• ফুটবল

সাবাস বাংলার মেয়েরাঃ হংকং-এ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব–১৫ প্রমীলা ফুটবল দল

পোস্টটি ৪৩৬১ বার পঠিত হয়েছে
'আউটফিল্ড’ একটি কমিউনিটি ব্লগ। এখানে প্রকাশিত সব লেখা-মন্তব্য-ছবি-ভিডিও প্যাভিলিয়ন পাঠকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজ উদ্যোগে করে থাকেন; তাই এসবের সম্পূর্ণ স্বত্ব এবং দায়দায়িত্ব লেখক ও মন্তব্য প্রকাশকারীর নিজের। কোনো ব্যবহারকারীর মতামত বা ছবি-ভিডিওর কপিরাইট লঙ্ঘনের জন্য প্যাভিলিয়ন কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না। ব্লগের নীতিমালা ভঙ্গ হলেই কেবল সেই অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবেন।

বাংলাদেশ মেয়েদের অনূর্ধ্ব–১৫ ফুটবল দল হংকং এসে পৌছালো ২৯ মার্চ। সেইদিন থেকেই ইচ্ছে ছিল দলটির সাথে দেখা করে আসার। এই পিচ্চি মেয়েরা নেপাল ও তাজাকিস্তানে এএসসি কাপ  জিতেছে, দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় আসর সাফ ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারতকে উড়িয়ে দিয়ে। লাল সবুজের জার্সি গায়ে এই দল দেশকে, হারিয়ে যাওয়া বাংলাদেশের ফুটবলকে তুলে আনছে অনন্য উচ্চতায়। এদের এত কাছে পেয়ে অন্তত একবার ‘সাবাস’ বলার জন্য মনটা ছটফট করছিল। 

চার জাতির বন্ধুত্বমূলক আন্তর্জাতিক অনূর্ধ্ব–১৫ মেয়েদের ফুটবলের আসর আয়োজন করেছে হংকং ফুটবল ফেডারেশন। প্রধান পৃষ্ঠপোষক হংকং জকি ক্লাব। স্বাগতিক হংকংয়ের আমন্ত্রনে এই টুর্নামেন্টে যোগ দেয় মালেয়শিয়া, ইরান ও বাংলাদেশের মেয়েরা। তিন দিন খেলা হবে, প্রতিটি দলের তিনটি করে খেলা। টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ পয়েন্ট পাওয়া দল হবে চ্যাম্পিয়ন। আন্তর্জাতিক ফুটবল র‍্যাঙ্কিংয়ে চার দলের মধ্যে সবচেয়ে পিছিয়ে ছিল বাংলাদেশ দল।

Half time

সাগরের পাড় ঘেষে গড়ে উঠেছে সুই সাই ওয়ান স্পোর্টস গ্রাউন্ড, অত্যন্ত মনোরম পরিবেশ এবং প্রান ভরা বাতাস। এই মাঠেই সবগুলো খেলা অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব হংকংয়ের সৌজন্যে আমরা খেলার সময়সূচী আগে থেকেই জানি। ৩০ মার্চ টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ও বাংলাদেশের প্রথম খেলা ছিল মালেয়শিয়ার বিপক্ষে। বাংলাদেশের মেয়েরা দুর্দান্ত সুচনা করে ১০-১ গোলে জয়ী হয়। র‍্যাঙ্কিংয়ের সংখ্যাকে ভুল প্রমান করে এবং চ্যাম্পিয়ন হবার জন্যই যে তারা হংকং এসেছে তা স্পষ্টই প্রতিয়মান হয়। ৩১ মার্চ দ্বিতীয় খেলায় প্রতিপক্ষ ইরান মেয়েদের দল। সেখানে ৮-১ ব্যবধানের সহজ জয় পায় বাংলাদেশ দল।

Final Score

আসরের সব শেষ খেলা ও অলিখিত ফাইনাল ছিল হংকং ও বাংলাদেশের মধ্যে ১লা এপ্রিল স্থানীয় সময় দুপুর ৩:৩০ মিনিট। প্রথম দুই খেলায় দুই জয় ও ১৮ গোল নিয়ে বাংলাদেশের পয়েন্ট ছিল ৬। অপরদিকে স্বাগতিক হংকংও দুই জয়ে ৬ পয়েন্ট যদিও তাদের গোল সংখ্যা মাত্র ২। বাংলাদেশের মেয়েরা ড্র করলেই চ্যাম্পিয়ন। সেই ফাইনাল খেলা দেখতে আমরা হংকং বাংলাদেশ কমিউনিটি মাঠে উপস্থিত ছিলাম।  হাতে হাতে ছিল লাল সবুজের পতাকা, ফেস্টুন ও প্লাকার্ড।

After win

খেলা শুরুর চার মিনিটের মাথায় প্রথম গোল করে বাংলাদেশের মেয়েরা, প্রথমার্ধ শেষ হবার আগেই গোলের সংখ্যা গিয়ে দাড়ায় ৩-০। ম্যাচ নিশ্চিত করার পরও মেয়েদের মাঝে কোন আত্মতৃপ্তির ছায়া দেখা যায়নি। দ্বিতীয়ার্ধে আরো অধিক আক্রমন সাজায় তারা, ৪৫ থেকে ৬০ মিনিটের মাঝে ৪ বার বল হংকংয়ের গোল বারে লেগে ফেরত আসে। তারপরও হাল না ছাড়া লড়াকু বাংলাদেশ কিশোরীদের দল নতুন পরিকল্পনায় প্রতিপক্ষের রক্ষ্মণভাগ ভেদ করে  বল আরো তিনবারহংকংয়ের গোলে জড়ায়। পূর্ণাঙ্গ খেলা শেষে স্কোরলাইন দাড়া্য় ৬-০।

Lunch

‘বাংলাদেশ’ ‘বাংলাদেশ’ ধ্বনিতে মুখরিত ছিল সুই সাই ওয়ান স্পোর্টস গ্রাউন্ডের গ্যালারী। মাঠে থেকে দলকে অনুপ্রাণিত করার জন্য প্রবাসী বাংলাদেশীদের ধন্যবাদ জানান বাংলাদেশ দলের কর্মকর্তারা। দেশের বাইরে এত সাপোর্ট পেয়ে মেয়েরা আরো উজ্জীবিত হয়েছেন। অপরদিকে প্রবাসী বাংলাদেশীরা মেয়েদের এমন সাফল্যে অত্যন্ত গর্বিত। বাংলাদেশ দল ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে সাফল্য বয়ে আনবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেন। পরিশেষে ০২ এপ্রিল দুপুরে বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব হংকং কর্তৃক বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব ১৫ মহিলা দলকে সংবর্ধনা ও প্রীতি ভোজের আয়োজন করা হয়।