীজ ক্লাব থেকে বার্সায় যোগ দেওয়া এই মিডফিল্ডার..
-->খেলার বয়স ৭৬ মিনিট। মার্সেলো থেকে বল নিয়ে মিডফিল্ড দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে কৌটিনহো। উদ্দেশ্য এগিয়ে যাওয়া জেসুসের দিকে। ডি বক্সের বাহির থেকে চিপ শট দিয়ে বলটি জেসুসের দিকে এগিয়ে দেয় কৌটিনহো। দুই ডিফেন্ডারের বেড়াজালে আটকে বলটিকে আবার হেড দিয়ে পাঠিয়ে দেয় পিছনে থাকা কৌটিনহোর দিকে এবং সেখান থেকে প্রায় খালি বারে ডান পায়ের শটে গোল করে ব্রাসিলকে ২-০ গোলে এগিয়ে নিয়ে যায়..! সেই সাথে ব্রাসিলের হয়ে ক্যারিয়ারে ২৮ ম্যাচে ৮ গোল করেন এই লিভারপুলের তুর্কি..!
-->এরপর আর কোন গোল হয় নি। নিজেদের মাঠে ব্রাসিল ২-০ গোলে জয় পেয়ে মাঠ ছাড়ে এবং পয়েন্ট টেবিলে ৩৬ পয়েন্ট নিয়ে নিজেদেরকে ১ নম্বরেই রাখে টিটের শিষ্যরা..! প্রথমার্ধে ব্রাসিল ছন্নছাড়াভাবে খেললেও ২য়ার্ধে ব্রাসিল বেশ গুছালো খেলা খেলে। কেনো খেলে সেটা নিচে বলবোঃ-
-->এবার আসি প্লেয়ার ভিত্তিক পর্যালোচনায়ঃ-
================================
#গোলকিপারঃ- এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপ বাছাই ম্যাচে অন্যান্য গোলকিপারদের চেয়ে এলিসন সবচেয়ে বেশি ক্লিনশীট ধরে রেখেছে (৭টি)। অতএব, তার এভিলিটির ব্যাপারে কোন প্রশ্ন নেই। আর এই ম্যাচেও তাকে কোন পরীক্ষা দিতে হয় নি। শুধু এই ম্যাচে না। বাছাই পর্বের কোন ম্যাচেই তাকে তেমন কোন পরীক্ষা করতে হয় নি। ২৬ গোলের বিপরীতে এলিসনকে মাত্র ২ বার পরাস্থ করতে পেরেছে প্রতিপক্ষরা...! সে বেটার..!
#ডিফেন্সঃ- মিরান্ডা বাদে বাকী ৩ ডিফেন্ডারা ছিলেন সহজাত। আলভেজ কিছু দারুন ক্রস করেছিলো, মার্কু ভালোই নিজের মত আর মার্সেলোও সেইম। তবে মার্সেলোর পর পর হলুদ কার্ডে তাকে আগামী কলম্বিয়ার ম্যাচের বিরুদ্ধে দেখা যাচ্ছে না। অতএব, ডিফেন্স নিয়েও তেমন কোন সমস্যা না যদি সিলভা স্টার্ট করে মিরিন্ডার বদলে...! প্রতিপক্ষ ইকুয়েডর বলে বাঁচা গেলো, ইউরোপের কোন দল হলে মিরান্ডা নিয়ে ডিফেন্স সামলানো যাবে না..! কারন সেলেসাওদের বর্তমান টার্গেট ইউরোপ জয় করা..! অতএব, মিরান্ডা হটাও সিলভা আনো...! টিটের উচিত লক্ষ্য করা..!
#মিডফিল্ডঃ- ক্যাসা তো এসাই হে। ওর ব্যাপারে কিছু বলবো না। টু গুড। কিন্তু রেনেতো অগাস্তো। এত স্লো যে তাকে প্লটে ভাবাও মুশকিল। ওর বদলে কৌটিনহো নামার পর সেলেসাওদের অবস্থা পুরোই বদলে যায়। এটাকে বিল্ড আপে সেলেসাওরা ছিলো অসাধারন..! অতএব, অগাস্তোর বদলে কৌটিনহোকে খেলানো ফরজে আইন..! আর রইলো পাওলিনহো। গোল দিয়ে ভুলগুলো অন্তরালে চলে গেলেও টিটের নজরে মনে হয় তার ভুল দেখা পড়েছে..! ভুল পাস ছিলো অনেক..! প্রফেসর টিটের উচিত অন্তত মিডফিল্ড নিয়ে ভাবা..! কিন্তু আমাদের বলে লাভ নেই! বিশ্বকাপেও সে এই মিডফিল্ড নিয়েই খেলাবে..! কিন্তু মারা খাবে নিশ্চিত..! মিডফিল্ড টা ক্যাসা-ফ্যাবি-কৌটিদের নিয়ে তৈরী করা যেতে পারে...
#এটাকঃ- আজ সেলেসাওদের এটাক একদম ই নিষ্প্রভ ছিলো। যদিও ২য়ার্ধে কৌটিনহো নামার পর এটাক বিল্ড আপ হয়েছে বেশ ভালো ভাবেই। জেসুস কিছু মিস করলেও তার প্রতি সব দোষ দেওয়া যাচ্ছে না..! তবে নেইমার আজকে তার স্মরনকালের সেরা বাজে খেলেছে সেলেসাওদের হয়ে! একটু মিডে চেপে খেললেও আহামরি তেমন কিছু করতে পারে নি। পিএসজিতে ফ্রি রোলে খেললেও ব্রাসিলের হয়ে আজকের ম্যাচে তেমন সুবিধা করতে পারে নি। কিন্তু তার কোন বিকল্প নেই। আশা করি বেশ ভালোভাবেই কামব্যাক করবে। উইলিয়ান ও তেমন একটা ভালো খেলে নি..! এই পজিশনে কস্তা বা মৌরাকে ট্রাই করা উচিত...!
===
-->এবার বলি পার্সোনাল ব্যাপার। আমার কাছে আজ সেলেসাওদের খেলা তেমন একটা ভালো লাগে নি। টিটের উচিত বাকী ম্যাচগুলোতে দল নিয়ে বেশ ভালোভাবে এক্সপেরিমেন্ট করা..! নেক্সট ম্যাচ কলম্বিয়ার সাথে। ৫ তারিখ (দিবাগত ৬) রাত ২.৩০ মিনিটে সেলেসাওরা কলম্বিয়ার সাথে ১৬ তম বাছাই পর্বের ম্যাচ খেলতে নামবে..!
-->আশা করি এই ম্যাচের ভুলগুলো শুধরিয়ে কলম্বিয়ার সাথে স্বয়ংসম্পূর্ন সেলেসাওদের দেখতে পাবে সেলেসাও সমর্থকরা সেই কামনা সকলের...!
#গ্রান্দে_ব্রাসিল
#ফোর্সা_সেলেসাও
#ঈদ_মোবারক
#AHM80
- 0 মন্তব্য