গান ফিল্ডার, রিকি পন্টিং এবং ২০০৫ এশেজ!
পোস্টটি ৫২০২ বার পঠিত হয়েছেGarry Pratt, Trevor Penney এদের নাম শুনেছেন কখনো? অনেকের কাছে অপরিচিত হলেও এদের একজনের একটা রান আউট অনেক বড় অবদান রেখেছিলো ১৮ বছর পর ইংল্যান্ডের এশেজ জয়ে।
২০০৫ এশেজ। আমাদের প্রজন্মের কাছে যেটা সেরা এশেজ, সব মিলিয়ে সর্বকালের সেরা এশেজ গুলোর মধ্যে একটা। ১৯৮৬-৮৭ সাল, ১৮ বছর আগে শেষবার এশেজ জিতেছিলো ইংল্যান্ড। এর মাঝে পেরিয়ে গেছে ১৮ বছর এবং ৮টা এশেজ সিরিজ। যার প্রতিটাই জিতেছে অস্ট্রেলিয়া। তাও ৪-০, ৪-১ বা ৩-১ এর মত বড় বড় ব্যবধানে। ২০০৫ এশেজ'কে সামনে রেখে তাই অনেক আগে থেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছিলো ইংল্যান্ড। শুধু মাঠে না, মাঠের বাইরেও ছোট ছোট ব্যপার নিয়েও প্রস্তুত ছিলো তারা যেটা "Australian Way of Playing Cricket" নামে পরিচিত।
লর্ডসে প্রথম টেস্ট অস্ট্রেলিয়ার ২৩৯ রানের সহজ জয়ের পর এজবাস্টনে ২য় টেস্ট ২ রানে জিতে নেয় ইংল্যান্ড। ওল্ড ট্রাফোর্ডে শেষ ওভারে ড্র হয় ৩য় টেস্ট। চতুর্থ টেস্ট ট্রেন্ট ব্রিজে। সিরিজে ১-১ এ সমতা। প্রথমে ব্যাট করে ৪৭৭ রানে অল আউট হয় ইংল্যান্ড। সাইমন জোনস আর ম্যাথু হগার্ডের তোপে অস্ট্রেলিয়া ১ম ইনিংসে মাত্র ২১৮ রানে অল আউট হলে ফলো-অন করায় ইংল্যান্ড। আবার ব্যাট করতে নামে অস্ট্রেলিয়া। জাস্টিন ল্যাঙ্গার আর ড্যামিয়েন মার্টিনকে নিয়ে দুটি ভালো পার্টনারশিপ করে ক্রিজে অজি কাপ্তান রিকি পন্টিং। দলের স্কোর ১৫৫/২, তাঁর রান তখন ৪৮।
একটা কুইক সিঙ্গেল নিতে গিয়ে রান আউট হয় পন্টিং। চোখের পলকে এই রান আউট'টা করে সেই ফিল্ডার। পন্টিং খেয়াল করে দেখে এই ছেলে তো একাদশে ছিলো না। অস্ট্রেলিয়ান দের আশংকা সত্যি হয়। এশেজ শুরুর পর থেকে অস্ট্রেলিয়ান'রা এটা বলে আসছিলো যে ইংল্যান্ডর পেসাররা বোলিং স্পেল শেষ করেই মাঠে থাকছে না। Key বোলাররা ফ্রেশ থাকতে স্পেল শেষ করেই ড্রেসিং রুমে চলে যাচ্ছিলো। যেটাকে বলে Comfort Break. উঠে গিয়ে সাবস্টিটিউট ফিল্ডারদের পাঠাচ্ছিলো যারা ছিলো তখনকার ইংল্যান্ডের কাউন্টিতে সেরা ফিল্ডার! যাদেরকে বলা হতো Gun Fielder. তেমনই একজন হচ্ছে পন্টিং কে রান আউট করা সেই গ্যারি প্র্যাট। যিনি তখন ফিল্ডিং করছিলেন ইনজুরড সাইমন জোনসের বদলি হিসেবে। পন্টিং ধরে নিয়েছিলো প্রতি ম্যাচের মত ইংলিশরা ইচ্ছা করেই এটা করছে। কিন্তু জোনস আসলেই ইনজুরড ছিলো এবং তাকে হাঁসপাতালেও যেতে হয়েছিলো। হিট অফ দ্যা মোমেন্টে খেপে গিয়ে মাঠেই জাইলস আর হগার্ডের সাথে, আম্পায়ার আলিম দারের সাথে এবং ড্রেসিং রুমে ঢুকার আগে গ্যালারির সিঁড়ি থেকে ইংল্যান্ডের ড্রেসিং রুমের দিকেও কথা বলতে বলতে মাঠ ছাড়েন পন্টিং। অস্ট্রেলিয়া অল আউট হয় ৩৭৭ রানে। ১২৯ রানের টার্গেটে শেন ওয়ার্ন ম্যাজিকের পরও ইংল্যান্ড ম্যাচ জিতে নেয় ৩ উইকেটে। সিরিজে ২-১ এ এগিয়ে যায় ইংল্যান্ড, দীর্ঘ ১৮ বছরের অপেক্ষার পর এশেজ জয়ের হাতছানি। ৫ম টেস্ট ড্র হওয়ার পর এই ২-১ ব্যবধানেই ঐতিহাসিক এশেজ জিতে নেয় ইংল্যান্ড।
- 0 মন্তব্য