• ক্রিকেট

নিদাহাস ট্রফি: বাংলাদেশ কী পারবে?

পোস্টটি ১২৬৬৫ বার পঠিত হয়েছে
'আউটফিল্ড’ একটি কমিউনিটি ব্লগ। এখানে প্রকাশিত সব লেখা-মন্তব্য-ছবি-ভিডিও প্যাভিলিয়ন পাঠকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজ উদ্যোগে করে থাকেন; তাই এসবের সম্পূর্ণ স্বত্ব এবং দায়দায়িত্ব লেখক ও মন্তব্য প্রকাশকারীর নিজের। কোনো ব্যবহারকারীর মতামত বা ছবি-ভিডিওর কপিরাইট লঙ্ঘনের জন্য প্যাভিলিয়ন কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না। ব্লগের নীতিমালা ভঙ্গ হলেই কেবল সেই অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবেন।

শ্রীলংকার স্বাধীনতার ৭০ বছর পূর্তি উপলক্ষে শ্রীলংকান ক্রিকেট বোর্ড কর্তৃক অায়োজিত হতে যাচ্ছে ত্রিদেশীয় টিটুয়েন্টি টুর্নামেন্ট "নিদাহাস ট্রফি"। শ্রীলংকা ছাড়াও এই টুর্নামেন্টে অংশ নেবে ভারত এবং বাংলাদেশ।

নিঃসন্দেহ এই টুর্নামেন্টটি শ্রিলংকান ক্রিকেট ভক্তদের জন্য বড় উপলক্ষ। কিন্তু বাংলাদেশি ক্রিকেট সমর্থকদের জন্যও টুর্নামেন্টটি কম গুরুত্ব বহ নয়। কারণ সর্বশেষ সিরিজে ঘরের মাটিতে শ্রিলংকার কাছে বেশ কিছু অান্তর্জাতিক ম্যাচ হেরেছে বাংলাদেশ। তাই বাংলাদেশের সমর্থকরা প্রতিশোধের সপ্নে বিভোর। অার সেই প্রতিশোধের সুযোগ দ্রুত সামনে চলে অাসায়  বাংলাদেশি সমর্থকরা বেশ মেজাজে অাছে। কিন্তু অাসলেই কি প্রতিশোধ নেওয়া সম্ভব হবে? বাংলাদেশ যে খেলতে যাচ্ছে শ্রিলংকার উঠোনে।

_20180225_194301

নিদাহাস ট্রফিতে বাংলাদেশের দুই প্রতিপক্ষ। শ্রিলঙ্কাতো অাছেই অারো অাছে ক্রিকেট বিশ্বের মোরল ভারত। সাম্প্রতিক সময়ে বেশ দুর্দান্ত ফর্মে অাছে ভারত। সর্বশেষ টিটুয়েন্টি সিরিজে দক্ষিণ অাফ্রিকাকে ওদেরই মাটিতে ২-১ ব্যবধানে হারিয়ে সিরিজ জিতেছে ভিরাট কোহলির দল। তাই নিদাহাস ট্রফিতে ভারতই ফেভারিট। কিন্তু ভারতের প্রকৃত দলটা যাচ্ছেনা শ্রিলংকায়। বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে জাতীয় দলের নিয়মিত পাঁচ সদস্যকে। ভিরাট কোহলি সহ এম এস ধনি, হার্দিক পান্ডিয়া, ভুবনেশ্বর কুমার ও জাসপ্রিত বুমরারা নেই নিদাহাস ট্রফিতে। কিন্তু অাইপিএল এর সফলতম অধিনায়ক রোহিত শর্মার নেতৃত্বে ভারতের যে দলটি নিদাহাস ট্রফিতে অংশ নেবে সেটিকে খর্ব শক্তির দল বলে অবহেলা করা হবে বিরাট বোকামি। 

অন্যদিকে শ্রিলংকা দল ও অাছে ভাল অবস্থানে। সর্বশেষ টিটুয়েন্টি সিরিজে ওরা বাংলাদেশকে বাংলাদেশের মাটিতে ২-০ ব্যবধানে হারিয়ে সিরিজ জিতেছে। চোট কাটিয়ে দলে ফিরেছে ওদের নিয়মিত অধিনায়ক "অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস"। তাই শ্রিলংকা এখন অারো বেশি চাঙ্গা।

এই গেলো প্রতিপক্ষ মূল্যায়ন। এবার নিজেদেরকে একটু মূল্যায়ন করি। বাংলাদেশের সর্বশেষ পারফরমেন্স ও টিটুয়েন্টি পরিসংখ্যান নিয়ে বিস্তারিত অালোচনা করার প্রয়োজন দেখছিনা। কারণ বাংলাদেশ একটা খারাপ সময় পার করে এখন ঘুরে দাড়ানোর চেষ্টায় এগিয়ে যাচ্ছে।

_20180225_194124

বাংলাদেশ দলের সক্ষমতা: নিদাহাস ট্রফি জয়ের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ যথেষ্ট সক্ষমতা সম্পূর্ণ দল। নিজেদের দিনে বাংলাদেশের যেকোন দুই বা তিন ক্রিকেটারই প্রতিপক্ষকে সম্পূর্ণ গুড়িয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। সর্বশেষ টিটুয়েন্টি ফরমেট এশিয়া কাপ ও শ্রিলংকা সফরে বাংলাদেশ তা প্রমাণ করেছে। কিন্তু বাংলাদেশের এক বড় সমস্যা হলো চাপের মুহুর্তে খেই হারিয়ে ফেলা। সর্বশেষ টিটুয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে ১রানের পরাজয়টা সহ বাংলাদেশের অনেক গুলো টিটুয়েন্টি ম্যাচে এই প্রবণতার দেখা মিলেছে। ক্রিকেটীয় মানসিকতা উন্নত করার মধ্য দিয়ে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব। ওয়ানডে ক্রিকেটে দেখা গেছে স্নায়ু চাপ নিয়ন্ত্রণে এখন বাংলাদেশ অাগের চেয়ে ভাল অবস্থানে। ঠিক এটাই করতে হবে টিটুয়েন্টিতে।

যারা টিটুয়েন্টিতে দলে সুযোগ পাচ্ছে তারা সবাই ইতমধ্যে নিজেদেরকে প্রমাণ করেছে। বিশেষ করে একদম নবাগতরা খুবই কার্যকর পারফরমেন্স দক্ষ হওয়ার পরও জাতীয় দলে এসে স্নায়ু চাপ সামলাতে পারছে না। ফলে দৃষ্টি কুটু ভুল করছে। অার সিনিয়র ক্রিকেটাররা এই মুহুর্তে ভালই করছে। সাকিব, মুশফিক, তামিম, রিয়াদের সক্ষমতার বিষয়ে দেশীয় বা অান্তর্জাতিক পর্যায়ে তেমন কোন প্রশ্ন নেই। নিজেদের দিনে মারাত্নক এবং খারাপ সময় নির্ভর করার মতো ক্রিকেটার ওরা।

বাংলাদেশের কৌশল: নিদাহাস ট্রফিতে বাংলাদেশকে কঠিন চ্যালেঞ্জের সামনে পড়তে হবে। তাই সবচেয়ে গুরুর্ত পূর্ণ কৌশল হবে সক্ষমতার মধ্যে সর্বোচ্চ অাক্রমণাত্নক পারফরমেন্স করা। অাক্রমণাত্নক সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে কেও যেন অাত্নঘাতি সিন্ধান্ত না নেয় প্রত্যেক ক্রিকেটারকে তা খেয়াল রাখতে হবে। অনেক মৌলিক কৌশল তো অাছেই। যেমন ব্যাটস ম্যানরা বাজে বল গুলো ব্যবহার করবেন বা বোলররা প্রতিপক্ষের ব্যাটস ম্যানদের উইক জোনে নিয়মিত বল করবেন। এগুলো নিশ্চিত করতে হবে। এক ম্যাচে ব্যর্থ হলে একজন ক্রিকেটার যেন পরের ম্যাচে ঘুরে দাড়াতে পারে সেই বিষয়ে ইতিবাচক থাকতে হবে। বাংলাদেশের লোয়ার অর্ডারের ব্যাটিং নিয়ে কিছু কাজ করার অাছে। যারা বোলার হিসাবে দলে থাকবেন তাদের হার্ড হিটিং খেলায় অভ্যস্ত করতে হবে। এতে সফলতা অাসবে নিশ্চিত ভাবেই। ফিল্ডিং এ হতে হবে সর্বোচ্চ অাক্রমণাত্নক। বাংলাদেশকে এজন্য অালাদা প্রস্তুতি নিতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা হল ইতিবাচক মানসিকতা রাখতে হবে সম্পূর্ণ দলে।

বাংলাদেশে ক্রিকেটের সক্ষমতা নিয়ে অাসলে প্রশ্ন থাকার কথা নয়। মূলত সাম্প্রতিক ব্যর্থতাই বাংলাদেশ ক্রিকেটের সামনে নতুন প্রশ্ন দাড় করিয়েছে। ভাল পারফরমেন্সই হবে প্রশ্ন গুলোর যথাযথ জবাব। বাংলাদেশ দলকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে হবে।

বাংলাদেশের ঘুরে দাড়ানোর উপলক্ষ "নিদাহাস ট্রফি" তে বাংলাদেশ সফল হোক। শুভ কামনা বাংলাদেশ দলকে।

_20180225_194235