শুভ জন্মদিন-লিটল মাস্টার
পোস্টটি ৫১০৪ বার পঠিত হয়েছেমাস্টার ব্লাস্টার নাকি লিটল মাস্টার নাকি অন্যকিছু?
কি বলবেন তাকে?
২৪ বছর ধরে প্রতিটি ভারতীয় মানুষের স্বপ্নকে লালন করা এক মহাপুরুষ নাকি অবসর নিয়েও প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে থাকা এক কিংবদন্তি?
কি দিয়ে ব্যাখা করবেন তাকে?
কোন ইনিংস দিয়ে তার মাহাত্ম্য বোঝাবেন?
ক্যারিয়ারে ১০০ সেন্চুরী থাকার পরও যার অন্যতম সেরা ইনিংস ধরা হয় ২০০৩ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৯৮ রানের ইনিংসটিকে,তার উচ্চতাটাকে কোন যন্ত্র দিয়ে আপনি মাপবেন?
১৯৮৯ সালের ১৫ নভেম্বর৷
১৬ বছর বয়সী হালকা-পাতলা,খাটো গড়নের একটি বাচ্চার ভারতের হয়ে অভিষেক ম্যাচ,প্রতিপক্ষ পাকিস্তান৷
পরবর্তীতে অবশ্য অনেকবারই বলেছেন,সেদিন ওয়াকার ইউনুস বা ওয়াসিম আকরাম,কারোর বলই সেভাবে বুঝে উঠতে পারছিলেন না তিনি৷কে জানতো,সেদিনের ঐ বাচ্চা ছেলেটাই ক্রিকেটে একদিন রাজত্ব করবে,তাও আবার এভাবে৷
তার যোগ্য প্রতিপক্ষের অভাব ছিলো না৷
বোলিংয়ে যেমন ছিলো ম্যাগ্রাহ,শেন ওয়ার্ন,ওয়াসিম আকরাম,শোয়েব আখতারের মতো গ্রেটরা তেমনি ব্যাটিংয়ে পন্টিং,লারা,দ্রাবিড় রাও সমানতালে পাল্লা দিয়ে গেছেন তার সাথে৷
একসময় এক এক জনের সাথে তুলনা দেয়া হতো তাকে৷কিন্তু সবাইকে ছাড়িয়ে তিনি নিজেকে নিয়ে গেছেন মাউন্ট এভারেস্টের মতো অনন্য এক উচ্চতায়৷
তিনি নিজেকে এমন এক উচ্চতায় নিয়ে গেছেন যেখানে সবাই শুধু তাকিয়ে থাকে,বিস্মিত হয়,অবাক হয় কিন্তু ছুতে পারে না৷
ক্যারিয়ারে অনেক বাধার সম্মুখীন হয়েছেন৷
ক্যাপ্টেনসি নিয়ে জটলা,১৯৯৯ বিশ্বকাপ চলাকালীন সময় বাবার মৃত্যু,ইন্জুরীসহ আরও অনেক প্রতিবন্ধকতা৷কিন্তু সব বাধা অতিক্রম করেই তিনি আজকের টেন্ডুলকার,দ্যা গ্রেটেস্ট শচীন টেন্ডুলকার৷
ক্যারিয়ারের লম্বা সময় ধরে একটি আক্ষেপ ছিলো৷
শত শত রান,শত শত রেকর্ডের মাঝেও সেই আক্ষেপ ঢাকা পড়ে নি কখনো,বিশ্বকাপ না জেতার আক্ষেপ৷
২০১১ সালে যখন তিনি বিশ্বকাপ খেলতে নামলেন সেটি ছিলো তার শেষ সুযোগ৷
দলীয় ৩২ রানে মালিঙ্গার বলে যখন ক্যাচ আউট হয়ে প্যাভিলিওনে ফিরছিলেন তখন কি ভাবছিলেন তিনি?
নিজের ছোটোবেলার স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে না পারা এক কাপুরুষ হিসেবে?
কিন্তু ক্রিকেট বিধাতা তা কেনো হতে দেবেন?
যেই শচীন ক্রিকেটকে এতো কিছু দিয়েছেন সেই শচীন কি খালি হাতে ফিরতে পারেন?
ধোনির বিখ্যাত সেই ছয়ের পর শচীনের মাঠে এসে সবাইকে জড়িয়ে ধরা যেন অক্লান্ত এক যোদ্ধার স্বপ্নপূরণ৷
৪বছর হয়ে গেলো শচীনের ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার৷
আজ থেকে ৪০ বছর পর যখন ২৪ এপ্রিল আসবে তখন আপনি ৬০ বছরের বৃদ্ধ হবেন,আপনার হাতে থাকবে শিশিরসিক্ত সকালের এক কাপ চা আর একটি পত্রিকা৷
আপনি পেপারে হালকা চোখ বুলিয়ে নেবেন,তারপর আপনি হঠাৎ থমকে যাবেন,আপনি ফ্ল্যাশব্যাকে যাইতে চাইবেন,আপনি আবারও শচীনের প্রতিটি শটে নিজের হৃৎস্পন্দন বাড়াতে চাইবেন,আপনি আবারও শচীনের কাভার ড্রাইভ দেখে মুগ্ধ হতে চাইবেন,আপনি পুরো দেশের স্বপ্নকে কাধে নিয়ে মাঠে নামা একজন টেন্ডুলকারকে কল্পনা করবেন৷
বিশ্বাস করুন,লিটল মাস্টারকে আপনি সেদিন বড্ড মিস করবেন!
- 0 মন্তব্য