• ফুটবল

জন বার্ন্সের ঢাকা সফর

পোস্টটি ২৭০১ বার পঠিত হয়েছে
'আউটফিল্ড’ একটি কমিউনিটি ব্লগ। এখানে প্রকাশিত সব লেখা-মন্তব্য-ছবি-ভিডিও প্যাভিলিয়ন পাঠকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজ উদ্যোগে করে থাকেন; তাই এসবের সম্পূর্ণ স্বত্ব এবং দায়দায়িত্ব লেখক ও মন্তব্য প্রকাশকারীর নিজের। কোনো ব্যবহারকারীর মতামত বা ছবি-ভিডিওর কপিরাইট লঙ্ঘনের জন্য প্যাভিলিয়ন কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না। ব্লগের নীতিমালা ভঙ্গ হলেই কেবল সেই অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবেন।

জন বার্ন্স। আশির দশকে লিভারপুল ফুটবল ক্লাবের সাড়াজাগানো ফুটবলার। একজন জীবন্ত কিংবদন্তী। জ্যামাইকান বংশোদ্ভূত এই ফুটবলার খেলেছিলেন ইংল্যান্ডের হয়ে। লিভারপুলের হয়ে জিতেছেন শিরোপা। লিভারপুল ফুটবল ক্লাবের এই কিংবদন্তী এসেছিলেন বাংলাদেশে। 27972577_1844266938917402_2354406749881133701_n

স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংকের সহায়তায় তিনি বাংলাদেশে আসেন ১৭ ফেব্রুয়ারী। ১৭ ফেব্রুয়ারী সকালে বনানীর ওয়াপদা মাঠে তিনি একটি ফুটবল ট্রেনিং বিষয়ক প্রোগ্রামে অংশগ্রহন করেন যেখানে তার সাথে ছিল বাংলাদেশের লিভারপুল সাপোর্টারস ক্লাবের কয়েকজন ভলান্টিয়ারসহ আরো প্রায় ২০০ ক্ষুদে ফুটবলার। সন্ধ্যায় তিনি সময় দেন হোটেল ওয়েস্টিনে। সন্ধ্যায় স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংকের আয়োজনে তিনি অংশ নেন গালা ডিনারে।

সেখানে উপস্থিত ছিলেন দেশবরেণ্য অভিনেতা এবং কট্টর লিভারপুল ফ্যান ইরেশ যাকের। প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি জন বার্ন্স কে কিছু প্রশ্ন করেন এবং জন বার্ন্স একটু আমুদে ভঙ্গিতেই উত্তর দেন। সেখানে তাকে সেই সময়ে চলতে থাকা বর্নবাদ নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, “ফুটবলে বর্নবাদ আগেও ছিল, এখনো আছে। তবে, নিজে থেকে এই জিনিসগুলোকে গুরুত্ব না দিলে এটা কখনোই মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে না।”

28058429_1844267035584059_2191565158315360133_n

পরবর্তীতে অডিয়েন্সের কাছে প্রশ্ন করতে চাওয়ার সুযোগ দিলে সেখান থেকে প্রশ্ন আসে, “কৌটিনিয়োর জায়গায় কাকে দেখতে চান সামারে কিংবা দলে বর্তমান কোন প্লেয়ার কে আপনার ১০ নম্বর জার্সির যোগ্য মনে হয়?”

জন বার্ন্স বলেন, “আমি যদি ফুটবলের অধিকর্তা হতাম তবে আমি জার্সির পেছনে নামটা রাখতাম না। কারণ, এখনকার দিনে জার্সির পেছনে নামটাকে অনেক গুরুত্ব দেয়া হয়। সমর্থকরা ক্লাবের চাইতে বেশী ভালোবেসে ফেলেন জার্সির ভেতরের মানুষটাকে। জার্সির ভেতরের মানুষটা ধীরে ধীরে নিজেকে ক্লাবের চাইতেও বড় ভাবতে শুরু করে যা অনুচিত। একটা প্লেয়ার কখনোই একটা ক্লাবের চাইতে বড় নয়।যদি ক্লপ চায় আপনাকে কিনতে (প্রশ্নকর্তার দিকে আঙুল দেখিয়ে) আমি তাতে সমর্থন দিবো। কারণ, তিনি প্লেয়ার গুলোকে কাছ থেকে দেখছেন। আপনারা কখনো নাবি কেইটার নাম শুনেছেন? হঠাৎ করেই তাকে আবিষ্কার করে ক্লপ। আই ক্যান্ট ওয়েট টু সি হিম ইন রেড জার্সি নেক্সট সামার। তাই, যাকেই কিনুক ক্লপ, আমি তাতে পূর্ণ সমর্থন দিবো।

অডিয়েন্স থেকে আবার প্রশ্ন আসে, “আর্সেনালের সাথে আপনার মিসটেকের জন্য আপনি কাকে দায়ী করেন?”

জন বার্ন্স বলেন, “ আমি দায়ী করি যে আমাকে বল দিয়েছিল। কারণ, আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম ঐ বলটার জন্য। এটা লাইফের অংশ। এখন আপনারা জেরার্ড কে দোষ দিতে পারেন। আমি বলবো তাকে বলটা কে দিল? সাখো? সাখোকে বলটা কে দিল? এভাবে পেছনে যেতে যেতে কিক অফে ফিরে যেতে হবে। তাই, কোন ভুল না ধরে যেটা হয়ে গেছে সেটাকে পুঁজি করে আগানোই উচিৎ বলে মনে করি আমি।”

28279032_1844266935584069_7757135609831976041_n

সময় শেষ হয়ে আসে। এরপর সুযোগ দেয়া হয় লিভারপুল সমর্থক গোষ্ঠীকে তার সাথে সেলফি তোলার জন্য, তার অটোগ্রাফ নেয়ার জন্য। এতো বড় একজন কিংবদন্তীকে এতো সামনে থেকে দেখার সৌভাগ্যে অনেকেই আবেগে আপ্লুত হয়ে যান। এক এক জন করে স্টেজে উঠেন এবং জন বার্ন্স এর সাথে ছবি তুলেন। অটোগ্রাফ নেন। সবার সাথে করমর্দন শেষে ডিনারে অংশ নেন জন বার্ন্স। ডিনার শেষে আবার বাংলাদেশে আসার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন এই কিংবদন্তী।