১৪ জুন থেকে ১৫ জুলাই রাশিয়ায় বসছে ফিফা বিশ্বকাপের ২১তম আসর। ২০০৬ ফিফা বিশ্বকাপের পর প্রথমবারের মতো ইউরোপের মাটিতে অনুষ্ঠিত হবে ফুটবলের এই মহাযজ্ঞ। রাশিয়ার ১১ শহরের ১২টি স্টেডিয়ামে গড়াবে মেসি-নেইমার-রোনালদোদের ফুটবলযুদ্ধ। ১৫ জুলাই মস্কোর লুঝনিকি স্টেডিয়ামে হবে শিরোপা ফয়সালা। ইতোমধ্যে বিশ্বকাপের সবগুলো স্টেডিয়াম প্রস্তুত করে ফেলেছে রুশ সরকার।
১২টি স্টেডিয়ামের মধ্যে অনেকের নজর কেড়েছে বিশ্বকাপের ফাইনাল মঞ্চ লুঝনিকি। প্রায় ৮০ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতা সম্পন্ন এই স্টেডিয়ামটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৩৫০ মিলিয়ন ইউরো। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ৩ হাজার ৫০০ কোটির মতো।
রাশিয়ার রাজধানী মস্কোর সর্ববৃহৎ স্টেডিয়াম হিসেবে পরিচিত লুঝনিকি। মস্কোভা নদীর বাঁকে জন্মানো সুগভীর তৃণক্ষেত্র থেকে ‘লুঝনিকি’ নামটির উৎপত্তি ঘটেছে। ইউরোপীয় ঘরানার স্বল্পসংখ্যক প্রধান স্টেডিয়ামগুলোর আদলে ২০০২ সাল থেকে ফিফা অনুমোদিত ফিল্ডটার্ফ কৃত্রিম পিচ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। ২০০৮ সালের উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লীগের ফাইনালে অস্থায়ী ভিত্তিতে প্রাকৃতিক ঘাসের পিচ প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল।
১৯৫৫-৫৬ মৌসুমে সেন্ট্রাল লেনিন স্টেডিয়াম নামে স্টেডিয়ামটি নির্মাণ করা হয়। ৩১ জুলাই, ১৯৫৬ তারিখে আনুষ্ঠানিকভাবে স্টেডিয়ামের উদ্বোধন ঘোষণা করা হয়। সোভিয়েত ইউনিয়নের জাতীয় স্টেডিয়ামের মর্যাদা পেয়েছিল লুঝনিকি। পরবর্তীতে এটি রাশিয়ার জাতীয় স্টেডিয়াম হিসেবে পরিচিতি পায়।
২০১৮ বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ও ফাইনালসহ ৭টি খেলা হবে মস্কোর লুঝনিকি স্টেডিয়ামে। বিশ্বকাপ সামনে রেখে গত সাড়ে চার বছরে লুঝনিকির গায়ে লেগেছে নতুন ছোঁয়া। ৭৮০০০ থেকে বেড়ে এর দর্শক ধারণক্ষমতা এখন ৮১০০০। ছাদে বসোনো হয়েছে বিশাল মিডিয়া স্ক্রিন। লুঝনিকি মাঠে সর্বশেষ খেলা হয়েছিল ২০১৩’র মে’তে। আর নতুন রূপে সাজের পর এখানে প্রথম ম্যাচটি হলো গত শনিবার। রাশিয়া-আর্জেন্টিনার এই ম্যাচে ব্যবহার করা হয় ২০১৮ বিশ্বকাপের অফিশিয়াল বল টেলস্টার-এইটিন। লুঝনিকি স্টেডিয়ামে এ নিয়ে তৃতীয়বার করা হলো আমুল সংস্কার। ১৯৮০ অলিম্পক গেমস ও ১৯৯৯ ইউয়েফা ফাইনালের আগে দুই দফা সংস্কার করা হয় স্টেডিয়ামটি। বিশ্বের অন্যতম প্রধান স্টেডিয়ামটিতে গত ৬১ বছরে গ্যালারিতে বসে খেলা দেখেছে ৩৬ কোটি দর্শক।