নেইমার যেদিন রাজা
পোস্টটি ১৮৩৫৭ বার পঠিত হয়েছে
|
অলিম্পিকের অধরা স্বর্ণ জয়ের মিশনে নামা
পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল বর্তমান বিশ্ব
চ্যাম্পিয়ন জার্মানির বিপক্ষে জিতে ইতিহাস গড়লো।
১২০ মিনিটের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই শেষে পেনাল্টি
শুটআউটে গড়ানো অলিম্পিক ফাইনালে ৫-৪ ব্যবধানে
শিরোপা জিতলো পেলে-রোনালদো-রোনালদিনহো-
জিকোদের উত্তরসূরি নেইমারের ব্রাজিল।
ঢাকা: অলিম্পিকের অধরা স্বর্ণ জয়ের মিশনে নামা
পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল বর্তমান বিশ্ব
চ্যাম্পিয়ন জার্মানির বিপক্ষে জিতে ইতিহাস গড়লো।
১২০ মিনিটের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই শেষে পেনাল্টি
শুটআউটে গড়ানো অলিম্পিক ফাইনালে ৫-৪ ব্যবধানে
শিরোপা জিতলো পেলে-রোনালদো-রোনালদিনহো-
জিকোদের উত্তরসূরি নেইমারের ব্রাজিল। নিজেদের
ফুটবল ইতিহাসে প্রথমবারের মতো অলিম্পিকের
শিরোপা জিতলো সেলেকাওরা।
নেইমারের একমাত্র গোলে লিড ধরে রেখে বিরতিতে
যায় স্বাগতিক ব্রাজিল। তবে, বিরতির পর ম্যাক্স
মায়ের গোল শোধ করলে ম্যাচে ফেরে জার্মানি।
নির্ধারিত সময়ে ১-১ গোলের সমতা থাকায় ম্যাচ গড়ায়
অতিরিক্ত সময়ে। ৩০ মিনিটের অতিরিক্ত সময়ের
খেলায় আর কোনো গোল হয়নি। ফলে, টাইব্রেকারে
গড়ায় ম্যাচ। আর তাতে ৫-৪ ব্যবধানে জয় নিয়েই অধরা
শিরোপা জেতে নেইমার বাহিনী।
রিও ডি জেনেইরোর বিখ্যাত মারাকানা স্টেডিয়ামে
বাংলাদেশ সময় দিবাগত রাত আড়াইটায় শুরু হয়
হাইভোল্টেজ এই ফাইনালের ম্যাচটি।
প্রথম চারটি পেনাল্টি শটেই গোল করেন দুই দলের
ফুটবলাররা। তবে, নিজেদের পঞ্চম শটে বল জালে
জড়াতে ব্যর্থ হন জার্মানির নিল পিটারসন। ব্রাজিল
গোলরক্ষক উইভারটন তা রুখে দেন। আর নিজেদের পঞ্চম
শটটি নেন ব্রাজিলের দলপতি নেইমার। তার পা থেকেই
শিরোপা জয়ের গোলটি আসে।
এর আগে ম্যাচের শুরুতে দু’দলই নিজেদের গুছিয়ে
খেলতে থাকে। দশম মিনিটে দুর্দান্তভাবে গোলের
খাতা খুলতে চেষ্টা করেছিল জার্মানরা।
স্বাগতিকদের ডি-বক্সের বাইরে থেকে জোরালো শট
নেন বার্নাডট। ব্রাজিল গোলরক্ষক লাফিয়ে উঠে
বাতাসে ভাসানো শটটি রুখতে চেয়েও ব্যর্থ হন। তবে,
গোলবারে লেগে বল ফিরে এলে লিড নেওয়া হয়নি
জার্মানির।
কানায় কানায় পূর্ণ মারাকানার ব্রাজিল সমর্থকরা
নিশ্চুপ হয়ে যায় ২২ মিনিটের মাথায়। নেইমারের
নেওয়া কর্নার থেকে ফাঁকায় দাঁড়ানো রেনাতো বল
পেলেও তার আলস্য ভঙ্গিতে নেওয়া শটটি গড়িয়ে
গোলবারের পাশ দিয়ে চলে যায়। ২৫ মিনিটের মাথায়
আরেকটি আক্রমণে যাওয়ার সময় নেইমারকে ফাউল
করায় ডি-বক্সের কিছুটা বাইরে থেকে ফ্রি-কিক পায়
রজারিও মিকেলের শিষ্যরা। ৩০ গজ দূর থেকে ফ্রি-
কিক নেন বার্সার তারকা নেইমার। তার ডানপায়ের
দুর্দান্ত কোনাকুনি শট জার্মানির জালে জড়ালে ১-০
গোলে এগিয়ে যায় ব্রাজিল।
৩০ মিনিটের মাথায় সমতায় ফেরার সুযোগ পেয়েছিল
জার্মানি। ব্রাজিল গোলরক্ষক উইভারটন প্রস্তুত না
থাকলে মায়েরের নেওয়া সুযোগসন্ধাণী শটটি জালে
জড়াতো। ৩৪ মিনিটে আরেকবার সুযোগ আসে হোরস্ট
রুবেশের শিষ্যদের। স্পট কিক থেকে উড়ে আসা বলে
হেড করেন বেন্ডার। ব্রাজিলের পোস্টে লেগে বল
বাইরে চলে যায়।
পর পর দুইবার গোলবঞ্চিত হলেও হতাশ হয়নি
জার্মানরা। তবে, গোলও পায়নি তারা। ফলে, ১-০
গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় নেইমার বাহিনী।
বিরতির পর খেলার ৫৯তম মিনিটে সমতায় ফেরে
জার্মানি। জেরেমির দারুণ এক ক্রস থেকে ব্রাজিলের
ডি-বক্সে বল পান ম্যাক্স মায়ের। কিছুটা অরক্ষিত
মায়ের ডানপায়ের আলতো টোকায় নেইমারদের জালে
বল জড়িয়ে দেন। ফলে, ১-১ গোলের সমতায় ম্যাচে
ফেরে জার্মানরা।
৭৩ মিনিটে জটলার মধ্যে বল পেয়ে হেড করেন নেইমার।
তবে, বল নিজের গ্লাভসবন্দি করতে করতে বেগ পেতে
হয়নি জার্মান গোলরক্ষকের। ৭৭ মিনিটে নেইমার দারুণ
একটি বল বানিয়ে দেন সতীর্থ লুয়ানকে। বল নিয়ে
একেবারে অরক্ষিত জার্মান দূর্গে ঢুকে পড়লেও তার
শটটি নিতে একটু দেরিই হয়ে যায়। পিছনে ছুটে আসা
জার্মান ডিফেন্ডাররা লুয়ানের পা থেকে বল কেড়ে
নিজেদের বিপদমুক্ত করেন। পরের মিনিটে নেইমারের
ডানপায়ের আরেকটি কোনাকুনি শট পোস্টের বাইরে
দিয়ে চলে যায়।
নির্ধারিত সময়ে আর কোনো গোল না হলে ম্যাচ গড়ায়
অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে। অতিরিক্ত সময়ের তৃতীয়
মিনিটে গোলের সুযোগ পেয়েছিলেন ব্রাজিলের
উঠতি তারকা জিসাস। তবে, শেষ মুহূর্তে বলের নাগাল
হারালে হতাশ হতে হয় তাকে।
৯৮তম মিনিটে লুয়ানের একটি প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলে
হতাশা ঘিরে ধরে ব্রাজিলকে। পরের মিনিটে
ব্রানডার্টের ভলি ব্রাজিলের গোলবারের উপর দিয়ে
চলে যায়। ১০৬ মিনিটের মাথায় ফিলিপ আন্ডারসন
জার্মান গোলরক্ষক হর্নকে ফাঁকি দিতে পারেননি।
বাকি সময় আক্রমণ আর পাল্টা-আক্রমণে মারাকানার
দর্শকদের মতো বিশ্বফুটবলকে উত্তেজিত করে রাখলেও
দুই দল আর কোনো গোলের দেখা পায়নি। ফলে, ম্যাচ
গড়ায় টাইব্রেকারে।
আর টাইব্রেকার নামক ভাগ্য পরীক্ষায় ভাগ্য সহায়
হয়নি জার্মানির। পেনাল্টি শুটআউটে ৫-৪ গোলের
ব্যবধানে অলিম্পিকের শিরোপা জিতে নেয় নেইমার
বাহিনী।
- 0 মন্তব্য