জার্মানির দুর্বলতাঃ একজন জার্মান ফ্যান এর চোখে
পোস্টটি ১০৮৫৫ বার পঠিত হয়েছেজার্মানি। ফুটবল জগতে অন্যতম এক পরাশক্তি। কি নেই তাদের ? ধারালো আক্রমনভাগ, শক্ত মধ্যমাঠ, জমাট রক্ষনভাগ। সব মিলিয়ে বলা চলে ঈর্ষা করার মত একটি দল। আর্জেন্টিনা বা ব্রাজিলের যত তর্ক আছে, সব কিছুই এই একটি দলের সামনে এসে থেমে যায়।
ইতিমধ্যে জার্মানি তাদের প্রাথমিক স্কোয়াড ঘোষণা করে ফেলেছে। স্কোয়াড নিয়ে কিছুই বলার নেই। বিশ্বকাপে খেলা দলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী বললেও খুব অতিরঞ্জন করা হবে বলে মনে হয় না। তবে এত শক্তিশালী স্কোয়াড নিয়েও কিছু জায়গায় দুর্বলতা চোখে পড়ার মত। সেই দুর্বলতাগুলোই এই লেখার মূল আলোচ্য বিষয়।
১। ওজিলের ফর্মঃ আর্সেনালের হয়ে এই মৌসুম খুব ভাল যায়নি এই অ্যাসিস্ট কিং এর। এই মৌসুমে ৫ গোলের বিপরীতে ১২ অ্যাসিস্ট তার। এই মৌসুমে ৪০ ম্যাচে মোট ২৭৭৩ মিনিট মাঠে ছিলেন তিনি। এই মৌসুমে নিজেকে হারিয়ে খুঁজছেন ওজিল। এই ফর্ম ওয়ার্ল্ড কাপে নিয়ে গেলে জার্মানির বেশ ভুগতে হবে।
২। কিমিচ এর ব্যাকআপঃ জশুয়া কিমিচ এই মৌসুমে বায়ার্ন এর হয়ে মোট ৪৯ ম্যাচে ৩২৩১ মিনিট মাঠে ছিলেন। যে কোন প্লেয়ার এর জন্য এটা অ্যাাভারেজ এর তুলনায় বেশ খানিকটা বেশি। স্বাভাবিকভাবেই ক্লান্তি শব্দটা এসেই যায়, এবং সেখানেই বিপদ। এই একটা জায়গায় তাদের বলার মত সাব নেই। অনেকেই গিন্টার এর কথা বলবেন। তবে, কিমিচ এর যা ফর্ম, সেই তুলনায় গিন্টার অনেকটা পিছিয়ে বলাই যায়।
৩। গোলস্কোরার স্বল্পতাঃ এই জায়গায় অনেকে আমার সাথে আপত্তি করতে পারেন। তবে আমি বলব জার্মানির গোলস্কোরার স্বল্পতা আছে। টিমো ভারনার বাদে, একচুয়াল গোল স্কোরার বলতে যা বোঝায় তা তাদের নেই। অনেকে মুলারের কথা বলবেন। তবে এই মৌসুমে গোল সংখ্যা অন্যবারের চেয়ে বেশ কিছুটা কম, যেটা সবচাইতে বেশি ভাবাচ্ছে। গেল ইউরোতে জার্মানদের ভুগিয়েছে মুলার এর ফর্ম। সেটার পুনরাবৃত্তি এবার হলে জার্মানদের ফিরতে হবে শূন্য হাতেই।
৪। দ্রাক্সলার এর গেম টাইমঃ বাম উইং এ জার্মানদের হয়ে জুলিয়ান দ্রাক্সলার শুরু করার সম্ভাবনাই বেশি। তবে পিএসজি এর হয়ে খুব বেশি সময় মাঠে থাকার সুযোগ পাননি এই তারকা। ৪৭ ম্যাচের বেশিরভাগ সাব হিসেবে নেমে মাত্র ২০২২ মিনিট মাঠে ছিলেন এই তারকা। গোল করেছেন ৪ টি, করিয়েছেন ৬ টি। এত কম ম্যাচ টাইম তার খেলায় প্রভাব ফেললেও ফেলতে পারে।
৫। একজন সিডিএমঃ আমার সবচে প্রিয় পজিসন এই সিডিএম। যেই কারনে ক্যাসেমিরো, বুসি বা কান্তের খেলার আমি অনেক বড় ফ্যান। গত বিশ্বকাপে প্রথম কয়েক ম্যাচ লাম সিডিএম পজিসনে খেলেছে। গারদিওলার বায়ার্নে মোটামুটি নিয়মিত এই পজিসনে খেলার কারনে কোন সমস্যা হয়নি। যদিও পরে কৌশলগত পরিবর্তন এর কারনে কোন সিডিএম রাখা হয়নি, কিন্ত এই কাজটা কোচ করতে পেরেছিলেন একমাত্র বাস্তিয়ান এর মত একজন দলে থাকার কারনে। এইবার এই জায়গায় একটা বড় শূন্যতা আছে, সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
দুর্বলতা সকল দলের আছে, জার্মানদেরও আছে। ওয়ার্ল্ড কাপের ৭ টি ম্যাচ যে দল যত ভালভাবে এড়িয়ে চলতে পারবে, সাফল্য তাদেরই ধরা দেবে।
- 0 মন্তব্য